১২ শতাব্দীর ক্রুসেড বিজয়ী সুলতান আবু-নাসির সালাহউদ্দিন ইউসুফ ইবনে আইয়ুব (মুসলিমদের কাছে তিনি সালাউদ্দিন আইয়ুবী এবং পশ্চিমা-বিশ্বে সালাদিন নামেই পরিচিত) বলে গিয়েছিলেন, “যদি তুমি যুদ্ধ ছাড়া কোন জাতিকে ধ্বংস করে দিতে চাও, তবে ঐ জাতির পরবর্তি প্রজন্মের মাঝে মাঝে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা ছড়িয়ে দাও”। আজ এত বছর পর ঠিকই তার কথা অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমানিত হচ্ছে। আমাদের বর্তমান সমাজব্যবস্থা এবং ঘটমান বাস্তবতা দেখলেই বুঝা কতটা দ্রুতই এর অধঃপতন হচ্ছে। চেনাজানা একটা সুন্দর সমাজব্যবস্থা শুধুই নিজের ভুলের জন্য এখন চরমতম ধংশের দ্বারসীমায় পৌছে যাচ্ছে।
.
ভেবেছিলাম এই নোংরা বিষয়টা লিখবো না। কিন্তু দৈনিক পত্রিকা এবং সোশাল মিডিয়াতে এইবিষয় নিয়ে এতটা বাড়াবাড়ি করছে, কাঁদা ছুড়াছুড়ি করছে যে, শেষ পর্যন্ত এই বিষয় নিয়ে লিখতেই হলো।
(কিছু অযাযিত শব্দ এবং বাক্য ব্যবহার করার হয়েছে নির্মম বাস্তবতা বুঝানোর জন্য, সেইজন্য প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।)
.
ঘটনাঃ বিগত ৭ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকা শহরের কলাবাগানে এক মর্মান্তিক মৃত্যু সংঘটিত হয়। ধানমন্ডির মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নুর আমিন নামের ১৭ বছরের একটি মেয়ে যৌনতা সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। অভিযুক্ত ১৯ বছর বয়সী “এ” লেভেলের ছাত্র ফারদিন ইফতেখার দিহান। সবধরণের মিডিয়াতেই এসেছে প্রেমিকের বাসায় গিয়ে বিকৃত দৈহিক সম্পর্কের শিকার হয়ে আনুশকা মৃত্যুবরণ করেছে।
.
দিহান এবং আনুশকার মাঝে বিদ্যমান সর্ম্পক নিয়ে পুলিশ যা বলেছেঃ
প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান জানান, শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিনের সঙ্গে ফারদিন ইফতেখার দিহানের দুইমাস আগে থেকেই সম্পর্ক ছিল। তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানা গেছে তাদের আরও দুইমাস আগে থেকে সম্পর্ক ছিল। তবে এইবিষয়ে এখনো তদন্ত চলছে। মামলা সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে বন্ধু দিহানের মোবাইল কল পেয়ে বাসা থেকে বের হন রাজধানীর ধানমন্ডির মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিন। এরপর কিশোরীকে কলাবাগানের ডলফিন গলির নিজের বাসায় নিয়ে যান দিহান।
.
এই ঘটনার সাথে সর্ম্পকিত চিকিৎসকরা যা বলেছেনঃ
রাজধানীর কলাবাগানে নিহত শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিনের (১৭) শরীরে বিকৃত যৌনাচারের আলামত মিলেছে। বড় আকৃতির কিছু একটা ভিক্টিমের রেক্টামে পুশ করানোর ফলে তার যৌনাঙ্গ ও রেক্টাম ফেটে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় এবং সে মারা যায় বলে জানিয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনুশকার ময়নাতদন্ত হয়। সেখানকার ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, স্বাভাবিক পেনিস দ্বারা রেক্টাম ও যৌনাঙ্গ ব্যবহার করলে এতটা ভয়াবহ পরিণতি হওয়ার কথা নয়। শরীরের নিম্নাঙ্গে ‘কোন ফরেন বডি সাইজ’ কিছু একটা ব্যবহার করা হয়েছে। এক কথায় সেখানে বিকৃত যৌনাচার করা হয়েছে।
.
তিনি আরও বলেন, আমি আমার পোস্টমর্টেম জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারি, পেনিস (পুরুষাঙ্গ) দ্বারা এই ইনজুরি মোটেও সম্ভব না। ওটা পেনিসের বাইরে অন্য কিছু ছিল। যোনিপথ ও পায়ুপথ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে ভুক্তভোগীর মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা এই চিকিৎসকের। তিনি বলেন, প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় সে ‘হাইপো ভোলেমিক’ শকে মারা গেছে। মানুষের মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বা দেহ থেকে অতিরিক্ত তরল বের হয়ে গেলে হৃদপিণ্ড স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারায়। এ কারণে হৃদযন্ত্র শরীরে রক্ত সরবরাহ করতে পারে না, মানুষ মারা যেতে পারে।
.
বিকৃত যৌনাচারের তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে এই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘যোনিপথ ও পায়ুপথ দুই রাস্তা থেকেই আমরা রক্তক্ষরণের আলামত পেয়েছি। আমরা জোর জবরদস্তির কোনো আলামত পাইনি। তবে যোনিপথ ও পায়ুপথে কিছু ইনজুরি আমরা পেয়েছি। মূলত সেই ইনজুরিগুলোর জন্যই সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছে। কিন্তু বডির অন্য কোথাও জোরাজুরির কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।’
.
ইতোমধ্যেই মেডিকেল ফরেনসিক টিম ময়নাতদন্তের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে কাজ করে যাচ্ছে সিআইডিসহ আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এরইমধ্য থেকে তদন্ত সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র প্রত্যক্ষ আলামত ও চিহ্নের ভিত্তিতে ধারণা করছে যে দেশীয় আকৃতির পুরুষাঙ্গ নয়, বরং ফরেন বা বিদেশি বড় পুরুষাঙ্গ আকৃতির কিছু একটা ভিক্টিমের রেক্টামে পুশ করানো হয়েছে। যে কারণে যৌনাঙ্গ ও রেক্টাম ফেটে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়।
.
মিডিয়া ক্যামোফ্লেজ এবং সো-কল্ড মিডিয়া গরমকারীরা এখন কোথায়?
প্রশ্ন হচ্ছে দেশের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারীবাদীরা এবং সোশাল মিডিয়া কিংবা টিভি চ্যানেলের টকশো গরম করে রাখা সেসব পেইড বুদ্ধিজীবিরা এখন কোথায়? মাদ্রাসা কিংবা হুজুরদের সামান্য একটু খুঁত পেলেই যারা দলবল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পরে সারাদেশ গরম করে ফেলে, এত বড় নোংরা একটা ঘটনা ঘটার পরও এইসব ধান্দাবাজ জনগোষ্ঠী সমাজের এই নোংরা কলুসিত দিক নিয়ে কেন কোন উচ্চবাচ্য করছে না? এরা মাদ্রাসায় কোন বলৎকারের ঘটনা ঘটলে এরা সেই ঘটনাকে পুঁজি করে মাদ্রাসা থেকে শুরু করে পুরো দেশ থেকে ইসলামী ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থা তুলে দেয়ার জন্য হইচই শুরু করে দেয়। অথচ এখন এইসব তথাকথিত বুদ্ধিজীবী শ্রেণী ঘাপটি মেরে বসে আছে। অন্যসময় হলে এতক্ষণে কাপড় চোপড় খুলে সারা দেশ মাতিয়ে বেড়াত। এই বুদ্ধিজীবী শ্রেনীরাই বিভিন্ন সময় দাবি-দাওয়া তুলেছে ছেলেমেয়ে ম্যাচিউরড হওয়ার পরেই তাদেরকে ধর্ম শিক্ষা দিতে হবে, আগে দেয়ার কোন দরকার নেই। এদের কথা মতো আনুশকা এবং দিহানের ধর্মশিক্ষার বয়স হয় নাই, কিন্তু যৌনশিক্ষার জন্য ঠিকই বয়স হয়েছে। অথচ ধর্মীয় মৌলিক শিক্ষা অপ্রাপ্ত বয়সেই দিতে হয়, যেন সেটা তার অভ্যাসে পরিনত হয়। আজ যদি এই ছেলেমেয়েদের উপযুক্ত ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া হতো তাহলে এটা সুনিশ্চিত এই ঘটনা ঘটার কোন সুযোগই হতো না। কিন্তু দেশের মিডিয়া, পেইড এইসব বুদ্ধিজীবি এবং নারীবাদীরা কোনদিনও এটা স্বীকার করবে না। এবং তাই এরা এখন মুখে মস্তবড় একটা কুলপ এটেছে!
.
সর্ম্পূণ ঘটনা পড়ার পর যা বুঝা গেলঃ
এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার যে বয়ফ্রেন্ড দিহান ফাঁকা বাসা দেখে ডেকেছে এবং আনুশকা সর্ম্পূণ স্বেচ্ছায় সেখানে গিয়েছে। এই মেয়েকে কেউ জোর করে তার বাসা থেকে কিংবা রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায়নি। এই আসল সত্য সবাইকেই বুঝতে হবে, অবিবাহিতা একটা মেয়ে অন্যকোন ছেলের ফাঁকা বাসায় যেতে পারে না, সে বয়ফ্রেন্ড হোক বা যেই হোক। এখন পর্যন্ত মেয়ের দেহে চেতনানাশকের প্রমাণ কিংবা ধস্তাধস্তির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই মেয়ের সাথে ঐ ছেলের প্রেমের হোক বা যেকোন একটা সম্পর্ক ছিল। বাসায় ছেলের পরিবারের থাকবে না তখন তারা যৌনতায় অংশগ্রহণ করার উদ্দেশ্যে সম্ভবত প্ল্যান করে, কিন্তু হিতে বিপরীত হয়। অর্থাৎ রক্তপাত হওয়ায় মেয়ের মৃত্যু হয়।
.
অথচ তার যদি রক্তক্ষরণ না হতো কিংবা মৃত্যু না হতো, তবে বিষয়টি কেউ কি কিছুই জানতো? মেয়ে আর ছেলে বাসায় কিছুদিন রেস্ট নিয়ে হয়তো সুযোগ খুঁজতো কবে আবার ফাঁকা একটা বাসা পাওয়া যাবে!
.
এইসব সামাজিক অবক্ষয়, নৈতিক স্খলনের কারণেই দিন দিন দেশে মেয়েদের উপর যৌন নির্যাতনের মতো ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরস্পর সম্মতির ভিত্তিতে হয়েছে সুতরাং এটিকে ধর্ষণ বলা যাবে কি না তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। ধর্ষন হয়েছে কি, হয়নি সেটা নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। অথচ আসল প্রশ্ন হচ্ছে এই মেয়ে কোন যুক্তিতে সেখানে গিয়েছে! নিজের মাকে যেভাবে মিথ্য কথা বলে গিয়েছে তাতে সন্দেহ হয় সে আগেও এইধরণের কান্ড ঘটিয়েছে। এভাবে একটা অল্পবয়স্ক মেয়েকে যৌন নির্যাতন করা ধর্মীয় দিক থেকে, সামাজিকবোধের জায়গা থেকে, মানবিকতা থেকে, নৈতিকতার জায়গা থেকে কিংবা মানুষ হিসেবে সম্মান করা থেকে, কোনদিক থেকেই এটা গ্রহনযোগ্য হতে পারে না। প্রতিটা আশরাফুল মখলুকাতের জীবনই মূল্যবান। এত নির্মমভাবে সেটা হারিয়ে যেতে দেয়া ঠিক নয়।
.
আনুশকা’কে যাদের উপযুক্ত দেখভাল করার কথা ছিল, সেই পরিবার নিজেদের চরম ব্যর্থতার দায় মেয়ের প্রেমিকের উপর চাপাচ্ছে। এরা ভুলে গেছে জন্ম দিলেই মা বাবা হওয়া যায় না। ছেলেমেয়ে কে, কখন, কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে মিশছে, কী করছে তা অভিভাবকদেরকেই দেখতে হবে। অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়েকে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত না করলে এই ধরণের ঘটনা খুব কি অসম্ভব কিছু? দুর্ঘটনা তো আর বলে কয়ে আসে না, তাই এখন হা-হুতাস এবং একে অন্যকে দোষারোপ করে কী লাভ? আজকাল অনেক অভিভাবকরাই মেয়ের কোন ছেলের সাথে সম্পর্ক করে ফেললে খুশিই হয়, অনেক মেয়ের অভিভাবককে ছেলে ধরতে সাহায্য সহযোগিতাও করতে দেখা যায়। বড়লোক ছেলে হলে আর পায় কে, এক ঢিলে দুইপাখি মারা!
.
দুর্ঘটনাবশতঃ একজন আনুশকার আজ মৃত্যু হয়েছে। অথচ প্রতিদিন হাজার হাজার আনুশকা অবৈধ যৌনাচার, ব্যাভিচারে লিপ্ত হচ্ছে স্বেচ্ছায় এদেশেই। ছেলেমেয়েদের অবাধে মেলামেশার সুযোগ কারা আজ তৈরি করে দিচ্ছে? বাবা মা শখ করে দামি দামি মোবাইল ফোনসেট কিনে দেয় অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েদের হাতে। অথচ এইসব মোবাইল সেটই আজকের এই সামাজিক অবক্ষয়ের জন্য অনেকাংশেই দায়ী। সোশাল মিডিয়ার অংশগ্রহণের নামে চলে নোংরামী এবং অসভ্যতা।
.
দিহানেই এই নোংরা ঘটনা কি এটাই প্রথম?
দিহানের বাবা সদ্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা রেজিস্ট্রার আবদুর রউফ সরকার। তিন সন্তানের মধ্যে দিহান সবার ছোট। পরিবারের অতিরঞ্জিত আদুরে ছিলো দিহান। তার বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন মেয়েদের সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুঁদ হয়ে থাকতো মাদকে। মদ ও নারীর নেশা ছিল প্রবল। একাধিক ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছিল তার। প্রায়ই ছুটে যেতো ঢাকার অদূরে কোথাও। সঙ্গী থাকতো বান্ধবী। টয়োটা এক্সিও গাড়িটি নিজেই চালাতো। প্রতি মাসে বিপুল অঙ্কের টাকা ব্যয় করতো। মা-বাবার শাসন-বারণে তোয়াক্কা ছিল না মোটেও। যখন যা চাইতো তাই পেতো। অর্থ ও বিত্তের জোরেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে তানভীর ইফতেফার দিহান (১৮)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দিহানের বাবা আব্দুর রউফ ভূমি মন্ত্রণালয়ের এই গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করার সুবাদে বিপুল অর্থের মালিক হন। দিহানের ঘনিষ্ঠরা জানান, অল্প বয়সেই বেপরয়ো জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে যায় দিহান। আনুশকা নুর ছাড়াও পরিচয় ছিল ইংলিশ মিডিয়ামে অধ্যয়ণরত আরো অনেকের সঙ্গে। এরমধ্যে তার একজন কিশোরী বান্ধবী রয়েছে বলে জানা গেছে। ওই মেয়েটির সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে ধানমণ্ডির বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে দেখা গেছে তাকে। সূত্র মতে, পুলিশের কাছে দিহান স্বীকার করেছে একাধিক মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ছিল তার। একেক সময় একেক জনকে নিয়ে সময় কাটাতো। বান্ধবীরা তার প্রতি বেশ সন্তুষ্ট থাকতো, কারণে অকারণে বান্ধবীদের দামি দামি গিফট দিতো দিহান। ঘটনার কিছুদিন আগেও এক বান্ধবীর বার্থ ডে পার্টির আয়োজন করেছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফারদিনের বড় ভাই সুপ্ত সরকারের বিরুদ্ধেও স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর মুখে জোর করে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছিল সুপ্ত’র বিরুদ্ধে। টাকার বিনিময়ে মামলাটি আপস করেছেন সুপ্ত’র বাবা এমন অভিযোগ রয়েছে। ২০০৯ সালে সুপ্ত’র স্ত্রী রুনা খানকে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল সুপ্ত ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে নিহত রুনার মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছিলেন। তখন আসামিদের শাস্তির দাবিতে মরদেহ নিয়ে রাজশাহী শহরে মিছিল হয়েছিল।
(সূত্রঃ https://mzamin.com/article.php?mzamin=258143)
.
ব্লগের সম্মানিত পাঠদের কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম, দিহান মেয়েটার সাথে যে আচরণ করেছে তার অভ্যাস কি একদিনে গড়ে উঠেছে? এর জন্য কি শুধু দিহানই দায়ী? কিংবা এই যে আনুশকা বাবা মায়ের কাছে মিথ্যা কথা বলার সাহস পাচ্ছে, আনুশকার বাবা মা কি মেয়ের খোঁজখবর নিতো ঠিক মতো?
আজ আনুশকা এবং দিহানের এই জঘন্য পরিনতির জন্য আসলে কে দায়ী?
.
দোষ আসলে কার?
এবার দুটি পরিবারের যদি বক্তব্য দেখেন। আনুশকার মা বলেছে আমার মেয়ে গ্রুপ স্টাডি করতে গিয়েছে অথবা নোট কালেকশন করতে গিয়েছে। কার কাছে, কেন, কার সাথে, কোথায় সম্ভবত মেয়েকে তিনি জিজ্ঞাসাও করেন নাই। এখন মিডিয়ায় এসে নাকি-কান্না কাঁদছেন। আর দিহানের মা আরো চমৎকার বক্তব্য দিয়েছে। তার ছেলে একটু একান্তে সময় কাটাতে চেয়েছিল। পত্রিকার তথ্যমতে দিহান মাঝে মাঝেই এ রকম একান্তে সময় কাটাত। তার মায়ের আদরমাখা কন্ঠ শুনে মনে হচ্ছে তিনিও তার সন্তানের একান্ত সময় কাটানোর বিষয় জানতেন।
.
প্রকৃত পক্ষে এই ঘটনা সমাজের চরমতম অবক্ষয়ের জ্বলন্ত উদাহরণ, তারুণ্যের অধঃপতন, সন্তানের নৈতিক শিক্ষার অভাব, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অভিভাভকদের দায়বদ্ধতাসহ অনেকগুলো বিষয়কে একসাথে সামনে তুলে ধরেছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা প্রকৃত দোষী সাব্যস্ত করবো আসলে কাকে? আমরা কী এইসব নোংরা ঘটনার বিশ্লেষণ করে দেখেছি? প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ কারণগুলি ভেবে দেখেছি?
.
(১) দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ডিজিটাল হচ্ছে এবং এর সাথে সাথেই অপসংস্কৃতি আমাদের নতুন প্রজন্ম’কে গ্রাস করছে।
আজকাল কিশোর-কিশোরী বা তরুণ তরুণীরা পশ্চিমা সংস্কৃতির অনুকরণে, অবাধ মেলামেশার বা তারুণ্যের উদ্দিপনার নামে এইসব সম্পর্কের প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য চর্চাকে অভিভাবকদের মৌন সম্মতি নিয়ে ডাল-ভাত করে ফেলেছে। অভিভাবকদের কথা, আমরা কালচার্ড হচ্ছি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলছি।
এইসব ছেলেমেয়েদের আচার আচরণ দেখলে মনে হয়, ইংলিশ মিডিয়ামের পড়ছি তাই ব্রিটিশ কালচার রপ্ত করছি, এইসব অবাধ যৌনাচার কোন ব্যাপারই! থার্টি ফার্স্ট ডিসেম্বরে ঢাকার হোটেলগুলিতে কিসব হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখুন। পুলিশ কর্মকর্তার সন্তান ঐশীর ঘটনা মনে হয় ইতিমধ্যেই ভুলে গেছে সবাই। এই ধরণের গর্হিত দুর্ঘটনার প্রথম দায় অবশ্যই অভিভাবকদের উপরই যায়।
.
(২) বেশিরভাগ ঘটনাই দেখা যায় বাবা মায়ের বৈধ আয়ের উৎস নেই। পাপের পথে উপার্জিত টাকার মাসুল এরা এভাবে দিয়ে যাচ্ছে, কারণ পাপ বাপকেও ছাড়ে না। তরুন প্রজন্মের বিরাট একটা অংশ মানুষের পরিবর্তে অসভ্য জানোয়ারের মতো বেড়ে উঠছে। টাকার প্রতি বিকারগ্রস্হ বাবা মায়ের অবৈধ টাকায় যেন কুলাঙ্গার হয়ে উঠছে। আর এদের সার্টিফাই করার জন্য রয়েছে সমাজের কিছু দুনম্বর লোক এবং অবৈধ টাকার পাহারাদার রাজনীতিবিদরা। এইসব পাপচার কাজ বন্ধ করার আগে দেশে অবৈধ পথে টাকা উপার্জন বন্ধ করতে হবে।
.
(৩) শুধু সন্তান জন্ম দিয়ে ভরনপোষণ করলেই বাবা মা হওয়া যায় না। তাকে সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত করার দায়িত্বও পিতা মাতার উপর বর্তায়। ছেলেমেয়েরা কোথায় যায়, কি করে বেড়ায়, সেই খোঁজখবর যদি রাখতে না পারেন, তাহলে তাদের জন্ম দিয়েছেন কেন? এই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাটি আজ প্রচার হয়েছে দেখা সবাই জানছে, অথচ অগোচরে, লোক চক্ষুর আড়ালে নির্জন বাসা-বাড়ীতে এভাবে কত ঘটনাই ঘটে চলছে। এইসব সন্তানদের ভালোমতো খোঁজখবর না নেয়ার জন্য এদের বাবা-মাদেরকেও শাস্তির আওতায় নতুন আইন বানিয়ে নিয়ে আসা দরকার।
.
(৪) ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করা প্রতিটা শিশুদের বাধ্যতামূলক করতে হবে। ধর্মীয় শিক্ষাই পারে অপ্রাপ্তবয়স্কদের সঠিক পথে চলতে ও বিকৃত যৌন আচরনের এই বিপদগামী কালচার থেকে দূরে রাখতে। নৈতিক অবক্ষয় আর চরিত্রহীন নিন্দনীয় কাজগুলির মাঝে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজটি হচ্ছে ব্যভিচার। শুধু ইসলাম নয়, কোনো ধর্মেই ব্যভিচারের শিক্ষা দেয় না। ইসলামে ব্যভিচারকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ এবং হারাম আখ্যায়িত করা হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয়ই এটা প্রকাশ্য অশ্লীলতা এবং অত্যন্ত মন্দ পথ’ (সুরা বনী ইসরাইল, আয়াতঃ ৩২)। আর বাইবেলে বলা হয়েছে, ‘তোমরা ব্যভিচার করবে না।’ দেশের সব স্কুল-কলেজগুলিতে জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আরো বেশি বেশি ধর্মীয় এবং নৈতিকতা পড়াতে বাধ্য-বাধকতা থাকা উচিৎ। আজ সেটার অনুপস্থিতির জন্য পুরোপুরি রাষ্ট্র এবং সরকার দায়ী।
.
(৫) কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীরা প্রচুর অনুকরণ ও অনুসরণ প্রিয় হয়ে থাকে। বর্তমানে দেশের সাহিত্য, মিডিয়া এবং চ্যানেলগুলিতে গল্প, উপন্যাস, নাটক, সিনেমার নামে যা যা দেখায় সেইগুলিও অল্পবয়স্কদের এই নোংরা পথে যাবার জন্য উৎসাহ দেয়। বিএফ বা জিএফ না থাকলে, এদের নিয়ে ফুর্তি করে না বেড়ালে জীবনটাই বৃথা - এইসব মেসেজ ছেলেমেয়েরা কোথা থেকে পায় ভেবে দেখুন? তথাকথিত অনেক লেখক/লেখিকাবৃন্দ যারা দেশে নিজেদের বুদ্ধিজীবী বলে দাবী করে, এরাও ছেলেয়েদেরকে বিকৃত যৌনতা ও অবাধ মেলামেশায় যাবার জন্য উস্কে দিচ্ছে। অনেকক্ষেত্রেই এই কিশোর-কিশোরীরা সেই কাহিনীগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে। এদের থামানোর দায় দায়িত্ব কার? রাষ্ট্র এবং সরকার কেন এইসব অসামাজিক জিনিস প্রচার করতে বাঁধা দিচ্ছে না?
.
(৬) যৌন স্বেচ্ছাচারিতার অধিকার মানেই নারীবাদ না। নারীবাদ হলো পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসাথে চলা। পুরুষ এবং নারীর সম-অধিকারের ধারণা থেকে নারীবাদ এর উৎপত্তি। নারীবাদ নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলে কিন্তু নারী স্বাধীনতার নামে উশৃংখলতাকে বুঝায় না। দেশের নারীবাদী নামের যেসব কুলাঙ্গাররা নারীদের স্বাধীনতার নামে অপব্যাখ্যা দিয়ে বেড়ায়, এরাও এসব যৌন নির্যাতন এবং ধর্ষণের উৎসাহদাতা। "লেজ কাটা শিয়াল সারাজীবন চেষ্টা করে বাদবাকি শিয়ালদের লম্বালেজ কেটে দেয়ার জন্য"। এরাই নারীদের স্বাধীনতার নামে তাকে অবাধে উশৃংখলতার সুযোগ করে দিয়ে ধর্ষিতা বানায় কিংবা বহুভোগ্যা পতিতা বানায়। এইসব বহুভোগ্যা পতিতাদের শেষমেষ আত্মহত্যার খবর প্রতিনিয়তই পত্রিকাগুলিতে ছাপা হয়। এইসব লোকজনদের চিহ্নিত করে সামাজিকভাবে বয়কট করার সময় চলে এসেছে।
.
(৭) দেশে এখন বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে। বিত্তবান বা প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া থেকে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকে বিভিন্ন তালবাহনা। অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে বিচারব্যবস্থা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারলেও সর্বশেষে বিচারের নামে কালক্ষেপণের প্রহসন। আইন শৃংখলা বাহিনীর টাকা পয়সা নিয়ে তেলেশমাতি কান্ড ঘটানো অনেক নজীর আছে। এই অপতৎপরতাগুলিও আগে বন্ধ করতে হবে।
.
(৮) ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার করণে বিকৃত যৌনাচারে আকৃষ্ট হয়ে এক বিপদসংকুল পথে হাঁটছে তরুণ প্রজন্ম। সুখের এক ভয়ঙ্কর অসুখে আক্রান্ত আজ তারা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিকৃত যৌনচারের আকৃষ্ট হচ্ছে পর্ণগ্রাফি থেকে। স্বাভাবিক যৌন উপভোগ থেকে মানুষ যখন হারিয়ে যায়, তখনই বিক্রিত যৌন উপভোগে উপনীত হয়। বিকৃত যৌনাচারের বিভিন্ন ‘ফরেন বডি’ সহ নানা উপাদানে সয়লাব দেশের বাজার। সোশাল মিডিয়া খুললেই এইসব বেচা বিক্রি হিড়িক দেখা যায়। একটি কল করেই যেকেউ অনলাইনে বিভিন্ন নামি-বেনামি প্রতিষ্ঠান থেকে ঘরে বসেই মারাত্মক ক্ষতিকর এসব পণ্য হাতে পেয়ে যাচ্ছেন। এসব পণ্যের ভেতর রয়েছে যৌন উত্তেজক ভায়াগ্রা ট্যাবলেটও। এই ট্যাবলেট কিনতে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র বাধ্যতামূলক হলেও অনলাইনে অর্ডার দিয়ে কিনতে পারা যায়। পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, ঢাকার অভিজাত শ্রেণির অনেকেই যৌন খেলনা ও যৌন উদ্দীপক বড়ি ক্রয় করেন। আনুশকার মৃত্যুর ঘটনাতেও এসব পণ্য ব্যবহারের আলামত পাওয়া গেছে। মাদকের ভয়াল ছোবলের মতোই বিকৃত যৌনরুচির এসব উপাদান বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। প্রশ্নের মুখে পড়েছে সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ। অথচ এইসব নিয়ন্ত্রণ যাদের করার কথা তারা যেন নাকে তেল দিয়ে মোষের মতো করে ঘুমাচ্ছেন।
.
পরিশেষঃ
দেশের এইসব অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে একটা কথা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই।
পত্রিকাগুলিতে ধর্ষক না খুঁজে আগে নিজের বাসায় খুঁজুন, মেয়েদের উপর যৌন নির্যাতক তৈরির কারখানা তো এইসব বাসায়। পরিবারের ভেতরই এদের সযত্নে লালন পালন করা হয়। অপকর্ম করার পর এদের জন্য সাফাইও গাওয়া হয়, টাকা পয়সা দিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করার চেষ্টাও করা হয়।
.
আমরা যখন ছোট থেকে বড় হয়েছি তখন আমাদের পারিপাশ্বিক সমাজব্যবস্থা কতই না সুন্দর এবং নির্মল ছিল! ছোট ছোট শিশুরা মসজিদে/স্কুলে/বাসায় হুজুরদের কাছে/শিক্ষকদের কাছে/অভিভাবকদের কাছে ধর্মীয় মূল্যবোধ, আদব-কায়দার, আচার আচরণ, ভদ্রতার শিক্ষা, সচেতনতা এবং জীবনের মূল্যবোধ শিখেই বড় হতো। আর এখন শিশুরা তো এইসব শিক্ষা পাওয়া তো দূরের কথা, দায়িত্বহীন অভিভাবকরা খোজখবরও নেয় না। ধর্মীয় শিক্ষা তো উঠিয়েই দেয়া হয়েছে আধুনিকতার নামে। শিক্ষক সমাজ আজ শিশু গড়ার কারিগরের পরিবর্তে ব্যবসায়ী সমাজে পরিনত হয়েছে।
.
টাকাপয়সার মাত্রাতিরিক্ত লোভে পরে সন্তান লালনপালনের চেয়ে ঘরের বাইরে থাকাটাই অভিভাবকদের মূখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। বাচ্চাদের সুস্থ বিনোদনের অভাব, বাবা-মায়ের অতিরিক্ত ব্যস্ততা, সন্তানদের সময় না দেয়া/উদাসীনতা খুব সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
.
বেশ কিছুদিন আগে দেশের মানুষের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে লিখেছিলাম নষ্ট সমাজ ব্যবস্থাঃ নৈতিকতার অবক্ষয় এবং কারণ অনুসন্ধান এবং দেশের আগামী প্রজন্মদের নিয়ে আগেও একটা পোস্ট দিয়েছিলাম নষ্ট সমাজ ব্যবস্থাঃ পোটেনশিয়াল রেপিস্টে সারা দেশ ভরে গেছে এখন! ।
তাই এখন এই পোস্ট লিখতে বসে খুব একটা অবাক হইনি। সর্বত্রই আজ অনৈতিকতার ছড়াছড়ি, মানবিক মূল্যবোধের নিদারূণ অবনতি। এর ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বেড়ে উঠছে মানবীয় বৈশিষ্ট্যহীন আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর, অসহিষ্ণু, নৈতিকতা বিরোধী এক একটা যন্ত্রমানব হিসেবে। দুঃখজনক হলেও সমাজে এখন মানুষের চাইতে অমানুষের সংখ্যাই বেশি!
.
দেশের আলোচিত খবরে এখন ঐশীরা আসে, পাপিয়া আসে, সাবরিনা এসেছে, আনুশকারা আসে। এভাবে এটা চক্রাকারে চলতে থাকবে যতদিন পর্যন্ত সমাজটা পুরোপুরি নষ্ট না হয়ে যাবে। সবাই নাকে তেল দিয়ে সেইদিনের জন্য অপেক্ষা করছে। এইসব ঘটনার প্রেক্ষাপট উদঘাটন না করে দিনে পর দিন সারাদেশে মানুষ এইসব ঘটনা দেখে মনে মনে সুখ পাচ্ছে। যারা এইসব ফ্রী-কালচার সার্পোট করেন তারা হচ্ছে পার্ভার্ট, সেক্স মানিয়্যাক। এদের জন্যই দেশে এখন ছোট ছোট মেয়েরাও ধর্ষিত হয়, আরো হবে, দিনের পর দিন ধরে হবে।
কারণ আনুশকা এবং দিহান আর কিছুই না, একটা নষ্ট পঁচা গলা সমাজ ব্যবস্থার বাস্তব নির্লজ্জ আস্ফালন।
.
কবি ফররুখ আহমেদ বলেছিলেন, “রাত পোহাবার কত দেরী, পাঞ্জেরী?”
কবি বেঁচে থাকলে এখন বলতাম, “রাত আর পোহাবে না পাঞ্জেরী, যদি আমরা নিজেরাই না জাগি!”
এই দেশে কোনদিনও হ্যামিলনের বাঁশীওয়ালার মতো কেউ আসবে না, যতদিন পর্যন্ত আমরা নিজেরা ভালো না হচ্ছি।
.
জনস্বার্থে প্রচারিত। লেখার সূত্রঃ বিভিন্ন প্রকাশিত সংবাদ এবং পত্রপত্রিকা
.
সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, জানুয়ারী ২০২১
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:২৮