পাখিরা যখন টিপ পড়ে, সেটা অন্যরকম সুন্দর ! কেমন এক বৃষ্টির দিনে সে এসেছিলো । ভোরের সূর্যের মতো অদ্ভুত এক লাল টিপ আর ভেজা পায়ে হারিয়ে যাওয়া আলতার ঘ্রান! আমার ঘুম ঘুম সকালে হামলা করার অভ্যেস তার পুরোনো !
সবাই চড়ুই পাখি ডাকতো তাকে । আমি বলতাম অলকানন্দা ! অমন হলুদ সুন্দর দেখলে হয়তো ভ্যানগগও সানফ্লাওয়ার আঁকতেন না । তারপর ঘুমঘুম চোখে অলকানন্দার হাতে সিন্দুক খোলা চিঠি ! পাখিরা যখন চিঠি পড়ে বা খাতায় বিস্ময় চোখ রেখে চিঠি লেখে, তখন সেটা অন্যরকম সুন্দর ! কিংবা অলকানন্দা খোঁপায় সাদা জবা জড়িয়ে যখন ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে যায় , সেটা... ! অলকানন্দার হাত ধরে সকাল বেলার চায়ের কাপে মুখ ! অমন সুন্দর করে চা খেতে জানে যে পাখি বা মানুষ , তার জন্য পূনজন্ম দরকার পরে না ।
সবাই চড়ুই পাখি ডাকতো তাকে । আমি বলতাম অলকানন্দা ! অলকানন্দার বুকের তিন জোড়া হাড় নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছিলাম সুযোগ বুঝে ! কখন আবার হারিয়ে যায় ! পাখিদের তো সব কাজেই বড় তাড়াহুড়া, তুষারের দেশে গিয়ে বৃষ্টির জন্য কান্না জমিয়ে রাখা !
একবার আবদার করেছিলাম, চল, চড়ুইভাতি করি! দু’জন মিলে । কিছু ছোট্ট হাড়ি পাতিল, ঝরনার জলে সিদ্ধ ভাত আর পাহাড়ি মরিচের আলু ভর্তা ! তারপর তোর জন্য হলুদ রঙের শাড়ি । খোপায় হলুদ গাঁদা! চল, চড়ুইভাতি...
কিন্তু দুপুর আসতে না আসতেই বজ্জাত বৃষ্টি ! মেঘ কালো করা কান্নার আবেগ কদমের ডালে! অলকানন্দা একলা একা বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে ভ্যানগগের হলুদ বিষন্নতার ভেতর ডুবতে ডুবতে মুছে ফেলে আলতার ঘ্রান! ওম ওঠা সিদ্ধ ভাতের হাড়ি চিৎ হয়ে পড়ে থাকে পৃথিবীর সমস্ত সড়কে! আর উঁইপোকা খেতে থাকে সিন্দুক সিন্দুক চিঠি !
চড়ুইপাখি, তোর সঙ্গে চড়ুইভাতি!
হলো না!
হলো না!