গতপর্বে Click This Link WiMax নিয়ে অনেক কথা লিখেছিলাম। বস্তুত বাংলাদেশের বাস্তবতায় WiMax প্রযুক্তির দুর্বলতা গুলো তুলেধরার চেষ্টা করেছিলাম । এই পর্বে কিছু আশার কথাও থাকবে।
শুধু বাংলাদেশেই ন্য় বিশ্বব্যপী WiMax এর বড়কনো সফল্য এখনো চোখে পড়েনি। এর একধিক কারনের মধ্যে রয়েছে বয়সে এই প্রযুক্তি অপেক্ষাকৃত নবীন, স্ট্যান্ডার্ডের ভিন্নতা (ওয়াইম্যাক্স ফোরাম থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে তারা সব নির্মানকারি প্রতিষ্ঠানকে এককাতারে আনতে ব্যার্থ হচ্ছে), ৩জি এবং তার পরবর্তি সংষ্করণের সাথে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে না পারা।
তাছাড়া প্রযুক্তি বাজারে যেসকল জায়ান্ট ভেন্ডর যেমন Ericsson, NSN, Alcatle Lucent ইত্যাদি আছে তারও চায়না যে WiMax ভাল করুক। কারন 3G এর পিছনে তারা অনেক বেশি ইনভেস্ট করেছে এবং করে চলেছে। ক্ষেত্রেবিশেষ যদিও তারা WiMax এর যন্ত্রাংশ সরবরাহ করেথাকে কিন্তু সেটা তৃতীয়পক্ষের কাছথেকে সংগৃহিত। তারা নিজেরা WiMax এর আর এন্ড ডি এর পিছনে কনো অর্থ বিনিয়গ করেনা। WiMax কে বলা হত কিলার অফ জি এস এম। যে ধারনার উপরে ভিত্তিকরে এতা বলাহত সেটা অনেক্তা এরকম। ধরে নেই কনোএক ভৌগলিক এলাকয় একটা আদর্শ ওয়িমাক্স এর নেটওয়ার্ক আছে এবং সবার ল্যাপটপে WiMax একসেস কার্ড আছে। তাহলে সবাই ভ্রমণরত অবস্থায়ও ইন্টারনেট ব্যাবহার করতে পারবে। আবার ধরাযাক সবার হ্যান্ডসেটও WiMax এনাবেল এবং IP V6 এর মাধ্যমে সবার হ্যান্ডসেতেই একটা করে IP আড্রেস দেওয়া হল। তাহলে VoIP এর মাধ্যমে আপনি কথাও বলতে পারবেন। তাহলে দাড়াল একই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আপনি কথা বলা এবং ইন্টারনেট দুটোই সেরে ফেলছেন। যেহেতু WiMax এর নেটওয়ার্ক ধরন জ়ি এস এমের তুলনায় অনেক সরল তাই WiMax নিয়ে বড় বড় ভেন্ডরদের মাথাব্যাথা ছিল। কিন্তু এর হাঁকডাকে তাদের ব্যাবসা লাটেওঠার কে সম্ভবনা দেখা দিয়েছিল তা আপাতত HSPA এর আগমন এবং LTE এর আগমনী বার্তার কাছে মৃয়মান মনে হচ্ছে। (প্রথম পর্বে দ্রষ্টব্য)
বাংলাদেশে ইন্টারনেটের ইউসারের সংখ্যা মোটামুটি ৫ মিলিয়ন। তারমধ্যে মাত্র ১ মিলিয়ন হল আই এস পি এবং বাকি ৪ মিলিয়ন মোবাইল কোম্পানীর ইউজার। প্রায় একযুগ ধরে একশরও বেশি আই এস পি যে পরিমানে ইউসার তৈরী করেছে মাত্র দুই বছরেই কয়েকটা মোবাইল কোম্পানী মিলে তার চারগুন করে ফেলেছে। এখান থেকে যে জিনিষটা বেশ ভালভাবে বোঝাযায় তা হল মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করাটাকে আমাদের দেশের লোকজন বেশ ভালভাবেই নিয়েছে, যদিও বেশির ভাগের ইন্টারনেট ব্যবহার হল খুবই সীমিত পরিসরে তবুও এটা আশার কথা যে আমাদের দেশে ইন্টারনেট ইউসারের সংখ্যা বাড়ছে।
3.5G/HSDPA হল High-Speed Downlink Packet Access এর সংক্ষিপ্তরুপ। ত্বাত্তিকভাবে এর ডাটা আদান প্রদান করার ক্ষমতা হল 8-10 Mbps। এখন প্রায়সব 3G অপারেটরই কমপক্ষে 3.2 Mbps স্পীডের কানেকশন দিচ্ছে ভবিষ্যতে যা আর বাড়বে। আশকরা যায় বাংলাদেশে এবছরের মধ্যেই কমপক্ষে ২ থেকে তিনটা অপারেটর ৩ জি তে তাদের অপারেশান শুরু করবে।
চলুন দেখাযাক কিভাবে 3G, WiMax থেকে এগিয়ে আছে। ধরাযাক গ্রামীনফোন 3G এর লাইসেন্স পেয়েছে। তাহলে তাদের কি করতে হবে 3G সেবা প্রদানের জন্যে? মজার ব্যাপার হচ্ছে তাদের যা যা করতে হবে তার বেশীরভাগ কাজই ইতিমধ্যে তারা করে ফেলেছে। সারা দেশে অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধাতো আছেই সাথেসাথে অনেক কারিগরি দক্ষতাও তাদের বাড়াতে হয়েছে সময়ের প্রয়োজনে ।যার সুফল তারা পাবে যখন 3G তে তারা অপারেট করবে। মোটাদাগে তাদের যা করতে হবে তা হল, যেখানে যেখানে 3G কভারেজ দিতে চায় সেখানে সেখানে তাদের বর্তমান বেসস্টেশন এ কিছু অতিরিক্ত যত্রাংশ স্থাপন। ব্যাপারটা যদিও এতটা সরল এবং সহজনা কিন্তু একটা সম্পুর্ন নতুন নেটওয়ার্ক স্থাপনের চেয়ে অনেক বেশি সোজা।
আবার ইউসার এর দিক থেকে চিন্তা করলেও বাপারটা WiMax থেকে অনেক বেশি সহজ। বাংলাদেশের অনেকেই 3G কভারেজ না থাকা সত্ত্বেও 3G এনাবেল হ্যান্ডসেট ব্যবহার করছেন । তাদেরত আর কিছুই করতে হবেনা। আর যাদের 3G এনাবেল হ্যান্ডসেট নেই তাদেরকে শুধু একটা ভালমানের সেট কিনলেই চলবে। শুধুমাত্র ইন্টারনেট ব্যাবহার করার জন্য একটা CPE কেনার চেয়ে ভাল একটা হ্যান্ডসেট কেনাটাকেই আমার মনে হয় সবাই পছন্দ করবেন। আমি অনেককে দেখেছি যাদের আগে ব্রডব্যান্ডের কানেকশন ছিল, এখন EDGE modem ব্যবহার করছেন। আমি নিজেও দেশেগেলে তাই করি। ঝামেলাহীন প্লাগ এন্ড প্লে টাইপ সলুশন কে না চায় বলেন?
WiMax এর জন্য কিছু আশার কথাঃ
তবে ওয়িমাক্স যেটা করতেপারবে বলে আমি বিশ্বাস করি সেটাহল, এখন যেসব আই এস পি আছে তাদের বাঁরটা বাজাতে পারে। ব্যাক্তি পর্যায়ে জনপ্রিয় না হলেও এটা প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে একটা ভাল সলুশ্যান হবে বলে মনেহয়। কারন আমাদের দেশে তারযুক্ত সংযোগের মান অনেক খারাপ এবং এর নির্ভরযোগ্যোতা নিয়েও সংশয় থাকে। আবার আই এস পি গুলো যে সব ওয়ারলেস সংযোগ দিয়ে থাকে সেখানে তারা ফ্রীব্যান্ড ব্যবহার করে বলে অনেক বেশি ইন্টারফেয়ারেন্স থাকে এইসব লিংকে। কখনও কখনও দেখাযায় দিনের অধিকাংশ সময়ে এইসব সংযোগ ডাউন থাকে। WiMax যেহেতু লাইসেন্সড ফ্রিকুয়েন্সিতে অপারেট করবে তাই তার এইসব ঝামেলা হবেনা।এবং নির্ভরযোগ্যতাও ভালহবে এই লাইনের। অনেকের কাছেই সংযোগের মুল্যের নির্ভরযোগ্যতাই বেশি গুরুত্ত্বপুর্ণ। WiMax তাদের জন্য সুখবরই বটে।
সরকারের করনীয়ঃ
যেহেতু WiMax লাইসেন্স দিয়ে সরকার প্রচুর পরিমানে টাকা রোজগার করেছে এবং কম্পনী গুলোও ব্যাপক বিনিয়গ করছে (ঢাকা এবং চট্টগ্রামে WiMax নেটওয়ার্ক স্থাপনের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে) তাই একে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্বও সরকারের। আমি মনেকরি দেশের প্রতন্ত্য অঞলে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দিতে হলে 3G চেয়ে WiMax বেশি কার্যকর। কিন্তু তার জন্য সরকারকে ৪৫০ মেগাহার্যের বা ৭০০ মেগাহার্য এই লেভেলে কোনএকটা ব্যান্ডে অপারেট করার ব্যবস্থা করেদিতে হবে। তাহলে অল্প পরিমানে বেসস্টেশন দিয়ে তারা অনেক বেশি পরিমানে এলাকা কভার করতে পারবে। অথবা অন্যভাবে, এলাকা ভিত্তিক বা ক্যাটাগরি ভিত্তিক কিছু করাযেতে পারে। যেমন এক এলাকায় কন এলাকায় WiMax এর কভারেজ থাকলে ৩ জি দেয়া যাবেনা(মনে হয়না এটা করা যাবে) অথবা ব্যাক্তি সংযোগ ছাড়া সবধরণের ইন্টারনেট সংযোগই WiMax এর মাধ্যমে হবে ইত্যাদি।
পরিশেষে আমি আশাকরব অচীরেই আমাদের দেশের সাধারন জনগন আলোচ্য প্রযুক্তিগুলো থেকে উপকৃত হবেন এবং কোম্পানীগুলোও তাদের সৎ স্বার্থ বজায় রেখে ব্যাবসা করবেন।
------------সমাপ্ত------------