আজ ২১শে ডিসেম্বর, শুক্রবার ব্লগ ডে উপলক্ষে একটি পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি খুবই ইনফরমাল, অর্থাৎ কোন আলোচনা সভার মত গুরুগম্ভীর কিছু ছিলো না। সবার মধ্যে বুক উপচে পড়া ভালোবাসা ভরা কিছু মুখ তুলে এনেছি আমার ক্যামেরায়। ছবি ব্লগটিতে বাছাই করা কিছু সুন্দর হাঁসিমুখ তুলে আনার চেষ্টা করেছি মাত্র।
১. ব্লগার রেজোয়ান তানিম। ভেবেছিলাম সবার হাঁসিমুখের ছবি তুলবো। হাঁসিমুখ কথাটা ইনার জন্য কম হয়ে যায়। উনি শুধু মুখ দিয়েই হাঁসেন না, অঙ্গভঙ্গিও জেনে খিল খিল করে হাঁসছিলো এদিন।
২. পাল্লা দিয়ে ছবি তুলতে ব্যস্ত লিলিয়ান আপু।
৩. ব্লগার সেলিম আনোয়ার। পুরো অনুষ্ঠানে বলেছেন তো সবাই, কিন্তু ভালো একজন শ্রোতা হিসেবে সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন, হাঁসিমুখে নিজের অভিজ্ঞতাও বর্ননা করেছেন অল্প কয়েক লাইনে।
সরল অতি সরল একটি মাটির মানুষ। পাথুরে মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে যে মানুষটি কঠিন শিলা তুলে আনেন, সে মানুষটি যে পলিমাটির মতো এতো নমনীয় হবেন বুঝতে পারিনি। সহজ-সরল-শিশুর মতো অপাপবিদ্ধ তার চোখ, কথা বলার ধরন। ভালো লাগলো-খুব ভালো লাগলো এমন আবেগী মানুষটিকে। - আহমেদ জী এস
৪. বক্তব্যের শেষে একটা পাঞ্চলাইন, আর সবার এক যোগে ও ও ও ও . . . ! নিক রসায়ন
এতোটুকু এক তরুন যে কবিতায় গা না ভাসিয়ে বিজ্ঞান নিয়ে লেখেন , বোঝার উপায় নেই। তার লেখা পড়ে আমার তো মনে হতো তিনি মধ্যবয়েসী কেউ। ভুলটা ভাঙলো কথা বলে। স্বল্পভাষী মনে হলো। অমায়িক একজন। - আহমেদ জী এস
৫. ব্লগার মৌরী হক দোলা। আমাদের অন এন্ড অনলি ক্ষুদে ব্লগার
এতোটুকুন একটি মেয়ে। প্রথম দেখাতেই আমি যখন বললুম, “পিচ্চি মেয়েটি আবার কে?”, তাঁর সপ্রতিভ উত্তর-মৌরী হক দোলা। দোলাই দিয়ে গেলো মনে। চোখে মুখে দারুন প্রত্যাশা নিয়ে এসেছেন মা’কে সঙ্গে করে। ব্লগিংয়ের প্রতি কতোখানি প্রানের টান থাকলে এমনটা হয়! যে বয়সে সোস্যাল মিডিয়ার নষ্ট স্রোতে তাঁর ভেসে যাবার কথা, সেই বয়সে সেই স্রোতের বিপরীতে সৃজনশীলতার তরী বেয়ে যাবার প্রত্যয় তার চোখে। এতোগুলো পরিনত মানুষের ভীড়ের মাঝেও ঘাবড়ে যায়নি এতোটুকু। - আহমেদ জী এস
৬. ব্লগার সাইনবোর্ড। রাজনীতি’র মতো এত সিরিয়াস বিষয় নিয়ে লিখলেও উনার এক্সপ্রেশানে সিরিয়াসনেস একদম ছিলো না
রাজনীতির মতো উথাল-পাতাল বিষয় নিয়ে যিনি লেখেন, তিনি মোটেও উথাল-পাতাল-জটিল কিছু নন। হাসি হাসি মুখে লজ্জা ছড়ানো শান্ত-স্নিগ্ধ এক মানুষ। কথা বলতে গিয়েও যেন ভেঙে পড়ছিলেন লজ্জায়! - আহমেদ জী এস
৭. ব্লগার এস এম ইসমাঈল। উনাকে খুব চাঁদগাজী বলতে ইচ্ছে করছিলো, কিন্তু না উনি চাঁদগাজী না। প্রেমের কবি! কি হিংসে হয়? পুরো অনুষ্ঠানে একাই এক হালি ব্লগার সমান ভালোবাসা জানিয়ে গেছেন সবার প্রতি। ব্লগার নিক উনার সব মুখস্ত।
ভেবেছিলুম কে এলেন! কিন্তু যিনি এলেন তিনি অনুষ্ঠাটিকে যেন অন্য আমেজে ভরিয়ে দিয়ে গেলেন। পড়ন্ত বেলার একজন। না, তাঁর সাথে সরাসরি কথা হয়নি। বলিনি, মনে হয় তিনি অনেকটা অসুস্থ্য ছিলেন এবং কথা বলতে তাঁর কষ্ট হচ্ছিল বলে। সেটাকে বাড়াতে চাইনি। তাঁর উপস্থিতিতে একটা সুরই মনে এলো - “যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ণ এই বাটে.....”। উনি যেন এই চির সত্যটাকে আবারও উসকে দিয়ে গেলেন। - আহমেদ জী এস
৮. ব্লগার অব্যক্ত কাব্য। হাঁসি হাঁসি এবং সুন্দর মিষ্টি হাঁসি
৯. ব্লগার বিদ্রোহী ভৃগু। কিছু মানুষ শুধু নিজে হাঁসেন না, হাঁসি আনন্দ ছড়িয়ে যান।
যতো দাঁত ভাঙা সব জটিল শব্দের সমাহার ঘটিয়ে যিনি কবিতা সাজান, সে মানুষটির হাসি কিন্তু মোটেও জটিল নয়, ঝকঝকে আস্ত দাঁতে মিষ্টি হাসির জোছনা ছড়িয়ে দেয়া এক মানুষ। দেখে মনে হলোনা বিদ্রোহ করতে জানেন, একদম বিপরীত মানুষ প্রেমে ও পুজায়। - আহমেদ জী এস
১০. ব্লগার কাওসার চৌধুরী। বাংলা পড়া, বাংলা দেখা, বাংলা শোনা যে রসগোল্লা’র থেকেও মিষ্টি, উনি তা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। আমরা শুনেছি তাঁর উপলব্ধির সেই গল্প।
মনে হয় নিভৃতচারী এক মানুষ। এসেছেন সেই সুদূর সিলেট থেকে বাংলায় সেরা ব্লগ সামুর টানে । টানটা তার বাংলা ভাষার প্রতিও অদম্য। বাংলা যে কেন শিক্ষার একমাত্র বাহন হয়না, আক্ষেপ তা নিয়েও। নিজের ভাষনে বলেছেন তাও। নিজেকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টায় রত এই মানুষটির প্রতি আকর্ষণ বাড়লো বটে। - আহমেদ জী এস
১১. ব্লগার লিলিয়ান, এত ছটফটে আর এত প্রানোচ্ছল একটা মানুষ। অর্ধেক মানবি, আর বাকি অর্ধেক ছবিটা
পরিচয় করতে গিয়ে তাঁকে একটি ধাঁধাঁর উত্তর জিজ্ঞেস করতেই আমার নামটি বলে দিলেন। আনন্দ-হাসি খুঁজে পেতে খুব উৎসাহী মনে হলো, সবার সাথে তার কথা ও ছবি তোলার বহর দেখে। সহজ, প্রানবন্ত একজন মানবী মনে হলো। - আহমেদ জী এস
১২. ব্লগার মনিরা আপু। জনকন্ঠ, মাইক দরকার নাই উনার।
চোখে মুখে অনেকটা দুষ্টু হাসির ঝিলিক। কবিতার প্রতি যেমন জোড়ালো আস্থায় তার অবস্থান তেমনি নিজের উপরেও দেখলুম তার আস্থার জায়গাটি। উপস্থাপক ও উৎসাহীদের বারবার ধরিয়ে দিতে চাওয়া মাইক্রোফোন অবলীলায় ঠেলে সরিয়ে, চোখের চকিত চাহনী হেনে দৃপ্ত গলায় বলে গেলেন নিজের কথা। এ পর্যন্ত তাঁর সাথে পরিচিত হইনি। শেষে উপস্থিত প্রায় সবার হাতেই দেখি এক একখানা বই। বিলিয়েছেন নাকি সেই একজনা। কাছে গিয়ে বই চাইতেই আবাক তাকিয়ে রইলেন মুখের দিকে। বললুম , আমি জী এস... আহমেদ জী এস। বিস্ময়ে ফেটে পড়ে কপাল চাপড়ে বলে উঠলেন-- ও মাই......জী এস ভাই আপনি! চোখে মুখে হাসির ঝিলিক ঝলসে উঠলো আরো একবার। ঐটুকুই। - আহমেদ জী এস
১৩. স্বল্পভাষী ব্লগার খুবই কম, আমি একটা লাইন ও শুনিনি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত
১৪. ব্লগার সারাফাত রাজ। অনুভতি বুক উপচে পড়া, কিন্তু কিথা বের হচ্ছিলো না মুখ থেকে
১৫. ব্লগার হামিদ ভাই। কিছু মানুষ আছে, ছবি তোলার জন্য আলাদা করে বলা বা থামা’র প্রয়োজন হয় না। যতগুলো ছবি তুলেছি সব গুলোতেই এই ব্লগারকে দারুন মানিয়ে গেছে
১৬. ব্লগার মেঘনা পাড়ের ছেলে। মাইক বড় নিষ্ঠুর জিনিস। আবেগ কেড়ে নেয়।
১৭. নীমচাঁদ। একাই একশো। এত্ত এনার্জি একটা মানুষের থাকতে পারে!!
মনের তারুন্যে ভরপুর একজন। রসিকতা করছিলেন সবার সাথেই। তবে তার নিকটি যে ধার করা সে বয়ান শুনিয়েই বুঝিয়ে দিলেন, নিমপাতার মতো তেঁতো নন তিনি। অনুষ্ঠান অনেকটা তিনিই জমিয়ে রেখেছিলেন। - আহমেদ জী এস
১৮. ব্লগার সৈয়দ তাজুল ইসলাম
১৯. ব্লগার সত্যপথিক শাইয়্যান । ব্লগডে তে আসার সব চাইতে পরিপাটি মানুষ। উনার কাছে আমাদের নামে মাত্র প্রস্তুতি পানসে লাগছিলো খুব।
২০. ব্লগার সৈয়দ তারেক মাহমুদ
২১. ব্লগার মৈত্রী
২২. ব্লগার প্রামানিক
ভাঙা হাত, লোহা-লক্কর, বল্টু লাগানো শরীর নিয়ে এখানে এসে প্রমান করলেন - ভালোবাসি....ভালোবাসি....ব্লগটাকে ভালোবাসি। আমার নাম বলতেই এ্যায়সা জোড়ে বুকে জড়িয়ে ধরলেন যে মনে হলো, তার মতো না আমাকেও বুকের খাঁচায় নাট-বল্টু লাগাতে হয়!
আগাপাস-তলা রসিক একজন। - আহমেদ জী এস
২৩. ব্লগার অলঅয়েজ ড্রিম
২৪. ব্লগার মাহতাব সমুদ্র
২৫. ব্লগার এসআর জনি
২৬.
২৭. ব্লগার ঘুড্ডির পাইলট
২৮. ব্লগার স্বর্নমৃগ
২৯. ব্লগার নাহিদ০৯
৩০. ব্লগার অগ্নিসারথি
ধংশের সারথী নয়, সৃষ্টির সারথী হয়ে আসা যে জন! ব্লগটাকে অনেকের আরো কাছে এনে সৌহার্দ্য সৃষ্টি করে গেছেন বাঁধা পেড়িয়েও। একেবারে শুরুর দিকে আঙুল গোনা যে পাঁচ সাতজন ছিলুম আমরা তাদের উষ্ণতায় বরণ করে নিলেও সেই থেকে তাঁর মুখে একটি আশংকা-উৎকন্ঠা আর অতৃপ্তির ছায়া লেপ্টে থাকতে দেখেছি। “বোধ হয় জমলোনা, তবে কি এই ক’জন মানুষ নিয়েই হবে মিলন মেলা!” এমন একটা গুমোট ভাব ছিলো চোখে মুখে । সময় বাড়তেই যখন আরো আরো মানুষের দেখা মিললো, সে মুখের গুমোট ভাব কাটলো বটে অনেকটা কিন্তু পরিতৃপ্তির দেখা অধরাই রয়ে গেলো। “ব্লগতরী”টিকে তবুও শেষতক ভালোবাসার ঠিকঠাক ঘাটে এনে লাগানোর এই মানুষটিকে তাই “ব্লগ সারথী” বলা ছাড়া আর উপায় থাকেনা। - আহমেদ জী এস
৩১. ব্লগার অপু দ্যা গ্রেট
গিয়ে যখন উঠেছি আসমা হলের ছাদে তখন আঙুল গোনা পাঁচ-সাতজন। কাভা আমার নাম ধরে লাফিয়ে উঠতেই টগবগে তারুন্যের শুভ্রতা মাখা আরো একটি ছটছটে- মুখ এগিয়ে এলো সামনে -“ আমি অপু।” স্নেহমাখা ধমকের সুরে বললুম “অপু আবার কি ? অপু দ্য গ্রেট , তাইনা ?” স্মিত হাসি ছড়িয়ে গেলো আপনার সারাটি মুখে। সে হাসি, মনে হলো, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের মতো বিশ্বজয় করে ফেলতে পারে। পেরেছেনও তাই। আসমা হলের ছাদে জড়ো হওয়া সেদিনের সবার মন জয় করতে পেরেছেন আপনি অনায়াসে। ভাঙা হৃদয়ের শোকও যে অবলীলায় জয় করে ব্লগ জয়ে বের হয়েছেন আপনি, বললেন অকপটে তাও। জীবনের সেই ক্রান্তিকালটাকে সামাল দিয়েই আপনি সত্যি সত্যিই “গ্রেট” বনে গেলেন মনে হয়! - আহমেদ জী এস
৩২.নন ব্লগার দুলাভাই
৩৩. ব্লগার জাদিদ - দ্যা কাল্পনিক ভালোবাসা
আন্ডারস্কোর দিয়ে যার নিক, তার পানে না চাইতেও চোখে যে পড়তেই হয়! কি অক্লেশে সবার কথা ধীর-শান্ত হয়ে উপস্থাপন করে গেলেন আমাদের। বর্ষীয়ান ব্লগার এস এস ইসমাইলকে তুলে ধরলেন পরম মমতায়। শোনালেন নিজের কথাও নিজের স্বভাবজাত চপলতায়। প্রশ্নের জবাব দিয়ে গেলেন একটুও না থেমে হাসি ঠাট্টা আর গাম্ভীর্যতা মিশিয়ে। মডারেটের এমন না হলে হয়না। সবাই-ই মডারেটর হতে পারেনা। মডারেটর হো তো এ্যায়সা- কাভা য্যায়সা.. - আহমেদ জী এস
৩৪. ব্লগের সর্বজন শ্রদ্ধেয় এবং গুণী লেখক আহমেদ জী এস সাহবের অংশগ্রহণ ব্লগ ডে'কে পূর্ণতা এনে দিয়েছে। এমন উঁচু মানের একজন লেখককে এভাবে সবার মাঝে পাওয়াটা সত্যি অনেক প্রেরণার। তিনি বয়সে যেমন তরুণ, তেমন মিশুকও বটে। উনার চমৎকার ব্যবহার ও আন্তরিক কথোপকথন সবাইকে মুগ্ধ করেছে।
*** নামগুলো জাদিদ ভাই এর স্মৃতি থেকে নেয়া। আর কিছু ছবির ক্যাপশনে সর্বজন শ্রদ্ধেয় এবং গুণী লেখক আহমেদ জী এস এর মন্তব্য আছে কিছু। কারো নামে ভুল থাকলে বা ছবি বাদ পড়ে গেলে ছবির নাম্বার সহ মন্তব্যে জানাবেন।
অনুষ্ঠানের সব ছবির এলবাম এখানে
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৬