বিভিন্ন মাসে রোযা রাখার ফযীলত (১)
পবিত্র মহররম শরীফ মাস উনার রোযাঃ
পবিত্র মহররম শরীফ মাস হচ্ছে প্রথম মাস। এ পবিত্র মুহররম শরীফ মাস উনার ১০ তারিখকে পবিত্র আশূরা শরীফ বলা হয়। আর পবিত্র আশূরা শরীফ উনার রোযা রাখার বিধান ২টি। ৯, ১০ অথবা ১০, ১১ তারিখ। একটি রোযা রাখা মাকরূহ। পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার রোযা ফরয হওয়ার পূর্বে পবিত্র আশূরা শরীফ উনার রোযা ফরয ছিলো। এখন পবিত্র আশূরা শরীফ উনার ২টি রোযা নফল বা সুন্নত হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার রোযার পর মহান আল্লাহ পাক উনার মাস পবিত্র মুহররম শরীফ উনার (আশূরা শরীফ উনার ২টি) রোযাই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ।” (মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ, রিয়াদুছ্ ছালিহীন)
হযরত আলী কাররমাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “এক ব্যক্তি এসে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে আরজু করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার পর আর কোন মাসের রোযা রাখতে নির্দেশ দেন? তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “যদি তুমি পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার পর আরো রোযা রাখতে চাও তাহলে পবিত্র মুহররম শরীফ মাসে (পবিত্র আশূরা শরীফ উনার ২টি) রোযা রেখো। কেননা এটা মহান আল্লাহ পাক উনার মাস। এ মাসে এমন একটি দিন আছে যে দিন মহান আল্লাহ পাক তিনি এক সম্প্রদায়ের তওবা কবুল করেছেন এবং আর এক সম্প্রদায়ের তওবা কবুল করবেন।” (মুসনাদু আহমদ বিন হাম্বল শরীফ, তিরমিযী শরীফ, আরিদাতুল আহওয়াযী)
বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ ও রিয়াদুছ্ ছালিহীন কিতাবে বর্ণিত আছে, “নিশ্চয়ই হাবীবুল্লাহ রসূলুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং আশূরা শরীফ উনার দিন রোযা রেখেছেন এবং ওই দিনে সকলকে রোযা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মুসলিম শরীফ ও রিযাদুস্ ছালিহীন কিতাবে বর্ণিত আছে, “হাবীবুল্লাহ রসূলুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পবিত্র আশূরা শরীফ উনার রোযার ফযীলত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এটা বিগত দিনের গুনাহের কাফফারা স্বরূপ।” সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার রোযা রাখবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার বিনিময়ে তার আমলনামায় ষাট বছর দিনে রোযা রাখার ও রাতে ইবাদত করার ফযীলত লিখে দিবেন।” সুবহানাল্লাহ!
হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার রোযার পর মহান আল্লাহ পাক উনার মাস পবিত্র মুহররম শরীফ উনার রোযাই হলো শ্রেষ্ঠ। (মুসলিম শরীফ)
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন এবং পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত কোনো দিনের রোযা রাখার জন্য এতো অধিক গুরুত্ব দিতে এবং অপর দিনসমূহের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করতে দেখিনি। (মুত্তাফাকুন আলাইহি)
হযরত কাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনের রোযা পূর্বের এক বছরের গুনাহ মিটিয়ে দেয়। (মুসলিম শরীফ)
হযরত জাবির ইবনে সামুরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদেরকে পবিত্র আশূরা শরীফ উনার তারিখের রোযা রাখতে নির্দেশ দিতেন এবং উনার জন্য আমাদেরকে উৎসাহিত করতেন। এছাড়া ওই তারিখ উপস্থিতকালে তিনি আমাদের খোঁজ রাখতেন (আমরা রোযা রেখেছি কিনা)? (মুসলিম শরীফ)