২০০৫ সালের দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম বাসে আস যাওয়া করতাম গড়ে সাড়ে ৫ ঘন্টায়। কখনো কখনো ৩ ঘন্টায়ও চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা এসেছি। একবারের কথা মনে পড়ে, রাত ১২টায় চট্টগ্রামের বিআরটিসি থেকে ইউনিকে উঠেছি, রাত ৩টায় ফকিরাপুলে নামিয়ে দিল, এত্ত মেজাজ খারাপ হয়েছিল সেদিন। কারন ৩টায় ঢাবি'র হলে ফেরার মতো সাহস ছিল না, রাতের বাকিটা ফকিরাপুলের ইউনিক কাউন্টারেই কাটাতে হয়েছিল।
সাম্প্রতিক ঢাক-চট্টগ্রমা ভ্রমনের অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। ৮ ঘন্টার কমে যদি আপনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌছেন, বুঝতে হবে আপনি চরম ভাগ্যবান। আমার বন্ধু ক'দিন আগে রাত ১২টা নাগাদ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে, আমি ভোর ৫টার দিকে ফোন দিলাম, কতদুর এল জানার জন্য, তখন সে সীতাকুন্ড ক্রস করছিল
এরকম কেন হচ্ছে? উত্তরটা ক'দিন আগে নিজেই আবিষ্কার করলাম যখন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা ফিরছিলাম বাসে (পারতপক্ষে ট্রেন ছাড়া বাসে এখন ভ্রমন করি না)। ফেনী পর্যন্ত আমার ভাগ্য বেশ ভালই ছিল। কারন আমার বাসটি অন্যান্য ট্রাক ও বাসকে টেকওভার করেই অনেক এগিয়ে ছিল। এরপর থেকে শুরু হলো ঢাকা থেকে আসা বাসের সারি। বাসগুলো পিপড়ের মতো লাইন ধরে এগিয়ে আসছিল, ফলে আমাদের বাসটি কোন মতেই তার সামনের ট্রাকগুলোকে ওভারটেক করতে পারছিল না। যারা মহাসড়কে বাসে চড়েন তারা জানেন ট্রাকের গতি কেমন। দাউদাকন্দি পর্যন্ত পুরোটা পথ এভাবে কখনো ট্রাক বা কখনো ছোট বাসের পেছনে পেছনে আসতে হলো। ঢাকায় পৌছলাম মোট সাড়ে ৮ ঘন্টায়। কেন? উত্তর রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা অস্বাভাবিক রকম বেড়ে গেছে।
আচ্ছা, ঢাকায় যানজটের প্রধান কারন কি? এটা ঢাকার সবথেকে মুর্খ লোকটাও জানে, ঢাকায় গাড়ির তুলনায় পর্যাপ্ত রাস্তা নেই। কিংবা গাড়ির সংখ্যা বেড়ে গেছে। এই যখন আমার অনুধাবন, তখন আজকের নয়া দিগন্তের একটা খবর শেয়ার করার লোভ সম্বরন করতে পারছি না।
================================
ভারত লাভবান হবে, কাজে আসবে বাংলাদেশেরও
ভারতের শত কোটি ডলার ঋণ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের ভিত্তিতেই ভারত থেকে পাওয়া শত কোটি ডলার ঋণের আওতায় প্রকল্প নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ডা. দীপুমণি বলেছেন, বাংলাদেশের স্বার্থেই ভারতের কাছ থেকে ঋণ নেয়া হয়েছে। ঋণের আওতায় নেয়া প্রকল্পগুলো থেকে ভারত লাভবান হবে, বাংলাদেশেরও কাজে আসবে। লাভ না থাকলে কেউ ঋণ বা অনুদান দেয় না। ভারতের লাভ হবে এমন কোনো উন্নয়ন প্রকল্প হতে নেয়া যাবে না এ ধরনের নেতিবাচক মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির সাম্প্রতিক ঢাকা সফরের ওপর গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বক্তব্য রাখছিলেন। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আন্তর্জাতিকভাবে সম্পাদিত যেকোনো চুক্তি কোনো দেশের সরকার ধারাবাহিকভাবে মানতে বাধ্য উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের চুক্তি মানার বা অব্যাহতি পাওয়ার সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান রয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে করা আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর ক্ষেত্রেও পরবর্তী সরকারগুলোকে একই বিধিবিধান অনুসরণ করতে হবে।
ভারতের সাথে ঋণচুক্তির বিরোধিতায় বিএনপি’র অবস্খান সম্পর্কে দীপুমণি বলেন, বিরোধী দলের সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য নিজেও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) দায়িত্বে ছিলেন। আন্তর্জাতিক ঋণ প্রক্রিয়ার বিধিবিধান সম্পর্কে অবগত থেকেও তিনি বিভ্রান্তি ছড়ানোর ঘৃণ্য প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। আন্দোলনের জন্য ইস্যুহীন বিরোধী দল যেনতেন প্রকারে একটি ইস্যু তৈরির চেষ্টা করছে। ক্ষমতায় থাকলে ভারততোষণ, আর বিরোধী দলে গেলে ভারতদূষণ এটা বিএনপি’র পুরনো নীতি।
ভারতের এক্সিম ব্যাংকের সাথে বাংলাদেশের সরকারের ঋণচুক্তি ‘মোটেই অস্বাভাবিক নয়’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ভারত সরকার ঋণটি দিচ্ছে এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে। এর আগেও বাংলাদেশ সরকার বিদেশী রাষ্ট্রের কাছ থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ নিয়েছে। দীপুমণি জানান, এক্সিম ব্যাংক সাধারণত ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিয়ে থাকে। ভারত সরকার ভর্তুকি দিয়ে বাংলাদেশকে দেয়া ঋণের সুদের হার এক দশমিক ৭৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।
রেলওয়ে একটি জনবাìধব পরিবহনব্যবস্খা হলেও অনেক আন্তর্জাতিক সংস্খা বা দেশ এ খাতে ঋণ দিতে আগ্রহী হয় না উল্লেখ করে দীপুমণি বলেন, ভারত এতে আগ্রহ দেখিয়েছে বলেই দেশটির কাছ থেকে ঋণ নেয়া হয়েছে। ভারত যেমন বাংলাদেশের চাহিদার প্রতি সহানুভূতিশীল, বাংলাদেশও তেমনি ভারতের প্রয়োজন উপলব্ধি করে। তাই দরকষাকষিতে উভয়পক্ষ যাতে লাভবান হয় সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
ঋণের আওতায় নেয়া প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ভারত থেকে পণ্য বা সেবা কেনার বাধ্যবাধকতা নেই উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার ক্রয়নীতি অনুসরণ করে প্রতিযোগিতামূলক দর ও মান নিশ্চিত করেই এসব সংগ্রহ করবে।
প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও দীর্ঘদিনেও ভারত সিডর-বিধ্বস্ত বাংলাদেশের ১০টি গ্রাম পুনর্বাসন না করায় তাদের ওপর কতটা আস্খা রাখা যায় প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বীকার করেন, সিডর-বিধ্বস্ত গ্রামগুলোর পুনর্বাসনে ভারতের পদক্ষেপ খুবই শ্লথ; এটি বাস্তবায়ন পর্যায়ে যায়নি। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ থেকে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছিল তা ইতোমধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে। আশা করছি, ভারত যত দ্রুত সম্ভব কাজটি সম্পন্ন করবে। তবে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় নেয়া সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়নের গতি যথেষ্ট ভালো। শনিবার সম্পাদিত ১০০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তির আওতায় নেয়া প্রকল্পগুলো সন্তোষজনক গতিতে সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ভুটান ও নেপালের চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে আলোচনায় এসেছিল উল্লেখ করে দীপুমণি বলেন, এ জন্য দ্রুত কার্যকর ব্যবস্খা নেয়ার চেষ্টা চলছে। এ লক্ষ্যে প্রটোকল সংশোধন বা নতুন প্রটোকল স্বাক্ষরের প্রয়োজন হবে না। এক্সচেঞ্জ অব লেটার্সের মাধ্যমেই ভূমিবেষ্টিত দুই দেশকে এই সুবিধা দেয়া সম্ভব। তিনি বলেন, ট্রানজিট সুবিধার আওতায় নেপাল ও ভুটানের পণ্যবাহী ট্রাক যেমন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবে, তেমনি বাংলাদেশের ট্রাকও ভূমিবেষ্টিত এই দুই দেশে যেতে পারবে। ভারত যেমন চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করতে পারবে, বাংলাদেশও চাইলে ভারতের বন্দর ব্যবহার করতে পারবে। তবে এ ধরনের প্রয়োজন এখনো সরকার অনুভব করেনি।
বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশী দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে রেল যোগাযোগ রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এরমধ্যে কিছু অংশ নতুন করে নির্মাণ করতে হবে, কিছু অংশ সংস্কার করতে হবে এবং কিছু অংশকে মিটার গেজ থেকে ব্রড গেজে রূপান্তর করতে হবে। আন্ত:দেশীয় যোগাযোগব্যবস্খা সুগম করার জন্য সার্বিক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের সংখ্যা সীমিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, যোগাযোগব্যবস্খাকে উন্নত করে অন্য দেশকে ট্রানজিট বা বন্দর ব্যবহার সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারে। ইত:পূর্বে বাংলাদেশ একঘরে হয়ে পড়েছিল। বর্তমান সরকার আন্ত:দেশীয় যোগাযোগব্যবস্খা উন্নত করে বাংলাদেশকে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে চায়। ট্রানজিটের জন্য সরকারের নির্ধারিত ফি থেকে ভারতকে অব্যাহতি দেয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
অনুপ চেটিয়াসহ বাংলাদেশে আটক ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ফেরত দেয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে দীপুমণি ‘না’ সূচক উত্তর দেন।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ১৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে ভারতের রেলমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ‘সোনার তরী’ নামক বিশেষ ট্রেন নিয়ে আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকা আসবেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
নিরাপত্তা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতা আঞ্চলিক ক্ষেত্রে সুবাতাস বয়ে এনেছে বলে দীপুমণি মন্তব্য করেন।
তিস্তার পানি বন্টন চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, কয়েক মাসের মধ্যেই যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ২০১১ সালের মধ্যে তিস্তা নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তি স্বাক্ষরে সরকার আশাবাদী।
সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথ সীমান্ত কার্যকরী গ্রুপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়ে দীপুমণি বলেন, এতে ছিটমহল, অপদখলীয় ভূমি ও অনিষ্পন্ন সীমানা চিহ্নিতকরণের একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানো হবে। এসব সমস্যা সমাধান হলে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি অনেকাংশে কমে যাবে।
ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির ঢাকা সফরকে সংক্ষিপ্ত কিন্তু কার্যকর বলে মন্তব্য করে দীপুমণি বলেন, ঋণচুক্তি ছাড়াও এ সফরে গত জানুয়ারিতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীদের বৈঠকের পর প্রকাশিত যৌথ ঘোষণা বাস্তবায়নে অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ভারত ও বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীদের যৌথ সংবাদ সম্মেলন কভারে নয়া দিগন্ত ও আমার দেশসহ মিডিয়ার একটি অংশকে পিআইডি থেকে নিরাপত্তা পাস ইস্যু না করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে একেবারেই অবহিত নই। আপনাদের কাছ থেকে এখনি শুনলাম। একটু খোঁজ নিয়ে দেখি।’
========================================
ব্লগে অনেকের নয়া দিগন্ত এলার্জি আছে, অনেকের জনকণ্ঠ এলার্জিও দেখি। এলার্জি আমাদের নিয়ন্ত্রন বহির্ভূত বিষয় তারপরও মাঝে মাঝে এসব সহ্য করে একটু চিন্তা করতে দোষ কি? নিচের প্রশ্ন গুলোর উত্তর কি?
১. হয়তো এ সরকার ভারতকে ট্রানজিট দিয়েই যাবে। এবং এটা নিশ্চিত বাকী মেয়াদে তারা নতুন মহাসড়ক নির্মানের মতো বড় প্রজেক্ট হাতে নিচ্ছে না, কিংবা নিলেও যথা সময়ে শেষ করার সম্ভাবন অত্যন্ত ক্ষীন। তাহলে আমরা যারা আন্ত-নগর বাসে ভ্রমন করি, তাদের কি হবে? আমাদের সাড়ে আটঘন্টা কি সাড়ে আটার ঘন্টায় পরিনত হতে যাচ্ছে?
২. সাড়ে ৮ঘন্টা সাড়ে ১৮ ঘন্টায় পরিনত হওয়া তো একটা আসপেক্ট। পুরো সিস্টেমের উপর যে বোঝার ভার পড়তে যাচ্ছে, তার কি কোন স্ট্যাডি সরকারের হাতে আছে?
৩. আমরা আমজনতা-ই জানি রাস্তায় জ্যামের মাঝে অপেক্ষা করতে করতে ঘামে জবজবে হয়ে যাওয়ার মজা কতটা। আমরা কবে এসব মন্ত্রী আমলাদের এমন অভিজ্ঞতায় অভিজ্ঞ করতে পারব? এমন দিন কি কখনো আসবে?
আজ বিকেলে বিএনপি'র গনমিছিল। ভাবতেছি, পল্টন থেকে শাহবাগ হাটা শুরু করবো। যাদের বাসা মিরপুর তারা কি করবেন?