আজকাল কৈশরটাকে মিস করি খুব বিশেষ করে যখন শীতকাল আসে। আগে শীত আসলেই নানার বাড়িতে একটা উৎসব এর মতো করে একদিন পিঠার দাওয়াত পাইতাম পুরা পরিবার। খালাতো-মামাতো ভাইবোন আর আর সবাই মিলে প্রায় ৬০-৬২ জনের একটা ছোট খাটো মিলন মেলা। বছর সাতেক থেকে নানা বাড়ী যাওয়া বলতে বছরে দুই-এক দিন। আগের মতো সেই আমেজ টা আর নাই। সময়ের সাথে সাথে বদলে গেছে অনেক কিছুই। খালাতো-মামাতো ভাইবোনেরা মিলে কত হইচই,সারারাত ধরে গল্পগুজব, পিঠা লুকিয়ে রাখা সেইসব এখন স্মৃতি। এখনও পিঠাপুলি হয়, নিজের বাড়িতে-নানার বাড়িতে, কিন্তু কৈশরের সেই আমেজ কিংবা পরিতৃপ্তি কোনটাই আর নাই...
এখন কোনদিক দিয়ে হেমন্ত আসে আর কোন দিক দিয়ে চলে যায় ,সেটা টেরই পাই না।অথচ আগে হেমন্ত মানেই নবান্ন উৎসব। নতুন চালের ভাত সবাইকে নিয়ে খাইতেই হবে এটাই চল ছিলো। নিকট আত্বীয়দের দাওয়াত করে নবান্নে খাওয়ানো ছিলো কমন একটা ব্যাপার। কিন্তু সবার ব্যস্ততার ভীড়ে আজকাল আর এই চলটা খুব একটা দেখা যায় না।
জন্মদিন-বিবাহ এখনও সবাই সবার বাড়িতে নিমন্ত্রণ খায়, খাসি-পোলাও ভুড়ি ভোজ করেই হয়তো খায়, কিন্তু আগের সেই নতুন চালের ভাত আর নবান্ন এর কাছে এই ভূড়ি ভোজের বিন্দু মাত্র মূল্যও নাই, নেই সেই আন্তরিকতা।
শহুরে চাকচিক্যময় ফাস্টফুড কর্ণারে মাইক্রো ওভেনে গরম করা স্যান্ডউইচ কিংবা বার্গার, কৈশরের শীতের সকালের খড় কুঠার উনুনে মা-মামী কিংবা নানীর হাতের সেই গরম ভাপ ওঠা ভাঁপা পিঠার কাছে নস্যি,মূল্যহীন...
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৫