শান্তি হারিয়ে গেছে ঘোরতর অন্ধকারে
ধমনীতে কলঙ্কের উদ্দাম নাচানাচি,
প্রতি মুহূর্তে হৃদপিণ্ড জানান দেয় তীব্র চিৎকারে
স্তম্ভিত পৃথিবীতে আত্মার বিদীর্ণ হাহাকারে,
ঠাঁই নাই, হবে না’ক ব্যর্থ এ অলীক পিঞ্জরে
যা দেখি আকাশ, বাতাস, দুঃসহ মরু চরাচরে।
আমি সাদা পাতায় হিসেব কষি কলঙ্কের
গুণে গুণে স্তুপ করি মিথ্যে আর মৃত্যুর;
অনিষ্টের জয়জয়কারে বোধ হয় হিংস্র শিহরণ
জ্বালাময় আনন্দে হই স্নাত, আনন্দ অজ্ঞাত।
কালো কালো রক্তের ফোঁটা অমৃত নির্যাস
মনের গহীনে খেলা করে জংলী উচ্ছ্বাস।
সেই একবার অমৃত স্বাদ নেবার দুরন্ত ইচ্ছায় –
কোথেকে লোভের একতাল মায়াজাল,
নিতান্ত অবজ্ঞায় শুষিয়ে নিল সত্যসাধ।
তারপর উপলব্ধি হল -
মিথ্যের আনন্দ বড়ই দীর্ঘস্থায়ী হাহাকারের।
কামাগ্নি, তির্যক রক্ত প্রবাহ, আরও কত –
মত্ত ক্রিয়া-অনুভুতিরা বাড়িয়ে দিল ক্ষুধার মাত্রা
তাতেই অদূর ভবিষ্যতে সহজ হল নরকের যাত্রা।
আশ্চর্য সে শক্তি! তারুণ্যের উন্মাদনায় –
কি অবলীলায় বিচ্ছিন্ন হয়েছি মাটি থেকে
ছুঁয়েছি আকাশ, পেরিয়ে গেছি কয়েক স্তবক;
কে যেন তাতেই হেসে উঠলো হো হো করে,
তাকিয়ে দেখি শুন্যে ভাসি –
এ কোথায় আকাশ নেই, মাটি নেই
চেনা পৃথিবী অচেনা হল, একলা আমি
মনে হল – কেউ কি নেই? অন্তর্যামী।
বয়স হলে, প্রাণশক্তি বড় নির্দয় –
ক্ষুধার্ত আত্মার চিৎকারে কেঁপে কেঁপে উঠি
বাঁচাও আমাকে, উদ্ধার করো।
কি নিদারুণতা! আত্মার আত্মহত্যা চেষ্টা।
কিন্তু সময় ফুরিয়ে গেছে, জানা ছিল না –
কখনো মৃত্যুও সহজলভ্য নয়।
বড়ই সাধুতা তারপর, সেই থেকে –
তীব্র বেদনার নিঃসীম হাহাকারের
মৃদু ধারায় মিথ্যের স্তূপ সরাই;
জানি না কত হাহাকারে হবে পরিস্কার
কোনদিন থেমে যাবে আত্মার চিৎকার!
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:৫৪