১৫০- ২০০ জন লোক মারা গিয়েছে বলে তিনি ভুল তথ্য প্রকাশ করছেন। ব্লগার এই তথ্যটি সংশোধন করেছেন।
ঘটনার দিন আমি হাটহাজারী থেকে বহদ্দার হাটের দিকে আসছিলাম। এসময় দুর্ঘটনার খবরটি পাই। আমার বাসা ঘটনাস্থলের অদুরে হওয়াতে প্রথমেই ঘটনাস্থলের দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। পরে পুলিশ ও জনতার মারমুখী অবস্থান দেখে কাছাকাছি কিছুক্ষন অবস্থান নিয়ে বাসায় ফিরে আসি।
বাসায় ফিরে পরিচিত সাংবাদিকদের ফোন করতে থাকি। কেউই নিহতের সঠিক সংখ্যা বলতে পারছিলনা। জনতার মারমুখি অবস্থানের কারণে উদ্ধার কার্য শুরু করতে বিলম্ব হয়। সেনাবাহিনী আসার আগে পর্যন্ত উদ্ধার কার্য শুরু করা সম্ভব হয়নি। হয়তো আরও কিছু প্রাণ বেচে যেত তাৎক্ষনিক উদ্ধার কাজ করা যেতে পারলে (যেভাবে দুজনের পা কেটে উদ্ধার করার কারণে বেচে যায়)।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সাথে ব্লগার পোয়েট ট্রি তখনই ঘটনাস্থলে পৌছান। জেলা প্রশাসক ও পোয়েট ট্রির সহকর্মীর গাড়ী জনতা ভেংগে দিলেও উনার গাড়িটি ভাগ্যক্রমে রক্ষা পায়। পোয়েট ট্রি সারারাত নির্ঘুম থেকে উদ্ধার কাজে সমন্বয় করেছেন। পরদিন সকালে তিনি আমাকে ডেকে নেন। তার সাথে থেকে পুরোদিন উদ্ধার কার্যক্রম পর্যবেক্ষন করি।
সারারাত নির্ঘুম থেকে পরদিন দুপুরে বিশ্রাম নিতে আসার পর ব্লগার পোয়েট ট্রি এর ফেসবুক স্ট্যাটাস।
জানা গেছে, যে পুকুরে ৩ গার্ডারের একটি পড়েছে, ওখানে পাড় ঘেঁষে অনেক মানুষ বৈকালিক ও সান্ধ্যসময় কাটাতেন। কাজেই পুকুরের ভেতরে পড়া গার্ডারটির নিচে অধিকসংখ্যক প্রাণহাণির ঘটনা থাকতে পারে; সেটা জানতে আমাদের আরও সময় অপেক্ষা করতে হবে। সম্মিলিত উদ্ধার
তৎপরতা চলছে।
ঘটনার পরপরই সেখানে ফায়ারসার্ভিসের একটি গাড়ি এবং কিছুক্ষণ পরেই জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম তিনজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও ফায়ারসার্ভিসের আরও একটি উদ্ধার টিম নিয়ে সেখানে হাজির হলে উপস্থিত জনরোষ
ে পড়েন; সে সময় জেলা প্রশাসকের গাড়ি সহ ফায়ারসার্ভিসের গাড়ি এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকগণের গাড়ি ভাঙচুর হয়। জনরোষ নিয়ন্ত্রণে এনে উদ্ধার কাজ শুরু করতে ২/৩ ঘন্টা বিলম্ব হয়েছে।
পরবর্তীতে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ সহ উদ্ধার কাজ শুরু হলেও ওই এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় উদ্ধার কাজ বিঘ্নিত হয়।
ঘটনাস্থলে, চট্টগ্রাম সেনাসদরের জিওসি মহোদয়, একজন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ এবং বিভিন্ন বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ পালা অনুযায়ী দায়িত্ব পঅরন করছেন এবং কার্যক্রম সমন্বয় করছেন।
গার্ডার তিনটি বিশালাকৃতির বিধায় সেগুলোর রড কেটে সম্ভাব্য প্রাণহাণির বিষয় নিশ্চিত করতে হচ্ছে; একটি গার্ডার পুকুরের ভেতরে আছে, সেখানে নৌডুবুরিগণ কাজ করছেন।
শক্তিশালী ক্রেন ঘাটতি রয়েছে; উদ্ধার কাজে আরও সময় লাগবে অনুমান করা যাচ্ছে।
ফ্লাইওভার বিতর্ক রেখে এখন যতদ্রুত সম্ভব উদ্ধারকাজ সম্পন্ন করতে পারাটাই একটা চ্যালেঞ্জ; শোক প্রকাশ ছাড়া এ মুহূর্তে কিছুই বলার নেই।
ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রী মহোদয়।
চট্টগ্রামের বহদ্দার হাটে উড়ালসেতুর গার্ডার ধ্বসে পড়ার ঘটনায় এ যাবত পাওয়া তথ্যানুসারে যে সাতটি প্রাণহাণির ঘটনা জানা যায়, তার মধ্যে, চান্দগাঁও থানাপুলিশ ও চমেক হাসপাতালের প্রামাণিক তথ্যে ৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে।
====================================
ব্লগার তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রনে এর স্টিকি পোষ্টে যা তথ্যগত অসামঞ্জস্য পেয়েছি তা আমার নিজস্ব পর্যবেক্ষন সহ তুলে ধরলাম।
আজাদীর উদ্বৃতি দিয়ে ব্লগার লিখেছেন:
চট্টগ্রাম কলেজের বিএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র শফিউল কবির দৈনিক আজাদীকে জানান, ঘটনাস্থলে কমপক্ষে ৫০টি ভাসমান দোকান ছিল। সবগুলোই গার্ডারের নিচে চাপা পড়েছে।
যেখানে একসাথে দুটি গার্ডার ভেংগে পড়েছে সেখানে সবসময় পানি জমে থাকত। তার বিপরীত পাশ ছিল শুকনো। গার্ডার ভেংগে পড়া স্থানে পানি ও কাদার মধ্যে কিভাবে ভাসমান দোকান বসতে পারে তা আমার ধারণার বাইরে।
দৈনিক আজাদীর উদ্বৃতি দিয়ে ব্লগার লিখেছেন
ঘটনার পর পর যে পুকুরে গার্ডার ভেঙে পড়েছে সেখানে নেমেছিলাম। উদ্ধারের চেষ্টায় পুকুরে বারবার ডুব দিলেও কাউকে উদ্ধার করতে পারি নি। তবে এসময় অসংখ্য হাত ও পায়ের স্পর্শ পেয়েছি। না হলেও অন্তত ৩০টি লাশ এই গার্ডারের নিচে চাপা পড়েছে।
দুটি গার্ডার একটির উপর আরেকটি অন্যটির অর্ধেক পড়ে পানিতে। যেটির পাচঁভাগের একভাগ কাদায় গেথে গেছে।
এদুটি চিহ্ণিত অংশে লোকজন ছিল বাকি অংশে লোকজন থাকলেও তারা বেচে যায়।
এই অংশের নীচেই চাপা পড়ে বেশির ভাগ পথচারী।
এটির কিছু অংশ পানিতে গেথে যায়। কিন্তু গেথে যাওয়া অংশের নীচে ত্রিশ জন লোক থাকার মত জায়গা নেই।
ব্লগার লিখেছেন।
এই দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা কম করে হলে ও ১৫০- ২০০ জনের মতো , কারো অবস্থা এতটা ভয়াবহ যে মাংস থেঁতলে মিশে গেছে চেনার উপায় টা পর্যন্ত নেই ব্লগার তথ্যটি সংশোধন করেছেন।
==========================
==========================
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বর্ণনা দেখুন।
আজকের ফ্লাই ওভার ভেঙ্গে পড়ার ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি ,
আজ হয়ত আমারও সলিল - সমাধি হতে পারতো শুধু ৪/৫ মিনিটের ব্যাবধানের জন্য । রাস্তার উপর ফ্লাই ওভারের নিচে , আজকেও পসরা সাজিয়ে বসে ছিল ৮/১০ জন দোকানী , গার্ডারের মাঝখানে ছিল রতন নামের এক কিশোরের চা-সিগারেটের দোকান। আমি আর আমার বড় মামা গিয়েছিলাম ভেঙ্গে পড়া গার্ডারের বিপরীতে একটি স্টুডিওর দোকানে ওয়াশ করা ছবি গুলো নিয়ে আসতে ।
মামা আর আমি রাস্তার ডান পাশ(যে পাশে গারডার ভেঙ্গে পড়েছে) দিয়ে হেটেই গিয়েছি!! মামা এই রতন একটা সিগারেট দে বলায় বুঝতে পারি ছেলে টি রতন এবং মামার পূর্ব পরিচিত ছিল , সে সময়ে বহদ্দার বাড়ির পুকুর পাড়ের দেয়ালের উপর বসা ১৩-১৫ জন কে দেখেছি, যারা নশ্চিত ভাবে ভেঙ্গে পডা গার্ডার সহ পুকুরের জলে চির নিদ্রায় ঘুমিয়ে পড়েছে, আর দুটি গার্ডার ভেঙ্গে পড়েছে রতনের দোকানের উপর।
উল্লেক্ষ, সে সময় তার দোকানে চা পান করা অবস্থায় ৪-৫ জন ছিল , আর বাজারে ছিল ৮-৯ জনের মতো । সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ২০-২৫ এর বেশি নয়।
গার্ডার ভেঙ্গে পড়া আর অলৌকিকভাবে বেচে ফেরাঃ- মামা রতনের কাছ থেকে সিগারেট নিয়ে বলেন , ভাগ্নে চল , আজকে হালকা শীত লাগছে, ছবি গুলো নিয়ে বাসায় চলে যাই, আমি বললাম ওকে মামা চলেন ,
গার্ডারের নিচ থেকে বেরিয়ে রাস্তা পার হলাম । মামা দোকানে ঢুকলেন আমি দোকানের বাইরে দাড়িয়ে রইলাম। হঠাত্ কচ কচ শব্দ শুনে উপরে তাকাতেই দেখি ভেতরের দিকে থাকা গার্ডার টা দু নম্বর গার্ডারের গায়ে আছড়ে পরল আর দু নম্বর টা পরল ৩ নম্বর টার উপর ,
ফলাফলঃ
মুহূর্তেই বিকট শব্দ , ৩ নম্বর গার্ডারের অংশ বিশেষ পড়ল পুকুর পাড়ে বসে থাকা অই ছেলে গুলোর উপর, আর অর্ধেক অংশ উপরে, আর দুটি গার্ডার সোজা বাজারের উপর । রতনের সাথে আর আমার মামার দেখা হবেনা কোনোদিন।
আজকের ঘটনা ঘটে যাবার পর গটল আরেক নাটক ,
পুলিশ , আর ব্রিজের লোকজন লাশ উদ্ধার করে সেগুলো কে কড়া পাহারায় পুকুরে ফেলে দেবার চেষ্টা করে । অনেক নাড়ি -ভুড়ি, ছিন্ন-ভিন্ন হাত পা ইত্যাদি ইত্যাদি ।
সাধারন জনতা এহেন কাণ্ড দেখে অবাক হয় , হঠাত্ ই বন্ধ করে দেয়া হয় বিদ্যুৎ। ফলে জনতা মারমুখি হয়ে পড়ে রক্ষাকারী বাহিনীর উপর ।
জনতা মিডিয়ার সামনে যখন জিজ্ঞেস করে , দশ গজের মধ্যেই তো পুলিশ ফাড়ি আপনারা বাজারের অনুমতি দিলেন কেন ? তখন লেলিয়ে দেয়া হয় দাংগা পুলিশ , উত্তেজিত জনতা বহদ্দার হাট পুলিশ ফাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, অগ্নি সংযোগ করে পুলিশের মোটর সাইকেলে ,
এই সময় মুরাদপুর-কালুরঘাট+ চকবাজার টু টারমিনাল সব রাস্তায় যান চলাচলে নিষেদ্ধাজ্ঞা জারি করা হয়।
এখন জানিনা রাস্তায় আমার মৃত্যু হলেও আমার লাশ পানিতে চেপে মৃতের সংখ্যা কমানো হবে কিনা ,
এটি কোন কপি-পেস্ট পোস্ট নয়, সো কেউ কোন বিরুপ মন্তব্য করবেন না দয়া করে।
আজ আসলেই মনে প্রশ্ন জাগল এ কোন দেশে বাস করি আমরা ? পুলিশ কি উদ্ধার তত্পরতা চালানোর জন্য ? নাকি মরা লাশ গুলোকে বাঁশ দিয়ে চেপে চেপে পুকুরে পচিয়ে ফেলার জন্য ? আগে জানতাম পুলিশ আর ফায়ার ব্রিগেত ডুবুরি দিয়ে লাশ উদ্ধ্রার করে আর আজ জানলাম তারা লাশ পানিতে কাদা মাটিতে চেপে ফেলতে জানে!!
[ লেখাটি পাঠিয়েছেঃ Shuaib Aktar ]
=========================
========================
কিসের ভিত্তিতে ব্লগার তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রনে এ তথ্য দিলেন তা আমার বুঝে আসেনি। আমার হিসেবে ধ্বসে পড়া এলাকায় একজনের গায়ে একজন লেগে দাড়ালেও ধ্বসে পড়া অংশে ১৫০-২০০ লোক ধরার কথা নয়। তার উপর বাজার বসে ঊল্টো দিকে। শুধুমাত্র পথচারী ৩০-৪০ জন লোক সেখানে ছিল যার প্রত্যেকেই হতাহত হয়েছেন। ব্লগার তথ্যটি সংশোধন করেছেন
অল্পের জন্য প্রানে বেচে গেছেন এমন একজন আমাকে তথ্য দিলেন সেখানে অবস্থান রত লোক৩০-৪০ জনের বেশি হবেনা। কেউ কেউ ছিটকে সরে গেছেন। যারা তাৎক্ষনিক ভাবে সরে যেতে পারেননি তাদের উপরেই গার্ডার ধ্বসে পড়েছে।
ঘটনাস্থলে সারারাত আমার সাংবাদিক সহকর্মীরা ছিলেন কোন ধরণের লাশ গুম হওয়ার তথ্য আমরা পাইনি। গার্ডার ভেংগে পড়া স্থানের ১০০ ফুট দুরে স্থানীয় জনতা সারারাত পাহারায় ছিল নিখোজ স্বজনের সংবাদ জানার জন্য। তারাও কোন ধরণের লাশ গুম হওয়ার তথ্য দিতে পারেননি।
ইসপাত কঠিন বলেছেন: লেখক, আমাকে আপনার চেনার কথাও না। যাই হোক, আজ আরো একটি লাশ উদ্ধার করেছি আমরা। মাটিতে পড়ে থাকা গার্ডারের নীচ থেকে। তার নিকটাত্নীয় আগের থেকে অপেক্ষায় ছিলেন। আমার জানামতে অপেক্ষমান আর কেউ নেই। তবুও আমরা পুরোটুকু দেখবো। তবে পুকুরের নীচের গার্ডারের নীচ তন্নতন্ন করে দেখতে হলে পুকুর সেচতে হবে।
============================
এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যমতে উদ্ধার হওয়া লাশের সংখ্যা ১৫।
=============================
ব্লগারের দাবীর সাথে একমত পোষন করছি।
প্রিয় চট্টগ্রাম বাসীদের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি আমার কিছু দাবী আছে তা নীচে তুলে ধরলাম
এক --- হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করা
দুই --- সব কিছুর সক্ষমতা যাচাই বাছাই না করে যারা ঠিকাদার নিয়োগ করেছেন এর সাথে জড়িত ঠিকাদার , নকশাকার , সি ডি এ এর চেয়ারম্যান , আমলা তদারকি প্রতিষ্টান , ব্যাক্তি কে গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করা ,
তিন ---জনগণের কষ্টার্জিত ট্যাক্সের টাকায় না , সংশ্লিষ্ট জড়িত ব্যাক্তিদের সম্পত্তি নিলামের মাধ্যমে হতাহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেবার ব্যবস্থা করা
উল্লেখ্য প্রাণের শহর চট্টগ্রামেই , আমার জন্ম , শৈশব , কৈশোর এবং বেড়ে উঠা , আর এই শহরেই আমার ৯৫ ভাগ কাছের মানুষের বসবাস --আল্লাহর কাছে হাজার শোকর যে তারা সবাই ভালো আছে
=======================================
আমার পোষ্টটি কোন কিছু প্রমাণের জন্য নয়। কিছু সত্য তুলে ধরার প্রয়াস। কারো পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নিলে আমাকে দুইটাকা দেবেনা কেউ। আমার সে দায়টুকুও নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪৯