somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাবিহা এবং আমার গল্প

০৬ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমি সাবিহার চলে যাওয়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলাম।বার বার মনে হতে লাগল, এখনি ও পিছনে ঘুরে হাতের ইশারায় আমাকে ডেকে ওর সাথে যেতে বলবে।কিন্তু এমন হল না, অন্ধকারে ও খুব দ্রুত মিলিয়ে গেল।
সাবিহার জন্য একটু চিন্তা হওয়া শুরু হল,একা ও বাস স্টান্ড পর্যন্ত যেতে পারবে তো? এমনিতেই ও গাড়ি ঘোড়া ভয় করে।রাস্তা পার হতে গিয়ে আবার কিছু হবে না তো।
একবার মনে হল ওর পিছনে যাই,কিন্তু সাহস হল না।
.
অবশ্য রাগ হলে মানুষ যে কোন কাজ করতে পারে যেমন রাগ হয়ে আমি ওকে আজ আমার ভালবাসার কথা বলেছি,রাগ হয়ে ও নিজে নিজে রাস্তা পার হয়ে চলে যেতেই পারে।
.
শাইদুল ভাইয়ের উপর একটু রাগ উঠল। শাইদুল ভাই আমাদের অফিসের বস,সবাই বস বলে ডাকলেও আমি ডাকি শাইদুল ভাই।একটু অন্তরঙ্গ আছে ওনার সাথে। শাইদুল ভাইকে যখন গতকাল জানালাম আমি সাবিহাকে পছন্দ করি, তখনি উনি সাবিহাকে মনের কথা জানিয়ে দিতে বললেন। আর সাথে এও বললেন যে চাকুরী করা মেয়েদের বিয়ে দ্রুত হয়ে যায় আর তারা ভাল ছেলেও পায় তাই যা করবা দ্রুত।
অবশ্য আমি কাল সাবিহাকে কিছু বলিনি। আমার একটু ভয় হচ্ছিল ওকে বললে যদি ও রাগ টাগ করে।থাপ্পড় টাপ্পড় ও মেরে বসে তখন?
.
কিন্তু সকালে অফিসে এসে সব উল্টা পুল্টা হয়ে গেল। দেখলাম সাবিহা এক কলিগের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।একটু রাগ উঠল আমার। আমাকে ছাড়া ওর চলেনা,তাহলে ও কেন অন্যদের সাথে হেসে হেসে কথা বলবে।
তখনি সিদ্ধান্ত নিলাম ওকে সব কিছু বলে দিব, তারপর যা হবার হবে।
.
অফিস ছুটির পর দুজনে এক দিকেই যাই,তাই বলাটা কোন সমস্যা ছিল না।আমতা আমতা করে যখন বলে ফেললাম,
-সাবিহা আমি তোমাকে ভালবাসি,,
.
ও আমার কথা শুনে ওর হাঁটা বন্ধ করে কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে রইল।জায়গাটা অন্ধকার হলেও বোঝা যাচ্ছিল যে ও রাগ করেছে।তারপর কিছুক্ষন বাদে আবার ও হাঁটা শুরু করল। আমার আর সাহস হল না ওর পিছনে হাঁটার তাই এক খানে দাঁড়িয়ে রইলাম।
.
পকেটে ফোন বাজছে।মনে আনন্দ ফিরে এল, ভাবলাম সাবিহা হয়ত। কিন্তু ফোন বের করে দেখি এটা শাইদুল ভাই।
-হ্যালো,
-কি খবর? কাজ হইছে,
-রাগ করে চলে গেছে,
-কিছু বলেনাই?
-নাহ,,
-আরে গাধা তাহলে তো মেয়ে রাজি,,
.
শাইদুল ভায়ের কথা আমার মাথায় কিছু ঢুকল না।আমি জিজ্ঞেস করলাম,
-কিভাবে?
-জানিস না,মৌনতা সম্মতির লক্ষ্যন,
-তাহলে এখন কি করব,
-যা সাবিহার কাছে।
-ও তো অনেক আগেই চলে গেছে,
-গিয়ে দেখ যায়নি,
.
আমি ফোন রেখে এক প্রকার দৌড়ে রাস্তার কাছে পৌছালাম।গিয়ে সামনে তাকাতেই মন টা ভাল হয় গেল।সাবিহা রাস্তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।এক বার মনে হল ও আমার জন্য নয়, রাস্তা পার হতে পারেনি তাই দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু না,রাস্তা মোটামুটি ফাঁকা ও ইচ্ছে করলেই রাস্তা পার হতে পারতো।তার মানে ও রাজি।
ও নিজেও আমাকে ভালবাসে।কথাটা ভাবতেই মন টা আনন্দে ভরে গেল।
.
সাবিহা একবার পিছনে ঘুরে আমার দিকে তাকাল,তারপর আবার মুখ সামনে ঘুরিয়ে নিল।আমি ওর পাশে গিয়ে বললাম,
-আসো আমার সাথে,
.
ও একটুও নড়ল না।
আমি ওর হাত ধরে ফেললাম।আগে ওকে রাস্তা পার করালেও কখনো হাত ধরিনি।কিন্তু এখন একটা অধিকার টাইপ ব্যাপার এসে গিয়েছিল তাই হাত ধরতে সংকোচ হয়নি।রাস্তা পার হয়ে এসে ওর হাত ছেড়ে দিলাম।
.
হাত ছেড়ে দিতেই ও বলল,
-হাত ধরছিলা কেন?
-ভালবাসি তাই,
-আমি তো বাসিনা,
-তুমিও বাসো,
-বলছি তোমাক ভালবাসি?
.
আমি একটু ভেবে বললাম,
-নাও তো বলনি,
-হ্যাঁ ও তো বলিনি,
-মৌনতা সম্মতির লক্ষ্যন,
-মানে?
-চুপ করে থাকা মানে হ্যাঁ,
-আজব তো,
-হুম,ভালবাসার ব্যাপার স্যাপার একটু আজবই,
.
আমার কথা শুনে সাবিহার মুখ হাসি হাসি হল।
ও ওর হাসি লুকিয়ে বলল,
-এসব কে বলছে?শাইদুল ভাই,
.
আমি একটু অবাক হয়ে বললাম,
-তুমি কিভাবে জানো?
.
সাবিহা আমার প্রশ্নের জবাব দিল না,আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, বলো?
.
সাবিহা হাসতে হাসতে জবাব দিল,
-আমি গতকালকেই সব জেনেছি,,
.
আমি এসব শুনে অবাক হলাম।
-তারমানে সকালে যে হেসে হেসে কথা বলছ, ইচ্ছা করেই,
-হুম,তোমাকে রাগিয়ে দেয়ার জন্য,যেন তুমি দ্রুত কিছু করো।কিন্তু এত দ্রুত কিছু করবা ভাবিনি।
.
নিজেকে বোকা মনে হল,বড় সরো রকমের বোকা।শাইদুল ভাই আর সাবিহা দুজনের উপরেই রাগ উঠল।তখনি সামনে বাস চলে আসল।সাবিহা বলল,
-আসো, বাস আসছে,
.
আমি নড়লাম না।ইচ্ছে করছিল না ওঠার।
তখনি সাবিহা আমার হাত ধরে হ্যাচকা টান দিয়ে বাসে উঠিয়ে নিল।মন খারাপ গুলো এক পাশে সরিয়ে আমি সাবিহার দিকে মনোযোগ দিলাম।ওকে খুব সুন্দর লাগছে। আমি জানি ও কিছুক্ষনের মধ্যই বলবে,
-আমিও তোমাকে ভালবাসি,,
আর এটুকুই আমার মন ভাল করার জন্য যথেষ্ট হবে।
.
.
-নাহিদ পারভেজ নয়ন


সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:৩১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×