পারসুইট অব হ্যাপিনেস.. আমার জীবনে দেখা সেরা মুভিগুলোর একটি। সুখ? কি? সবাই আমরা যার পেছনে ছুটছি? হয়তো হ্যাঁ। হয়তো না। কেউ ছুটে কেউ খুঁজে নেয়।
আমার আগের লেখার পরের পার্ট লিখছিলাম। কারেন্ট চলে যায়। সেভ করতে পারিনি। পুরোটা লিখার আর শখ নেই। কারেন্ট আসার পর কিছুক্ষণ আগে মুভিটা দেখা শেষ করলাম। মুভিটা আমার সেদিন রাতের অভিজ্ঞতাকে আরো পরিষ্কার করে দেখিয়েছে।
আমরা হা-হুতাশ করি কিছু নেই বলে। আবার আহ-উহ করি রাস্তায় পড়ে থাকা মানুষদের দেখে। ভাবি.. আমরা কতই না দরদী। ওদের দুঃখ বুঝি। আসলে আমরা কচুটাও বুঝি না। চার দেয়ালের ভেতরে থেকে বুঝা যায় না ওদের কষ্ট। রাস্তায় শুতে কেমন লাগে সেটা আপনি বুঝবেন না ফোমের গদিতে শুয়ে। একদিন শুয়ে দেখুন না একটা যাত্রী ছাউনিতে। মশার কামড় আর পিঠের নিচে শক্ত রড কিংবা শীতল কংক্রিট কেমন লাগে। একবার তাড়া খেয়ে রাস্তায় ফিরে আসুন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে গিয়ে। একবার দেখে আসুন রাস্তার একটা "মাগী"কে কীভাবে গাড়ি থেকে ডাক দেয় পয়সাওয়ালারা। দেখুন সামান্য কটা টাকার বিনিময়ে সে নিজেকে বিলিয়ে দেয়। রাত শেষে পরম তৃপ্তি নিয়ে রাস্তায় ঘুমিয়ে পড়ে।
এই রাতের শহরের অতৃপ্ত মানুষের মাঝেও আমি সুখ খুঁজে পেয়েছি। রাতের তিনটায় জিইসি মোড়ে ১৫ টাকার "বিরিয়ানি" খেয়ে যখন বাস্তার বুড়োটা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছে, শেষ ভাতের দানাটাও যখন আগ্রহ নিয়ে খেয়ে হাসিমুখে প্লেট ফেরত দিয়েছে.. আমি বুঝেছি সুখ কি। নিজেকে ধিক্কার দিলাম। সব থেকেও আমার কিসের অভিমান? এত কিসের অভিযোগ?
বাসার কথা মনে হলো এতক্ষণে। মা নিশ্চই এতক্ষণে কেঁদে-কেটে ঘুমাতে গিয়েছে। তখন জিইসির একটা দামী দোকানের সামনে জড়সড় হয়ে অনেক শিশু ঘুমিয়ে আছে। এদের মা এদের জন্য দ্বার চেয়ে বসে থাকে না। হয়তো এদের মা-ই নেই। এর মাঝে দেখলাম চারটা লাটের ছেলে রাস্তায়.. চশমা পড়া.. দামী জামা-জুতো। পারলে তখন ওদের গালে চটকানা লাগিয়ে দিতাম। ওরা ফুর্তি খুঁজছে। কিংবা রাতের শহর খুঁজছে। খুঁজে পাবে না। এভাবে পাবে না। বস্তব কতটা বাস্তব বুঝবে না।
রিকশা ভাড়া করে রিকশাওয়ালাকে সিটে বসিয়ে রিকশা টেনে বাসায় ফিরলাম। রাতের শীতল খালি রাস্তায়ও রিকশা টানা এত সোজা না। বাসায় ফিরে এলে মা বাবা জরিয়ে ধরলো। ফেসবুকে দেখলাম বাঁধন ভাই, সাদমান, জয় স্ট্যাটাস দিয়েছে। মনে হল জীবনটা এত খারাপ না তো!
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২৪