দৈনিক আমারদেশ অবশেষে ফিরে এল। বেশ ভাল লাগছে। "চেম্বারজজ মানেই সরকারের পক্ষে স্টে" এধরনের ধারনা থেকে আমরা আমজনতা এখনো বের হতে পারি নি, চেম্বারজজের ভৌতিক সব রায়ের জন্য। । তবে আপিল বিভাগ চেম্বারজজের জুজু কিছুটা কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদের সাধুবাদ।
আজকের আমারদেশের প্রথমপাতায় যে সংবাদটি নজর কেড়েছে সেটি হলো, সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি : ৬ মাসে ৮৪ জন গুপ্তহত্যার শিকার : দেশে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে আসলেই ভয়াবহ অবস্থা! বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে এটা ২০১০ না ৭১ পরবর্তী সময়।
তালুকদার মনিরুজ্জামানের বই থেকে উদ্ধুতি দিয়ে সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক আবু সাইয়িদ তার “বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড : ফ্যাক্টস অ্যান্ড ডকুমেন্টস” বইয়ে জানান, ১৯৭২ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯৭৩ সালের জুন পর্যন্ত সরকারি হিসাবে ২,০৩৫ টি গুপ্তহত্যা, ৩৩৭টি অপহরণ, ১৯০টি ধর্ষন, ৪,৯০৭টি ডাকাতির ঘটনা ঘটে এবং ৪,০২৫ জন বিভিন্ন চরমপন্থী নানা দলের হাতে খুন হন।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে গুপ্তহত্যার দায় শুধুমাত্র সরকারে ছিল না, বরং বিপ্লবের স্বপ্নে বিভোর শ্রনীবিদ্বেষী সর্বহারা দলগুলোও গুপ্তহত্যায় লিপ্ত ছিল। তৎকালীন সরকার ক্ষমতা কুক্ষীগত করে রাখার জন্য প্রতিবাদী বামদলগুলোকে দমনের নিমিত্ত গঠন করেছিল রক্ষীবাহিনীর মতো বিশেষ বাহিনী। প্রকাশ্য ও গুপ্তহত্যায় সিদ্ধহস্ত এই বাহিনীর হাতে খুন হয়েছে ৩০হাজারেরও বেশি আওয়ামীলীগ রাজনৈতিক নেতাকর্মী। রক্ষীবাহিনীই প্রথম বাংলাদেশের আইনে ইনডেমনিটি পায়।
আজকের ২০১০ এ এসে দেশে সর্বহারা আতঙ্ক হয়তো দূর হয়েছে, কিন্তু রাজনৈতিক গুপ্তহত্যার নতুন কালচার চালুর চেষ্টা চলছে। যেন রাজনৈতিক গুপ্তহত্যার এটা ২০১০ ভার্সন। বিএনপি নেতা ও ঢাকা সিটি কর্পরেশনের একজন ওয়ার্ড কমিশনার চৌধুরি আলমের নিখোঁজ হওয়া এবং তার সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জড়িত থাকার অভিযোগ আমাদের রক্ষীবাহিনীর কথাই মনে করিয়ে দেয়। শুধু চৌধুরি আলম ই নন, এই তালিকায় আরো আছেন গোলাম মর্তুজা, যিনি শিবিরের একজন উপরের সারির নেতা।
দেশের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এভাবে রাজনৈতিক পেটোয়া বাহিনী হিসেবে ব্যবহারের এই কালচার বন্ধ না হলে দেশের গনতন্ত্রকে আবারও একটি ৭৫-শক খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে।