গত ছয় মাসে ধরে আমার মনটা সবসময়ই খারাপ থাকে। একটা মেয়ে কতটুকু সহ্য করতে পারে আমি জানিনা তবে আমি সম্ভবত আমার সহ্যের একদম শেষ সীমানায় চলে গিয়েছিলাম। নিজের চোখের সামনে নিজের বিএফ কে নিজের সবচেয়ে কাছের বান্ধবীর সাথে এ্যাফিয়ার করতে দেখলে কোন মেয়ের পক্ষে সেটা সহ্য করা সম্ভব? যখন বদমায়েস এক্স বিএফটা আবার ফোন দিয়ে বলে, সে কত ভালো জিএফ পেয়েছে, কত মজা ওরা ডেটিং এ যেয়ে করে! মাঝে মাঝে আবার ফোন করে জিজ্ঞেস করতো আমি কেমন আছি? দিন কাল কেমন যাচ্ছে? দাঁতে দাঁত চেপে সব সহ্য করতাম শুধু ওর কন্ঠটা শোনার জন্য! ও যখন এসব বলতো আমার চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়তো। কিন্তু কখনো এক্স বিএফ বা বান্ধবী কাউকে বুঝতে দিতাম না। সব কষ্ট মনের মধ্যে পাথর চাপা দিতাম!
সেদিন বেইমান বান্ধবী হঠাৎ ফোন দিয়ে যখন বলল ওর বিয়ে, শুনেই সাথে সাথে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছিল। আরেকটু হলে কান্নাকাটি শুরুই করে দিয়েছিলাম, থেমে গেলাম যখন শুনলাম বর নাকি কানাডিয়ান ইমিগ্রান্ট ইঞ্জিনিয়ার। বু্য়েট পাস। অনেকদিন পর মনটা খুশিতে লাফ দিয়ে উঠল। বান্ধবী আমাকে আর ওর সদ্য এক্স বিএফ দুইজনকেই বিয়েতে দাওয়াত দিয়েছে। বিয়েতে আসবো কিনা জানতে চাইলো?
যাব না মানে? কি বলল এটা আমাকে? আমিই তো প্রথম যাবো। খুশিতে আমার সবগুলি দাঁত স্কেলিং করলে যা রকম চকচক করে, সেই রকম করছে। আহ, অবশেষে আল্লাহ আমার দিকে তাকিয়েছে! দুই সপ্তাহ আগে এক্স বিএফ ফোন দিয়ে বলেছে, আমার বান্ধবীকে বিয়ে করে আমাকে নাকি দেখিয়ে দিবে জীবনে কিভাবে সুখী হতে হয়! সুখ, শালা? এবার বুঝবি সুখ কাকে বলে?
আজকে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে এক্স এর গফ কে আমি নিজের হাতে মনের মতো করে সাজিয়ে, একসাথে নাচ-গান করে সেই ভিডিও নিজ দায়িত্বে এক্স কে পাঠিয়ে দিয়েছি। তারপর ফোন করে আবার কনফার্ম করেছি, সেটা পেয়েছি কিনা!
শালা, এইবার বুঝ, ছাইড়া গেলে কেমন লাগে?
পরশু দিন বিয়ে। তিন মাস টিউশনি করে যে টাকাটা জমিয়ে ছিলাম, সেটা দিয়ে প্রফেশনাল ক্যামেরা ম্যান ভাড়া করেছি ছবি তোলা আর ভিডিও করার জন্য। বাসর ঘরের ছবি তোলার সময় আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সব লোকেশন আর পজিশন দিব। ঠিক করেছি এবারের ছবি আর ভিডিওর ডিভিডি টা নিজের হাতেই এক্স কে দিয়ে আসবো।
বুঝবি এবার, একেই বলে বাঁশডলা!
সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, সেপ্টেম্বর, ২০১৮
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১৫