মেঘের বাড়ি
স্থানঃ সাজেক ভ্যালি, বাঘাইছড়ি, রাঙামাটি।
কংলাক পাহাড় সাজেক ভ্যালির সর্বোচ্চ চূড়া। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে এর উচ্চতা প্রায় ১৮০০ ফুট। সাজেক রুইলুইপাড়া এবং কংলাক পাড়া এই দুটি পাড়ার সমন্বয়ে গঠিত । ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত রুইলুই পাড়ার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৭২০ ফুট । চারদিকে পাহাড়, সবুজ আর মেঘের অকৃত্রিম মিতালী চোখে পড়ে। সাজেক ভ্রমণরত পর্যটকদের কাছে এটি এখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সাজেকে মূলত লুসাই, পাংখোয়া এবং ত্রিপুরা আদিবাসী বসবাস করে ।
আকাশ ছোঁয়ার প্রতিযোগিতা
স্থানঃ কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, পটুয়াখালী ।
বাংলাদেশের দক্ষিণ প্রান্তে সাগরকন্যা খ্যাত অপরূপ এক জায়গা কুয়াকাটা। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপালী ইউনিয়নে অবস্থিত এ জায়গায় আছে বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকত। একই সৈকত থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখার মতো জায়গা দ্বিতীয়টি আর এদেশে নেই। সৈকতের পূর্ব প্রান্তে গঙ্গামতির বাঁক থেকে সূর্যোদয় সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা যায়। আর সূর্যাস্ত দেখার উত্তম জায়গা হল কুয়াকাটার পশ্চিম সৈকত। কুয়াকাটার সৈকত প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। সৈকত লাগোয়া পুরো জায়গাতেই আছে দীর্ঘ নারিকেল গাছের সারি। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে এ বনেও। বিভিন্ন সময়ে সমুদ্রের জোয়ারের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় ভাঙনের কবলে পড়েছে সুন্দর এই নারিকেল বাগান।
সবুজে প্রশান্তি
স্থানঃ সীমা বৌদ্ধ মন্দির, কুয়াকাটা, পটুয়াখালী ।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আহমেদ হেলাল জানান, গাছ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নিয়ে অক্সিজেন ছাড়ে৷ এ জন্য প্রকৃতির সবুজের সান্নিধ্য আমাদের ভালো রাখে৷ তবে শুধু প্রকৃতির সবুজ গাছপালাই নয়, এমন অনেক রং আছে, যা মনে প্রশান্তি এনে দেয়৷ এই রংগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সাদা, হালকা নীল ও গোলাপি৷ এই ‘কুল’ কালারগুলো চোখের অপটিক নার্ভের মধ্য দিয়ে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে পৌঁছে ইতিবাচক উদ্দীপনার সৃষ্টি করে, যা মনকে প্রশান্ত করতে সহায়তা করে৷ এ জন্য দেখা যায়, অন্দরসজ্জাবিদেরা ঘরের ভেতরে এসব রং ব্যবহারের পরামর্শ দেন৷
বিশেষজ্ঞদের মতে, সবুজ রং চোখের জন্য উপকারী, নীল রং চোখের পক্ষে আরামদায়ক। আর লাল রং চোখের জন্য ক্ষতিকর। মানুষের চোখের কোষ প্রধানত তিন রকম রঙের হয়, লাল, সবুজ ও নীল। চোখের এই রঙিন কোষের সংখ্যা প্রায় ৬০-৭০ লক্ষ যার মধ্যে ৪৫ শতাংশই সবুজ রঙের। তাই সবুজ রং মানুষের চোখের পক্ষে আরামদায়ক। লাল রঙের কোষের সংখ্যা সবচেয়ে কম থাকায় এই রং একটানা চোখের সামনে থাকলে অপটিক্যাল ইলিউশন বা দৃষ্টি ভ্রমের মতো সমস্যা তৈরি হয়।
আকাশ-পাহাড় আর মেঘের মিতালী
স্থানঃ আলুটিলা, খাগড়াছড়ি।
বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় মূল শহর হতে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে সমুদ্র সমতল হতে ৩০০০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট আলুটিলা বা আরবারী পাহাড় অবস্থিত যা সবার কাছে আলুটিলা গুহা নামে পরিচিত । স্থানীয়রা একে বলে মাতাই হাকড় বা দেবতার গুহা। এটি খাগড়াছড়ির একটি নামকরা পর্যটন কেন্দ্র। আলুটিলা খাগড়াছড়ি জেলার সবচেয়ে উঁচু পর্বত। এখান হতে খাগড়াছড়ি শহরের বেশ কিছুটা অংশ দেখা যায়। শুধু তাই নয় পাহাড়ের সবুজ প্রান্তর আপনার চোখ কেড়ে নেবে, আকাশ, পাহাড় আর মেঘে মিতালীতে তৈরি হয় এক ভিন্নরকম মায়াবী আবহ ।
আকাশের ক্যানভাস তরুর কারুকাজ
স্থানঃ শালবন, কুমিল্লা।
হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ মাছ ধরার টোপ
স্থানঃ জয়দেবপুর, গাজীপুর।
পাললিক শিলা (বেলে পাথর )
স্থানঃ নাপিত্তাছড়া ঝর্না , সীতাকুন্ড, চট্টগ্রাম।
আগ্নেয় শিলা বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয় প্রাপ্ত হয়ে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম শিলা খন্ডে পরিণত হয়, পরবর্তী সময়ে সেগুলি নদী বায়ু হিমবাহ প্রভৃতি মাধ্যমের দ্বারা বাহিত কোন নিচু অঞ্চলে সঞ্চিত হলে যে শিলার সৃষ্টি করে, তাকে পাললিক শিলা বলে। যেমন - বেলে পাথর, কাদা পাথর, চুনা পাথর প্রভৃতি।
অগ্নিগর্ভ আকাশ
স্থানঃ অফিসের ছাদ, সি.ই.পি জেড, চট্টগ্রাম।
আকাশের রঙের পার্থক্য হয় বিভিন্ন আলোর বিচ্ছুরণের পার্থক্য জনিত কারণে। ভোর বা সন্ধ্যার সময়ে সূর্য দিগন্তরেখার খুব কাছে অবস্থান করে তাই সূর্য রশ্মি আমাদের চোখে তির্যক ভাবে এসে পড়ে ফলে সূর্য রশ্মিকে দিনের বেলার থেকে (যখন সূর্য উপরের দিকে থাকে )অনেক বেশি পথ অতিক্রম করতে হয়। ফলে বেগুনী ও নীল আলো বেশি বিচ্ছুরিত হয়ে গিয়ে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বড় হওয়ার কারণে হলুদ, লাল রঙের আলো পৃথিবী অব্দি পৌঁছাতে পারে। তাই সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের সময় আকাশ কমলা বা লাল দেখায়।
অস্তমিত সূর্যের রক্তিম আবহ
স্থানঃ বাঁশবাড়ীয়া সমুদ্র সৈকত, সীতাকুণ্ড , চট্টগ্রাম।
֎ তবে মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, সূর্যোদয়ের থেকে সূর্যাস্তের আকাশ বেশি লাল রঙ ধারণ করে কেন?
বিকেলের বাতাসে ধূলিকণা ও অন্যান্য উপদানের পরিমাণ থাকে বেশি এবং সকালের বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ থাকে অপেক্ষাকৃত কম। আসলে রাত গভীর হলে পরিবেশ আস্তে আস্তে শীতল হয় আর এই শীতল পরিবেশে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা ও অন্যান্য উপাদান থিতিয়ে নিচে নামতে থাকে। ফলে সকালের পরিবেশ হয় নির্মল ও পরিচ্ছন্ন। এই নির্মল বাতাসে সূর্য রশ্মির বিচ্ছুরণ অপেক্ষাকৃত কম ঘটে বলে সকালের লাল রং কিছুটা হালকা দেখায়। অন্যদিকে, সূর্যোদয়ের পর বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের প্রখর আলো ও মানুষের কর্মচাঞ্চল্যের কারণে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য উপাদানও চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে সূর্যাস্তের সময় সূর্য রশ্মি বায়ুমন্ডলে বেশি বিচ্ছুরিত হয়। ফলে লাল আলো বেশি পরিমাণে আমাদের চোখ অব্দি পৌঁছাতে পারে তাই পশ্চিম আকাশকে সকালের পূর্ব আকাশের চেয়ে বেশি লাল লাগে।
ঝরা পাতার গল্প
স্থানঃ শালবন, কুমিল্লা ।
সাদা সোনা (চিনা মাটির পাহাড়)
স্থানঃ বিজয়পুর, নেত্রকোনা।
বিজয়পুর অনেক উঁচু টারশিয়ারি সাদা মাটির পাহাড়ে সমৃদ্ধ। তবে এই মাটি আবার ‘চিনামাটি’ নামেও বিখ্যাত। চিনামাটিকে সাদা মাটি বলে আখ্যায়িত করলেও চিনামাটি পুরোপুরি সাদা নয়। বরং কোথাও লালচে, ধূসর, হালকা নীলাভ, গোলাপি, ঈষৎ বেগুনি, হলুদ কিংবা টিয়া রঙের হয়ে থাকে। নয়নাভিরাম ও বিচিত্র রঙের মাটির সংমিশ্রণে পাহাড়গুলোর নিচে রয়েছে আবার স্বচ্ছ নীল পানির হ্রদ। অনেকগুলো পাহাড় কেটে মাটি উত্তোলন করায় সৃষ্ট বড় বড় গর্ত বা ঢালুতে বৃষ্টির পানি জমে তৈরি হয়েছে এ হ্রদ।
শুষ্ক প্রকৃতিতে রাবার বাগানের রুক্ষতা
স্থানঃ কোদালা চা বাগান, রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম।
শীতকাল এলেই আমরা দেখি গাছের পাতাগুলো বিবর্ণ হতে শুরু হয়েছে। একটা সময়ে পাতাগুলো সব ঝরে পড়ে আর শূন্য ডালপালা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে গাছের গুঁড়িটি। পাশ্চাত্যে এই মৌসুমকে বলা হয় "Fall" কারণ এ সময়ে একটু বাতাস পেলেই গাছের এই মুচমুচে শুকনো পাতাগুলো ঝরে পড়ে। এই ঘটনাটি আমরা প্রতি শীতকাল এলেই দেখতে পাই। বেঁচে থাকার জন্য আমাদের মতো গাছেরও অক্সিজেন গ্রহণ এবং কার্বন ডাই অক্সাইড বর্জন করতে হয় এবং এই কাজটা হয় পাতার মাধ্যমে। আরও একটি কাজ করে এই পাতার গুচ্ছ, আর তা হল গাছকে ঘামতে সাহায্য করা !
গাছ মাটি থেকে যতখানি জল উত্তোলন করে ততখানি জল তার শারীরবৃত্তীয় কাজে ব্যবহৃত হয় না। অতিরিক্ত জলটুকু বাষ্পাকারে ছেড়ে দেওয়া হয় পাতা থেকে। এখানেই আসে শীতকালে পাতা ঝরে যাওয়ার প্রসঙ্গ। শীতকাল এলেও পাতা থেকে এই জল ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয় না। গাছে যত বেশি পাতা থাকবে তত বেশি জল হারিয়ে যাবে গাছের শরীর থেকে। ফলে গাছে জলের ঘাটতি দেখা দেবার সম্ভাবনা থাকে। এ কারণে নিজের স্বার্থেই পাতাগুলোকে ঝরিয়ে ফেলে গাছ এবং শীতকালের স্বল্প পরিমাণ জলটুকু নিজের মাঝে বাঁচিয়ে রাখে। এ তো গেলো কারণ।
এবার দেখা যাক কি প্রক্রিয়ায় গাছ নিজের পাতা নিজেই ঝরিয়ে ফেলে। বলা যেতে পারে গাছ নিজেই কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলে পাতাগুলোকে। শীতকালের শুরুতে যখন দিনের দৈর্ঘ্য ছোট হতে শুরু করে, বাতাসের তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা দুটোই কমতে থাকে তখন গাছের শরীরে তৈরি হয় একটি হরমোন যাতে পাতাগুলো নির্দেশ পায় ঝরে পড়ার। পাতা যেখানে গাছের সাথে সংযুক্ত থাকে, সেখানে তৈরি হয় ছোট ছোট কিছু কোষের। এ কোষগুলোর নাম "Abscission cell" বা "কর্তন কোষ"। কিছুদিনের মাঝেই এই কোষগুলো আকারে এবং সংখ্যায় বৃদ্ধি পেয়ে একটা গাছ এবং পাতার মাঝে একটি চিকন অঞ্চল তৈরি করে। এই অঞ্চলটি পাতাকে ক্রমশ গাছ থেকে আলাদা করে ফেলে এবং একটু বাতাস পেলেই সেই পাতাটিকে একেবারেই গাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। গাছের সব পাতার গোড়াতেই এই অঞ্চল তৈরি হয় ফলে পাতা ঝরে যায়।
আরো ছবি ব্লগঃ
জীবন যেখানে যেমন
ভাস্কর্যের পেছনে সংগ্রামী ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গল্প
তথ্য সূত্রঃ
https://sobbanglay.com
https://www.prothomalo.com
http://www.durgapur.netrokona.gov.bd
https://bn.wikipedia.org
https://m.dailyhunt.in
https://www.jugantor.com
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৪:৪৭