প্রেম নিয়ে কম বেশি সবাই আগ্রহী হয়ে উঠে জীবনের কোন না কোন সময়ে। 'প্রেম যে কাঁঠালের আঠা, লাগলে পড়ে ছাড়ে না।' সত্যি প্রেমের অনুভূতি এক অদ্ভুত রহস্যময় অজানা অনুভূতি। প্রেমে পড়লেও জ্বালা আবার এর স্বাদ না নিলেও যেন মন ভরে না। প্রেমে পড়ার সঠিক কোনও বয়সই হয় না। তাই যখন ইচ্ছা তখনই পড়া যেতেই পারে। জীবনের বিভিন্ন পর্যায় এসে প্রেমের বিভিন্ন সংজ্ঞার মানে বোঝা যায়। অর্ধ-শতাব্দীর ব্যবধানে অন্যান্য মানবিক মূল্যবোধের সাথে সাথে সময়ের ব্যবধানে প্রেম-সম্পর্কেও আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন নিশ্চয়ই ঘটেছে। আলোচ্য গল্প-সংগ্রহে এই ক্রম-পরিণতির ধারা স্পষ্টলক্ষ্য । অবশ্য এর মধ্যে কেউ যুগের আাগে চলেন, কেউ স্বভাবে রক্ষণশীল। কিন্তু সমগ্রভাবে আমাদের জীবনে এই মূল্যবান অনুভুতির স্বরূপ পরিবর্তনের চেহারাটা চোখে পড়বে গল্প সংকলনটি পড়ার পরে। আপনি জানতে পারবেন আজ থেকে বিগত ৭০ বছর আগে আমাদের সমাজ-সংস্কৃতিতে সর্ম্পকগুলো কেমন রূপে আবির্ভূত হতো। কেমন ছিলো সেই দিনগুলি । সেই সময়ের ঘটে যাওয়া জীবনপ্রবাহের গতি প্রকৃতি, আচার আচরণ, প্রভাব-প্রতিপত্তির নানান দিক। “পঞ্চাশ বছরের প্রেমের গল্পে” ১৯০১ থেকে ১৯৫০ সালের মধ্যে প্রকাশিত সাতান্নটি গল্প সংকলিত হয়েছে।
সংকলিত গল্প গন্থের কিছু এপিগ্র্যাম / সংক্ষিপ্ত বচন :
‘‘পুরুষ মানুষ হচ্চে বাঁদরের জাত। রাস্তায় যদি কোনোও মেয়ে একা চলে, আর তার যদি রূপ-যৌবন থাকে, তাহলে হাজার পুরুষের মধ্যে পাঁচ-শ জন তার দিকে ফিরে ফিরে তাকাবে, পঞ্চাশজন তার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসি হাসবে, পাঁচজন গায়ে পড়ে আলাপ করবার চেষ্টা করবে, আর অনন্ত একজন এসে বলবে, আমি তোমাকে ভালবাসি।”
---- সীতেশের কথা — প্রমথ চৌধুরী
চেহারা আর পোশাকের কথা বাদ দিলে পুরুষ সব দেশে মোটামুটি একই রকম। কিন্তু মেয়েরা তা নয়। কোথাও মেয়েরা দেখবে কেঁদে জেতে, কোথাও হেসে। কোথাও ঠান্ডা বরফ, কোথাও গরম আগুন; কোথাও গম্ভীর, কোথাও চটুলা; কোথাও দেহসর্বস্ব, কোথাও ভাবপ্রবণ; কোথাও দেখবে তোমাকে খাইয়ে খুশি করতে চায়, কোথাও তোমার পয়সায় খেয়ে তোমাকে খুশি করতে চায়।
---- অপরিচিতা – সতীনাথ ভাদুড়ী
পুরুষকে ঠিক বুঝতে না পারলেই নারীর মনে জমে ওঠে আশঙ্কা, তখন চুম্বন-আলিঙ্গনের আতিশষ্যটাও নির্ভুল নিরাপদ বলে মনে হয় না। পুরুষের প্রাণের চিন্তাধারার সম্বন্ধে নিঃসংশয় হতে না পারলে মেয়েদের স্বস্তি নেই।
----- হরপার্বতী সংবাদ - প্রবোধ কুমার সান্যাল
স্ত্রীজাতির দেহ ও মনের ভিতর এমন একটি শক্তি আছে, যা দেহ –মনকে নিত্য টানে। সে আকর্ষণী শক্তি কারোও ও বা চোখের চাহনিতে কারও বা মুখের হাসিতে কারও বা গলার স্বরে, কারও বা দেহের গঠনে।
---- সীতেশের কথা — প্রমথ চৌধুরী
মেয়ে মানুষের মন। বিন্দুতে সিন্ধুদর্শন ।
-- গোধুলির রঙ – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়
হাজবেন্ড যদি মনের মতো না হয় তার চেয়ে বড়ো অশান্তি মেয়েদের জীবনে আর কিছু নেই।
--- জেনানা সংবাদ - বিমল মিত্র
বিয়ে মানে দায়িত্ব, কিন্তু দায়িত্ব মানে ভদ্র জীবনের উপর অত্যাচার নয়।
----- হরপার্বতী সংবাদ - প্রবোধ কুমার সান্যাল
ভগবান রূপ সবাইকে দিয়েছেন, দেখবার চোখ দেননি সবাইকে। যাদের দিয়েছেন তারাই শিল্পী,তারা সকলের রূপমুগ্ধ ।
--- রূপদর্শন – অন্নদাশঙ্কর রায় ।
Do right and fear no man. Don't write and fear no women.
--- আর এক তরফা – পরিমল গোস্বামী ।
পূর্বের বই আলোচনা সমূহ:
⌂ সাহিত্য ■ বই আলোচনা » আমার পড়া • প্রজাপ্রতি
⌂ সাহিত্য■ বই আলোচনা » আমার পড়া • সাম্প্রতিক বিবেচনা: বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস
⌂ সাহিত্য■ বই আলোচনা » আমার পড়া • যদ্যপি আমার গুরু
‘‘মহাজীবন এক্সপ্রেস ’’ একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭ প্রকাশিত একটি ভিন্নধর্মী উপন্যাস
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:০৮