somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি শর্ট ফিল্মের জন্য চিত্রনাট্য....

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :






চিত্রনাট্যটি লিখে ছিলাম বেশ কয়েক বছর আগে.... ইচ্ছা ছিল নিজেই পরিচালনা করবো। বিভিন্ন কারনে হয়ে ওঠেনি। যদি কারও চিত্রনাট্যটি ভালো লাগে....।
পরিচালনার অভিঙ্গতা আছে এমন ব্লগার বন্ধু যোগাযোগ করে পরিচালনা করতে পারেন..... কিংবা এই চিত্রনাট্য দিয়েই হতে পারে আপনার পরিচালনার হাতেখড়ি......

দৃশ্য-১
বাহির। পড়ন্ত বিকেল।
লং শর্টে দেখা যায় - দূরে পড়ন্ত বিকেলের শেষ সূর্য ডুবছে। বৃত্তাকার লাল সূর্য। সূর্যটি আস্তে আস্তে ডুবে গেল। ক্যামেরা একই এঙ্গেলে ধরা থাকে। সূর্যটি ডুবে ক্যামেরার ফ্রেম আউট হয়ে যায়।
কাট-টু।

ঘর। সূর্যাস্তের পরের সময়।

পুরনো আমলের দোতলা বাড়ীর লোহার শিক দেওয়া জানালা ধরে দাড়িয়ে আছে একটি মেয়ে। ক্যামেরা ঘরের ভেতর থেকে ধরা। মেয়েটির দুই হাত ওপরে তোলা। দুই হাত দিয়ে দুইটি লোহার শিক ধরে আছে। মেয়েটি জানালার সাথে একদম ঘেষে দাড়িয়ে আছে। তার হাতসহ শরীরের ক্যামেরা মিড ক্লোজ শর্টে ধরা। শুধুমাত্র জানালাসহ মেয়েটির পেছন দিক দেখা যায়। লম্বা কালো চুল ছেড়ে দেওয়া। বাইরে সামান্য আলোর আভা তখনও আছে। জানালার সামনে একটি গাছ। গাছের দু-একটি ডাল ও পাতা জানালার একদম কাছে দিয়ে চলে গেছে। বোঝা যায়, মেয়েটি জানালা দিয়ে ডাল ও পাতার ফাঁক দিয়ে দূরে কি যেন দেখছে। মেয়েটির পরনে ছালোয়ার কাঁমিজ।
কাট-টু।

বাহির। সূর্যাস্তের পরের সময়।
একঝাঁক পাখি কিচির-মিচির শব্দ করে উড়ে ফ্রেম আউট হয়ে গেল।
কাট-টু

বাহির। সূর্যাস্তের পরের সময়।
আকাশে সূর্যাস্তের রং তখনও যায়নি। বিগ ক্লোজ শটে বাইরে থেকে জানালার লোহার শিকের ফাঁকা দিয়ে মেয়েটির চোখসহ মুখের কিছু অংশ ফোকাস করে ধরা। চোখগুলো ওপরের দিকে কি যেন
খুঁজছে। ঁেখাজা শেষ হলে, চোখ ক্যামেরার এঙ্গেলে স্থির হয়। কেমন নিস্পলক চাহনি। ক্যামেরা ফোকাস থেকে দূরে সরে সরে জানালাসহ মেয়েটিকে ফ্রেম করে। ফোকাস থেকে জানালাসহ ফ্রেম করা পর্যন্ত সাউন্ড ট্রাকে করুন কোন সিম্ফনির সুর বাজে। ক্যামেরা একটু ধরা থাকে। হঠাৎ করে মেয়েটি জানালা বন্ধ করে দেয়।
ফেইড আপ
ফেইড ইন
দৃশ্য-২
মেয়েটির ঘর। রাত।
লাইটের হালকা আলোতে ক্যামেরা প্যান করে। মেয়েটির ঘরের ভেতরটা দেখা যায়। ঘরে আসবাবপত্র বলতে একটি খাট, একটি টেবিল, ( টেবিলে কিছু বই সুন্দর করে সাজানো) একটি চেয়ার, একটি ড্রেসিং টেবিল, আলনা, সেখানে মেয়েটির জামা-কাপড় সুন্দর করে সাজানো-গোছানো।
ক্যামেরা প্যান করে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার ওপরে স্থির হয়। আয়নার মধ্যে দেখা যায়, মেয়েটি হাটুর ওপর মুখ রেখে বিছানার উপর বসে আছে। ক্যামেরা আয়না থেকে প্যান করে মেয়েটির মুখের ওপর স্থির হয়। মেয়েটি হাটুর ওপর রাখা দুই হাতের মধ্যে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে থাকে।
কাট-টু।
মেয়েটি ড্রেসিং টেবিরের সামনে বসে আছে। ক্যামেরা একটু এঙ্গেল করে পেছন থেকে ধরা। মেয়েটির পরনে এখন হালকা লাল রংয়ের একটি শাড়ি। চিরুনি দিয়ে চুল আচরাচ্ছে। ক্যামেরা আস্তে-আস্তে ফোকাস করে। আয়নার মধ্যে মেয়েটির মুখ দেখা যায়। মেয়েটিকে খুব সুন্দর দেখায়। আয়নার ওপর লাগিয়ে রাখা টিপ থেকে একটি টিপ নিয়ে কপালে পড়ে। আয়নার মধ্যে মুখ ঘুড়িয়ে-ফিড়িয়ে দেখে টিপটি ঠিক আছে কিনা। দেখা যায় টিপটি একটু বাঁকা হয়েছে। টিপটি তুলে আবার ঠিক জায়গায় পড়ে। আয়নার সামনে দাড়িয়ে মেয়েটি ঘুরে-ফিরে আয়নার মধ্যে নিজেকে দেখে। মেয়েটিকে সুন্দর দেখায়। আয়নার মধ্যে বিগ ক্লোজ শটে মেয়েটির মুখের কেমন ভাবলেসহীন হাসি দেখা যায়।
কাট-টু।
মেয়েটি ঘরের মধ্যে পায়চারি করছে।
কাট-টু।
মেয়েটি আলনা থেকে ওড়না নিয়ে একটির সাথে আরেকটি গেড়ো দিয়ে বড় করছে। গেড়ো দেওয়া ওড়না টান দিয়ে পরীক্ষা করে দেখে কতটুকু শক্ত হলো।
কাট-টু।
মেয়েটি চেয়ারটি টেনে বিছানার ওপর ওঠায়। চেয়ারের ওপর দাড়িয়ে ওড়না ফ্যানের ওপর ছুরে।
কাট-টু।
মেয়েটি ফাসি নেওয়ার গেড়ো তৈরি করেছে। বিগ ক্লোজ শটে গেড়োর মধ্যে দিয়ে মেয়েটির মুখ দেখা যায়।
কাট-টু।
মেয়েটি ফাসি নেওয়ার গেড়োটি হাতে নিয়ে মাথায় পরে।
কাট-টু।
ক্যামেরা মেয়েটির পা কে লক্ষ্য করে ধরা। মেয়েটি খালি পায়ে চেয়ারের ওপর দাড়িয়ে আছে। এই প্রথম সাউন্ড ট্রাকে শব্দ শোনা যায়। একটি কোকিল পাখি ডাকার শব্দ। একটু বিরতি দিয়ে পাখিটি আবার ডেকে ওঠে। একটু বিরতি দিয়ে পাখিটি আবার ডেকে ওঠে।
কাট-টু।
ক্যামেরা রুমের ভেতর থেকে ধরা। ফোর গ্রাউন্ডে বন্ধ জানালা। পাখিটি আবার ডেকে ওঠে।
কাট-টু।
দেখা যায় গলায় ফাসি নেওয়ার ওড়না পেচিয়ে মেয়েটি জানালার দিকে তাকিয়ে আছে। পাখিটি আবার ডেকে ওঠে।
কাট-টু।
মেয়েটি গলা থেকে ফাসির ওড়না খুলে ফেলে চেয়ার থেকে নেমে যায়।
কাট-টু।
ক্যামেরা পেছন থেকে ধরা। মেয়েটি জানালা খুলে বাইরে তাকিয়ে আছে। বাইরে অন্ধকার। পাখিটি আবার ডেকে ওঠে। একটু বিরতি দিয়ে আবার ডেকে ওঠে। একটু বিরতি দিয়ে আবার।
কাট-টু।
দেখা যায় মেয়েটি কাদছে। মেয়েটি হেচকি তুলে কাদছে। চোখ অঝরে ঝরে পড়ছে চোখের জল। বিরতি দিয়ে-দিয়ে ডেকে চলেছে পাখিটি।
কাট-টু।
ক্যামেরা এবার ঘরের বাইরে চলে আসে। দেখা যায় আকাশে পূর্ন জোছনার চাঁদ। সেই চাঁদ একবার মেঘে ঢেকে যাচ্ছে, আবার একটু পরে মেঘ সরে গিয়ে চাদের আলো দেখা যাচ্ছে।

আস্তে-আস্তে ফেইড হয়ে যায়....
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সেই পুরোনো সিনেমা

লিখেছেন প্রফেসর সাহেব, ০৮ ই মে, ২০২৫ রাত ১:০৮



ঘটনা হইতেছে, পাকিস্তান জ*গী পাঠাইয়া আক্রমণ করাইছে।

ভারত বলছে 'কাম কি করলি? তোর সাথে যুদ্ধ'। পাকিস্তান বলছে 'মাইরেন না মাইরেন না আমরা মারিনাই, ওই কুলাংগার জ*গীরা মারছে'

'আমরা আপনাগরে ওদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলেম কি? এ বিষয়ে বান্দার দায়িত্ব কি?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৫ ভোর ৬:১০




সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প- ৯৪

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৮ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১২:০১



নাম তার তারা বিবি।
বয়স ৭৭ বছর। বয়সের ভাড়ে কিছুটা কুঁজো হয়ে গেছেন। সামনের পাটির দাঁত গুলো নেই। খেতে তার বেগ পেতে হয়। আমি তাকে খালা বলে ডাকি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়ি বুনো ফল-রক্তগোটা ভক্ষন

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০৮ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১২:০৫

পাহাড়ি বুনো ফল রক্তগোটা এর রয়েছে বিভিন্ন নাম-রক্তগোটা, রক্ত ফল, রক্তআঙ্গুরী, রক্তফোটা, রক্তজবা পাহাড়িরা আবার বিভিন্ন নামে ডাকে। এর ইংরেজী নাম ব্লাড ফ্রুট।











প্রতি বছর... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেষমেষ লুইচ্চা হামিদও পালিয়ে গেলো!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:০৩



৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পতন হয় ফেসিস্ট হাসিনা ও তার দল আম্লিগের। এরপর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছে দলটির চোরচোট্টা নেতাকর্মীরা। অনেক চোরচোট্টা দেশ ছাড়লেও এতদিন দেশেই ছিলো আম্লিগ সরকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×