somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চশমা বিহীন পৃথিবী কি সম্ভব

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিরোনাম দেখে অনেকেই হয়তো বিষয়টি ঠিক বুঝতে পারছেন না। বিশেষ করে আমরা যখন জানি প্রায় প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে কোনো না কোনো সময় চশমার প্রয়োজন দেখা দেয়। সেখানে চশমাবিহীন পৃথিবী কি করে সম্ভব? বিষয়টিতে একটু রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন কি? একটু চিন্তা করে দেখুন আজ থেকে প্রায় কয়েক বছর আগেও আমরা ইন্টারনেট, ই-মেলের সাথে একদম অপরিচিত ছিলাম। মানুষকে বাধ্য হয়ে নির্ভর করতে হত পোষ্ট অফিসের উপর। আর এখন ঘরে বসে কম্পিউটারের একটি বোতাম চাপ দিলেই এক সেকেন্ডেই আপনার লেখা শত শত চিঠি পৌছে যাবে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। ই-মেলের প্রভাবে আর কয়েকবছরের মধ্যে পোষ্ট অফিসের কাজ কমতে কমতে হয়তো সংখ্যায় একদমই কমে যাবে। যেমন ক্যামেরার ফিল্ম ইন্ড্রাষ্ট্রি উঠে যাচ্ছে ডিজিটাল ক্যামেরার প্রভাবে। আর ভিডিও-অডিও ক্যাসেট তো প্রায় উঠেই গেছে সিডি আর ভিসিডির জন্যে। ঠিক তেমনি চক্ষু বিশেষজ্ঞদের ধারণা একদিন চশমার দোকানও উঠে যাবে ল্যাসিকের জন্য। অধিকাংশ মানুষকে দেখা যাবে চশমা ছাড়া দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। এখন প্রশ্ন হল ল্যাসিক আসলে কি? আধুনিক চক্ষু চিকিতসায় ল্যাসিক একটি নতুন সংযোজন। চশমার বিকল্প এই ল্যাসিক অপারেশনের জনপ্রিয়তা দিনকে দিন বেড়েই চলছে। বাংলাদেশও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। তবে এজন্য জনসাধারণের কিছু অবগতি ও সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে।
লেসিক এক ধরনের লেজার প্রযুক্তি, যা দৃষ্টি সমস্যায় চোখে প্রয়োগ করা হয়। এক্ষেত্রে একটি বিশেষ ধরনের শক্তিশালী ও সংকচিত আলোক রশ্মি ব্যবহার করা হয়। যাকে এক্সাইমার লেজার বলে। এটি এমনই একটি চিকিতসা যেখানে চোখের বাইরে বা চোখের মধ্যেও কোন লেন্স বসানো হয় না।
যাদের প্রায় সব সময় চশমার প্রয়োজন কিন্তু চশমার ভার বইতে রাজী নন, তাদের জন্য এই ল্যাসিক। চশমা অনেক সময় মুখের সৌন্দর্যকে ঢেকে রাখে, বিশেষ করে সেটা যদি হয়ে থাকে বেশি পাওয়ারের মোটা লেন্স। প্রবল ইচ্ছে থাকা সত্বেও শুধুমাত্র চশমা পরার জন্য অনেকে অনেক পেশায় ঢুকতে পারেন না। যেমন-বিমানচালক, সেনাদল ইত্যাদি। পেশাগত ক্রিড়াবিদ হওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। এছাড়া অভিনেতা-অভিনেত্রী কিংবা নামকরা কোনো মডেল যদি চশমা পড়েন তা সর্বসাধরণের কাছে ঠিক গ্রহনীয় হয় না। এ সমস্যার কিছুটা সমাধান এনে দিল কন্ট্যাক্ট লেন্স। চশমার বিকল্প হিসেবে কন্ট্যাক্ট লেন্সই গত পঞ্চাশ বছর ধরে দৃষ্টি উন্নয়নে রাজত্ব করে আসছে। কিন্তু প্রতিদিন বারবার খোলা-পরা এবং নিয়মিত পরিচর্যার ঝঞ্ঝাট কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহারকারীকে সহ্য করতে হয়। বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতির ফলে চশমার বিকল্প হিসেবে আরোও অনেক প্রচেষ্টা আবিস্কার হয়েছে। সেই প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ আধাইঞ্চি ছোট নেত্রস্বচ্ছকে নিয়ে মানুষের কতই না মাতামাতি। কারণ সেই নেত্রস্বচ্ছের মাপ বদলাতে পারলেই চোখের পাওয়ারের রদবদল করা যায়। তাই শুধুমাত্র চশমা ছাড়া ভালো দেখার আশায় নেত্রস্বচ্ছকে কতভাবেই না ব্যবহার করা হয়েছে। চোখের পাওয়ার বদলানোর জন্য একে কাটা হল রেডিয়াল কেরাটোটমি, পোড়ানো হল থারমো কেরাটোকোয়াগুলেশন, বরফের মত জমিয়ে শক্ত করা হল কেরাটোম্যালিউসিস, দুই ভাগ করে মাঝখানে আর একটা লেন্স বসিয়ে স্যান্ডউইচ করা হলÑকেরাটোফেকিয়া, আরেক নেত্রস্বচ্ছ (মৃত মানুষের) থেকে কেটে এনে এর উপর টুপির মত পরানো হল এপিকেরাটোফেকিয়া, এরকম আরো কত নতুন পদ্ধতি বের হয়েই চলছে। তবে এসব অপারেশন বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে সম্ভব হলেও বেশ ব্যয়সাপে এবং সম্পূর্ণ সেরে উঠায় রয়েছে অনিশ্চয়তা। আর অপারেশন পদ্ধতিগুলো জটিল বলে খুব একটা জনপ্রিয়তা পায় নি।
তাই এখন অপোকৃত সস্তা, সহজ ও শেষ পদ্ধতি হলো ল্যাসিক। ল্যাসিক অপারেশন ও পি.আর.কে অপারেশন আসলে প্রায় একই। প্রথমে নেত্রস্বচ্ছের মাঝখানের (চোখের কালো মণির সামনে) একটু অংশের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ পাতলা করে কেটে তোলা হয়। পুরোটা না কেটে এক কোণায় আটকিয়ে রাখা হয়। এবার এক্সাইমার লেজারের সাহায্যে নেত্রস্বচ্ছের মাঝখানের এক-তৃতীয়াংশ পাতলা করে দেয়া হয় এবং সেই সরিয়ে রাখা পর্দাটি আবার লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে কোনো সেলাই লাগে না। সময় লাগে মাত্র কয়েক সেকেন্ড। এ অপারেশনের রেজাল্ট অত্যন্ত ভাল, চোখে কোনো ব্যথা হয় না এবং দৃষ্টিশক্তিও তাড়াতাড়ি ফিরে আসে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে সারাজীবনের জন্য মানুষ পেতে পারে চশমা থেকে রেহাই। ... (চলবে)
২৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভাবে মটরবাইকে স্বস্ত্রীক ট্যুর দেই

লিখেছেন অপলক , ৩০ শে মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৫০



আসলে আমি ফ্রিডম পছন্দ করি। আদেশে নয়, অনুরোধে মন গলে আমার। শহুরে হট্টগলের চেয়ে প্রকৃতি ভাল লাগে। দল বেঁধে ট্যুর দেবার চেয়ে একাকি ট্যুর দিতে ভাল লাগে। বনের কুকুররা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের থেকে কতটুকু আলাদা তারা?

লিখেছেন শেহজাদ আমান, ৩০ শে মে, ২০২৫ বিকাল ৪:১২



তাদের দেখে মনে পড়ে যায় আওয়ামী লীগের চেতনা ব্যবসার কথা

(১)
আওয়ামী লীগ অন্তত সরকারিভাবে হলেও ১৯৭১-সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকায় ছিল। এরপর সেই ভূমিকার কারণে তারা দেখা গেল যে দেশটাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

"বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি".....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ৩০ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৬

"বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি".....


বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হতে হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি। হতে হবে সকল প্রেরণার উৎস। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের এই দর্শনের নিহিত রয়েছে আত্মসামাজিক,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঢাকায় শান্তিতে বসবাসের জায়গাগুলো

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩০ শে মে, ২০২৫ রাত ৯:৪৪






ঢাকায় শান্তিতে বসবাস করা যায় যেসব এলাকা: একটি বাস্তবভিত্তিক পর্যালোচনা

ঢাকা, বাংলাদেশের রাজধানী শহর, জনসংখ্যা ও যানজটের দিক থেকে অন্যতম ব্যস্ততম নগরী হলেও এখানকার কিছু কিছু এলাকা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে দলীয় সরকার কখনই জনগণের সরকার হয় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে মে, ২০২৫ রাত ১২:২৫



সবাই মিলে দেশ স্বাধীন করলেও আওয়ামী লীগ সেটা স্বীকার করলো না। সেজন্য তারা বাকশাল নামে একদলীয় শাসন শুরু করে ছিল। কিন্তু সেনা বিদ্রোহে তাদের বাকশালী শাসনের অবসান ঘটে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×