এটা সত্য যে, রাজনীতিতে শেষ বলতে কিছু নাই। এটা বহুবার বিভিন্নভাবে প্রমাণিত হয়েছে। যার শেষ প্রমাণ স্থাপন করল কোটা আন্দোলনের নেতা হিসেবে পরিচিত এবং বিতর্কিত ডাকসু নির্বাচনে জয়ী ঢাবির ভিপি নূরুল হক নূর।
কোটা আন্দোলনের সময় থেকে সে ছিল সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার। বিভিন্ন সময়ে সে শারীরিকভাবে নির্যাতিত ও হুমকি ধমকির শিকার হলেও সে তার অবস্থান থেকে সরে আসে নি। যা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীনরাও তাকে শিবির উপাধি দেয়া থেকে শুরু করে নানাভাবে হেনস্তা করে আসছিল। কয়দিন আগেও তার পিঠের চামড়া তুলে নেবার প্রাকাশ্যে ঘোষণা দিতে দেখেছি।
পরিস্থিতি এখন ভিন্ন, যা আমরা সবাই জানি। নূর হয়ত এটাই চেয়েছিল, ঝোপ বুঝে কোপ মারা। এমন ঘটনা নূরেরই প্রথম নয়। এমন ঘঠনা অতীতেও বহুবার দেখেছি। গত নির্বাচনে মাহি বি কে দেখলাম, ঘোর আওয়ামিবিরোধী ইনু, মতিয়ারা কিভাবে ঘরের লোক হয়ে যায় তা দেখলাম, বুকে গুলি খেয়েও হেফাজত কিভাবে বুকে বুক মিলায় তা দেখলাম।
আর দলগুলাই বা কেনো তাদের বিরোধীদের কাছে টেনে নেয়? এটাই আমাদের রাজনীতি। এখানে যেহেতু নীতির ধার ধারা হয় না, সুতরাং কিসে নিজের স্বার্থ বহাল থাকবে তাই দেখা হয়ে থাকে। কারণ দলের নীতিনির্ধারকরা জানে দলের ৯৯ ভাগই হচ্ছে তোষামোদকারী, তৈলমর্দনকারী। নিরাপত্তা বলয়ে থেকে বিড়ালও বাঘের হুংকার ছাড়তে পারে। যারা নিরাপত্তা বলয় উধাও হলে তারাও উধাও হয়ে যায়। কিন্তু নিরাপত্তা বলয়ের বাহিরে, সম্পূর্ণ প্রতিকূল পরিবেশে, স্রোতের বিপরীতে যারা লড়াই করতে জানে তারাই প্রকৃত বীর। দল এদের মত নেতাই খোঁজে। দলের অন্য নেতারা কে কি মনে করল, এ নিয়ে দলের নীতিনির্ধারকরা ভাবে না। আর নূরেরা যখন নিজ স্বার্থের কথা চিন্তা করে, তখন সবচেয়ে সুবিধাজনক আশ্রয়ই বেছে নিয়ে থাকে।
নূরেরা যখন তাদের নৈতিক অবস্থান থেকে নিজ স্বার্থ রক্ষার্থে দূরে সরে আসে তখন সাধারণেরা কিছু পায় না আর। তখন আশ্রয় প্রদানকারী এবং আশ্রয় গ্রহণকারী একে অপরের কাছ থেকে সুবিধা ভোগ করে থাকে। এখানে উভয় পক্ষ থেকেই নৈতিক স্খলন স্পষ্ট। এতদিন উভয় পক্ষ থেকে যে স্টেটমেন্ট আমরা পেয়ে আসছি, তা ছিল মিথ্যা, বানোয়াট এবং বানানো। এতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে পরেছি।
আলোকবর্তিকা হাতে উঠে আসা নূরেরা এভাবেই অন্ধকারে বিলীন হয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৯