বাংলা বর্ষের উৎপত্তিঃ বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি মূলতঃ হিজরি বর্ষ থেকে। এর পূর্বে বাংলা বর্ষ এভাবে গণনা হতোনা।
এই কথাটা এজন্যই বললাম যে, বাংলা নববর্ষের কোন অনুষ্ঠান অর্থই ঢোল-ডুগি, নাচ গান, মঙ্গল পুজা, মঙ্গল শোভাযাত্রা ইত্যাদি। দুঃখের বিষয় হলো যে মুসলমান শাসকগণ এই বাংলা সাল প্রবর্তন করলেন তাদের কোন কথা স্বিকার করা হচ্ছেনা। অার মুসলিম কোন সাংস্কৃতির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা।
তবে কি অামরা সাংস্কৃতিক উৎসবের নামে বাংলা নববর্ষের মূল ইতিহাস ভুলতে বসেছি!!!
নববর্ষঃ বৈশাখের এক তারিখে নববর্ষ উৎসব বা পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়।
নববর্ষ উৎসবের সাথে বেশ কিছু বিষয় জড়িত। হালখাতা, বাকি বকেয়া পরিশোধ করে নতুন করে হিসাবের খাতা খোলা।মিষ্টি মিঠাই, বিভিন্ন অনুষ্ঠান, গ্রামীন মেলা ইত্যাদি।
তবে যুগের পরিবর্তনে এখন অনেক কিছুই হারাতে বসেছে বাঙালী জাতি।
বাংলা বর্ষের প্রণেতাঃ বাংলা নববর্ষের প্রবর্তক সম্রাট অাকবর। সম্রাট অাকবরের নির্দেশে তৎকালিন সময়ের বিখ্যাত জতির্বিদ ফতেউল্লাহ সিরাজী ১৫৮৪ সালের ১০ বা ১১ মার্চ প্রথম বাংলার সাল গণনা শুরু করেন। তবে সম্রাট অাকবরের সিংহাসন অারহণের সময় ৫ নভেম্বর ১৫৫৬ সাল থেকেই মূলত বাংলা সনের সূচনা ধরা হয়। পূর্বের কোন শাসক বাংলার সাল গোছালো ভাবে গণনা করেননি।
অার অামরা বাংলা সাংস্কৃতি থেকে মুসলিম সাংস্কৃতিকে কৌশলে সরায়ে দিয়েছি। অামাদের যারা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ত্ব যারা নিজেদের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ত্ব বলে দাবি করেন তারা কেও ইসলামি সাংস্কৃতির যে বাংলা সাংস্কৃতিতে অবদান অাছে তা স্বিকারই করতে চাননা। কেন চাননা সেটা অজানা।
বাংলা বর্ষ প্রণয়নের কারণঃ তৎকালিন সময়ে ভারতিয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিলো। রাষ্টীয় সকল কার্যক্রম অারবি সাল অনুযায়ী সম্পাদিত হতো। এর ফলে, অারবি সাল হিসাবে খাজনা পরিশোধ করা লাকতো। কিন্তু উপমহাদেশের শষ্য ক্ষেত, ফসলাদি কর নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা পরিলক্ষিত হতে থাকাই সম্রাট অাকবর বাংলা বর্ষ প্রনয়নের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।
সম্রাট অাকবরের চিন্তার ফসল হলো বাংলা নববর্ষ। বাংলা বর্ষকে প্রথমে ফসলি সাল বলাহতো। পরে বঙ্গাব্দ বা বাংলা সন বলা হয়।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেঃ যদি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা হয় তবে বলতে হয় বাংলা বর্ষ প্রণয়ন করেছে মুসলিম জাতি।
বাঙালী সাংস্কৃতিঃ যারা বাঙালী সাংস্কৃতির কথা বলেন তারা মুসলিম সাংস্কৃতির কথা এড়িয়ে যান। যারা সাংস্কৃতির কথা বলেন। নিজেদের বড় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ত্ব মনে করেন তারা শুধু হিন্দু সাংস্কৃতির বিভিন্ন দিককে বাংলা সাংস্কৃতির অংশ বলে চালিয়েদেন। মুসলিম সাংস্কৃতিকে অস্বিকার করেন। অাসলে মুসলিম সাংস্কৃতি ও বাঙালি সাংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্যো অংশ এটা অস্বিকার করলে বাঙালীর সাংস্কৃতিকেই অস্বিকার করা হবে।
মঙ্গল শোভাযাত্রাঃ অনেকেই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বাংলা নববর্ষের অংশ হিসেবে বিবেচনা করছেন, অাসলে মঙ্গল শোভাযাত্রার সাথে বাংলা নববর্ষ পালনের কোন সম্পর্ক নেই। মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রথম শুরু হয় ১৯৮৯ সালে, চারুকলা ইনিষ্টিটিউটের তত্ত্বাবধানে।
প্রত্যেক সচেতন ব্যক্তিকেই সাংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া দরকার।
বাংলা নববর্ষের মূল ইতিহাস অামাদের সামনে অারো পরিস্কার হওয়া দরকার। কারণ অামরা অনেকেই অনেক বিষয় স্পষ্ট জানিনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:১২