বর্তমান সময়ে আমাদের বেশিরভাগ কনফিডেন্সিয়াল ডেটা থাকে আমাদের মুঠোফোনে। এখানে কনফিডেন্সিয়াল বলতে আপনার প্রেমিকা, ফ্রেন্ড বা পরিবারের কোন সদস্যের পাঠানো একটা এসএমএস ও হতে পারে
আবার আপনার দাপ্তরিক কাজের কোন ডকুমেন্ট ও হতে পারে। আপনার এইসকল তথ্য বিভিন্ন ভাবে অন্যের নখদর্পনে চলে যেতে পারে সাবধানতার অভাবে...
মেমোরী কার্ডঃ
ক্ষুদ্র একটি মেমোরী কার্ড আমাদের কতো প্রয়োজনীয় তথ্য বহন করে চলেছে। কিন্তু আপনি জানেন কি যে আপনি আপনার এই সমস্ত ডেটা যতবারই ডিলিট করুন না কেন তার একটা ইমেজ এই কার্ড এ থেকেই যায়। যা মাত্র কয়েক মেগাবাইটের একটি সফটওয়্যার এর সাহায্যে মুহুর্তে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এমনকি মেমোরী কার্ড টি ফরমেট করা হলেও ( যদি শুধুমাত্র প্রাইমারী পার্টিশনটী ভেঙ্গে ফেলা না হয় ) সমস্ত ডেটা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এটা শুধু মেমোরী কার্ড নয় পেনড্রাইভ , হার্ডড্রাইভ যেকোন স্টোরেজ ডিভাইস এর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তাই নিজের ব্যবহৃত মেমোরী কার্ড , পেনড্রাইভ , হার্ডড্রাইভ কখনই কারো কাছে হস্তান্তর করবেন না।
সীম কার্ডঃ
আপনার সীম কার্ডের মাধ্যমেও আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হতে পারে।
১। সীম ক্লোনিংঃ প্রসেসটা অনেক জটিল , কিন্তু যে কেউ এটা করে ফেলতে পারে। সীম ক্লোনিংকে সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করতে গেলে যা দাঁড়ায় তা হলো যে আপনার নাম্বারেই আরেকটা সীম এক্সিস্ট করবে। যদি আপনার সন্দেহ হয় যে আপনার সীম ক্লোনিং এর স্বীকার হয়েছে কিনা তাহলে আপনার ফোনটি সুইচ অফ করুন। অন্য একটি ফোন থেকে আপনার নাম্বার ডায়াল করুন যদি কল করতে সমর্থ হন বুঝবেন আপনার সীমটি ক্লোনিং এর স্বীকার হয়েছে।
২। e-care account: প্রত্যেক মোবাইল অপারেটরের ই-কেয়ার সার্ভিস থাকে। যেখানে রেজিঃ করতে গেলে আপনার ফোনে একটি কোড আসবে। তো যেকেউ আপনার ফোনটি হাতে নিয়ে এখানে রেজিঃ করে ফেলতে পারে। এর ফলে সে আপনার কল হিস্ট্রি, রিচার্জ হিস্ট্রী এসব দেখতে পারবে। এক্ষেত্রে করণীয় হলো, আপনি নিজেই একটি ই-কেয়ার অ্যাকাউণ্ট খুলে রাখুন, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এটা করতে না পারে। আর আপনার ফোনে কোন কোড আসলে সেটা যদি কেউ পাঠিয়ে দিতে বলে তাহলে ভুলেও সেটা শেয়ার করবেন না।
৩। কল ডাইভার্ট অপশনঃ যেকেউ আপনার ফোন নাম্বারটি তার নাম্বারে ফরওয়ার্ড করে রাখতে পারে। তাহলে যেটা হবে আপনার সকল ভয়েস কল তার নাম্বারে যাবে। আপনি সহজে বুঝতেও পারবেন না। কারন আপনার মনে হবে যে হয়তো আপনার নাম্বারে কল কেউ করেনি। তাই নিয়মিত কল ফরওয়ার্ডিং অপশন ডিজেবল আছে কিনা চেক করুন। অনাকাংখিত ভাবে আপনার ফোনের ব্যালেন্স ডিডাক্ট হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন।
৪। স্পাই সফটওয়্যারঃ স্মার্ট ফোনের ( ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি আছে এবং এক্সটারনাল অ্যাপ ইন্সটল করা যায় এমন ফোন ) ক্ষেত্রে অনেক সময় স্পাই সফটওয়্যার এর মাধ্যমে আপনার তথ্য চুরি হতে পারে। যেমন, আপনার সকল কল রেকর্ড করে নির্দিষ্ট নাম্বারে পাঠিয়ে দিবে এমন অ্যাপ অ্যাভায়লেবল। তাই সার্ভিসিং থেকে নেয়ার পর, বা কাউকে ফোন ব্যবহার করতে দিলে , নেয়ার পর চেক করে দেখুন আপনি ইন্সটল করেননি এমন কোন অ্যাপ রান আছে কিনা...?
অনেকে ভাবতে পারেন আমার তথ্য চুরি করে কার কি লাভ? আসলে আমরা নিজেদের লাভে যতটা না খুশি হই , অন্যের ক্ষতিতে অনেক
সময় তার চেয়েও বেশি খুশি হই। তাই এই তথ্য চুরি করে হয়তো তার কোন লাভ হবে না, কিন্তু আপনার ব্যক্তিগত বা রাষ্ট্রীয় ক্ষতি তো হতে
পারে। তাই সতর্ক হোন এখনই। প্রযুক্তি হোক উন্মুক্ত কিন্তু সাথে সাথে নিরাপদ হোক প্রযুক্তির ব্যবহার।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৮