একজন লালনকে সেদিন হত্যা করা হলো।
একজন আব্বাস উদ্দিনের কোমড়ে দড়ি বেঁধে তাকে হিরহির করে
টেনে-হিঁচড়ে নামানো হলো বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস থেকে।
আমাদের সব ভাস্কর্য হয়ে উঠলো ইহুদি নাছাড়ার মূর্তি ।
বাংলাদেশের মুখে লেপে দেয়া হলো উগ্র ধর্মিকতার উত্তেজিত আবর্জনা।
আর একজন আমিনী আমাদেরকে ধমক দিলেন।
পশুর মুখে আমাদরেকে হুমকি দিলেন-ক্ষমতার মাংসে ভাগ বসাতে পারলে ওনারা আমাদের সব মূর্তি ভেঙে চুরমার করে ফেলবেন।
ইউনিভার্সিটি এলাকার মারাত্বক সব ইসলাম বিরোধী যে মূর্তি বানানো হয়েছে, মাটির সাথে মিশিয়ে দেবেন সেগুলো।
তারপর অপারাজেয় বাঙলার গায়ে লাগবে উগ্র ধার্মিকতার থু থু।
জয়দেব পুরের জাগ্রত চৌরঙ্গীর অসহায় মুক্তিযোদ্ধাটি লজ্জায় ঘৃনায় মুখ নিচু করে বসে পড়বেন।
আমাদের শিখা অনির্বান নিভে যাবে নূরানী-আমিনীর পেচ্ছাবে।
হুজুরেরা একটানে ছিড়ে ফেলে দিল বাঙালির অসাম্পদায়িক ঐতিহ্যেও সব দলিল।
আর আমাদের সবার গালে কষে থাপ্পর মারল ধর্মের রাজনীতিক ব্যবসায়ীরা।
আমাদের সবার গালে সেই থাপ্পরের কালো দাগ লাগলো । আমাদের রাষ্ট্র বাঙলার ইতিহাসে নপুংশকতার এক দারুন দলিল উপহার দিলেন। রাষ্ট্রের প্রধানেরা কিছু অন্ধ-অসংস্কৃত মাদ্রাসাবালকের হুমকিধামকিতে জিয়া আন্তজার্তিক বিমানবন্দর এ নির্মানাধীন লালন ভাস্কর্যটি সরিয়ে নিলেন।
আমরা পরাজিত হতে হতে রুখে দাঁড়ালাম। মিছিলে পা বাড়ালাম।
আর মিছিলে হাজির হলো আমাদের মহান ত্রাতারা ; পুলিশেরা।
সম্ভবত এই চমৎকার দেশ এর চেয়ে এই রকম অদ্ভুদ কায়দার রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছ থেকে এর চেয়ে সভ্য আচরণ আশা করা আমাদের অন্যায়। দেশে জুড়ে যে অনন্য জরুরী আইন বলবত আছে তার ফায়দা লোটে উগ্র মৌলবাদিরা।
আর যখন মিছিলে নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক-ছাত্র-সংস্কৃতি কমীরা ,তখন পুলিশ বাঁধা দেয় ; ডান্ডার ভয় দেখায়।
বাংলাদেশ এখন কেবল ডান্ডার ভয়ে কাঁপে সারান।
আমরা রাষ্ট্রের এই নপুংশকতার প্রতিবাদ জানাই। আঘাত ফিরিয়ে দেবার জমিন খোঁজার জন্য পথে নামি । জানি, পথ আমরা পাবই। আমরা আমাদের লালণকে আমরা আবার বাঁচিয়ে তুলবো। আমাদের আব্বাস উদ্দিনেরা আবার দরাজ গলায় গান ধরবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ১০:৫১