একটা বয়সে এসে আমি আবিষ্কার করলাম, আমি আসলে মানুষকে ভয় পাই। একা থাকতেই আমার বেশি ভাল লাগে। কেউ গায়ে পড়ে এসে কথা বলতে থাকলে অপেক্ষা করি, কবে সে চলে যাবে! জনপ্রিয় সব আলোচনা এড়িয়ে যেতে থাকি। কারণ, আমি আবিষ্কার করলাম, শুধু মানুষকেই না, আমি কথা বলতেও ভয় পাই। এ মানুষ এড়িয়ে চলার সবচেয়ে বড় সুফল বোধকরি ছিলো প্রচুর বই পড়া, প্রচুর ভাবতে পারা আর সংগীতে আকণ্ঠ ডুবে থাকতে পারা। প্রদর্শনের কোন প্রশ্নই আসে না, কারণ তখনও কারও শোকেসে আমার জায়গা হয়নি। তাই করতাম, যা ভাল লাগে। রোদ দেখতাম, মাছ দেখতাম, আকাশ দেখতাম, মেঘ দেখতাম, দেখতাম ব্যাগ মাথার উপর দিয়ে ছুটছে মানুষ, বাস স্টপেজ ঘষে চলছে বাস। এই দেখায় আনন্দ ছিলো। আমার নিজস্ব একটা জগৎ ছিলো।
এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সক্রিয় হওয়ার আগের ঘটনা। কলেজে ঢুকেই হঠাৎ নতুন শহরের মত নতুন এক আমিকে আবিষ্কার করলাম। ফেসবুকে খুব সক্রিয় হয়ে গেলাম। আমার যে একটা আপন আর গোপন শহর আছে, তা জানানোর একটা তাগিদ আসলো ভেতর থেকে। কিন্তু এ তাগিদই সব শেষ করে দিলো।
ইদানীং নিজেকে শোকেস সামগ্রী মনে হচ্ছে। আমার সব অনুভূতি সাজিয়ে রাখি ব্যক্তিগত সময়রেখায়। তবুও আমি লেখক না। আমি লেখক হতে চাই না। আমার শুধু ইচ্ছে ছিলো, মানুষ জানুক, মানুষ আসুক, আমার মগজের বাঁপাশে বেড়ে ওঠা একটা শহরে। আমি যেটা জানতাম না, সেটা হলো, সে শহর এ মানুষকেই ভয় পায়। এ পৃথিবীর মুগ্ধ মানুষ শহরের প্রবেশ পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে।
ইদানীং আমার খুব একা লাগে। না আমি আছে, না আমরা।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৯