ঈশ্বরের কাছে এক দিনের জন্য মৃত্যু দাবী করেছিল তরুণ এক কবি
এখানে আজ তার ভাল লাগছে না,
এক দিনের জন্য সে মরে যেতে চায়-
যদিও কাজটা সহজ নয় - এই মরে যাওয়াটা
কিন্তু তারপরও তাকে যেতে হবে!
পৃথিবীর সব বেমানান সৌন্দর্যে তার ঘেন্না ধরে গেছে
ভরা পূর্ণিমায় নদীর কাছে দাঁড়ালে সে এখন কান্না শুনতে পায়
কী শীতলতা আর হাহাকার ভরা থাকে সেই চাপা ক্রন্দনে!
অথচ শুষ্ক আর জরাগ্রস্থ সে নদীর কাছে এসে কেউ বলেনি-
“তোমার বুকের বাঁধ আমি ভেঙ্গে দেব হে নদী
তুমি আবার তরুণী হয়ে ওঠো
দুকূল ভাসিয়ে তুমি বয়ে চল দক্ষিণে
রাঙা প্রভাতে আমি তোমার নগ্ন সমুদ্রস্নান উপভোগ করব”
নদীর মোহনায় এখন বাজার বসেছে
বেশ্যার মত থলথলে দেহ আর পিচ্ছিল কাদা মাখানো জল
নদীর দেহ থেকে খসে খসে পড়ে,
তরুণ কবি একদিনের জন্য তাই মরে যেতে চায়
কেননা মরণের ওপারে সে দেখতে পায় এক সুগভীর জলের নদী
বুকের মধ্যে গভীর সব ঢেউ তুলে যে নদী শান্ত হয়ে
তারই অপেক্ষায় আছে।
তরুণ কবি একদিনের মৃত্যুই চেয়েছিল
সে হিসেব করে দেখেছে
একদিনে কতটা পথ ঘুরে আসা যায়
এক দিনে - কতটা দুঃখ ভুলে থাকা যায়-
কেননা আকাশের নীল আগলে রেখেছিল যে শঙ্খচিল
সে আজ তাঁর কৌমার্য হারিয়েছে এক শহুরে নেড়ি কুকুরের কাছে
আকাশের দিকে তাকালে এখন দেখা যায় কংক্রিটের সুতীক্ষ্ণ খাঁজ
কবির নরম দৃষ্টি সে ধারালো খাঁজে রক্তাক্ত হয়ে পড়ে,
তখন নক্ষত্রবিহীন রাতে নিতান্ত অনিচ্ছায় ওঠা চাঁদ
তাঁর নোংরা হাতে কবির চোখে দুঃখের জীবাণু ছড়িয়ে দেয়
তরুণ কবি তাই একরাতের জন্য তাঁর মৃত্যু দাবী করে
মৃত্যুর ওপারে আছে এক অবারিত খোলা প্রান্তর
সেখানে সে অপেক্ষায় থাকবে
উথাল পাথাল এক জোছনা রাতে
নক্ষত্রের চুমকি বসানো নীল শাড়ি পড়ে
কবির খুব কাছে এসে বসবে তার ভুলে যাওয়া প্রেমিকা
স্নিগ্ধ সুন্দরী এক রুপালী রাত্রি।
আমার অন্যান্য কবিতাঃ
১) ঘুণপ্রলাপ
২) আমার আজ আর ফেরা হবে না
৩) মুর্খের আত্মপোলব্ধি
৪)মরীচিকায় কানামাছি
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৬