আমি একটি আন্দোলন দেখেছিলাম;
দেখেছিলাম কীভাবে রক্তজবার মত জ্বলে উঠেছিল
একেকটি ঊর্ধ্বোত্থিত হাত
দেখেছিলাম কীভাবে কৃষ্ণচূড়ার মত দুলে উঠেছিল
একেকটি ঊর্ধ্বোত্থিত হাত
দেখেছিলাম কীভাবে বাঘিনীর মত হিংস্র হয়ে উঠেছিল
একেকটি হরিণীর মত সুকোমল হাত
দেখেছিলাম কীভাবে আদিম পাশবিকতার মত ফুলে ফুলে উঠেছিল
এককটি পেশীবহুল হাতের পেশী
দেখেছিলাম কীভাবে বারুদের মত জ্বলে উঠেছিল কতগুলো মানুষ
দেখেছিলাম কীভাবে প্রতিবাদে মুখর হয়ে গড়ে উঠেছিল একটি আন্দোলন...
আমি কীভাবে দেখেছিলাম?
আমি যে সেই আন্দোলনে ছিলাম না!
আমি কেবল দেখছিলাম,
দেখছিলাম কীভাবে রক্তজবার মত জ্বলে উঠছিল একেকটি হাত
দেখছিলাম কীভাবে কৃষ্ণচূড়ার মত দুলে উঠছিল একেকটি হাত
আর প্রার্থণা করছিলাম...
প্রার্থণা করছিলাম যেন ওই হাতগুলো জয়ী হয়
প্রার্থণা করছিলাম যেন ওই হাতগুলোর অঞ্জলিতে
আমি আমার বিজয়াশ্রু ফেলতে পারি
প্রার্থণা করছিলাম যেন ওই হাতগুলোর বিজয়ে
আমি আপ্লুত হতে পারি
প্রার্থণা করছিলাম যেন ওই হাতগুলোর বিজয়ের মহাকাব্য
আমি ছন্দে গাঁথতে পারি
প্রার্থণা করছিলাম যেন ওই হাতগুলো বিজয়ী হয়...
কে যেন বলেছিল, এই প্রার্থণা করাও আন্দোলন!
আমি তখন খুব খুশি হয়েছিলাম;
আন্দোলন করার আনন্দে আমার বুক ভরে গিয়েছিল
আন্দোলন করার গর্বে আমার বুক স্ফীত হয়ে গিয়েছিল
আন্দোলন করার স্পর্ধায় আমার বুকে সাহসের তুফান এসেছিল
আমি কায়মনোবাক্যে আন্দোলন করেছিলাম...
আর দেখছিলাম
কীভাবে আরো হাত রক্তজবার মত জ্বলে উঠছিল
কীভাবে আরো হাত কৃষ্ণচূড়ার মত দুলে উঠছিল...
কিন্তু আমার হাত ঊর্ধ্বোত্থিত হয়নি
আমার হাত রক্তজবার মত জ্বলে ওঠেনি
আমার হাত কৃষ্ণচূড়ার মত দুলে ওঠেনি
কারণ আমি প্রার্থণা করছিলাম,
আমি কায়মনোবাক্যে প্রার্থণা করছিলাম
আমি ভেবেছিলাম প্রার্থণাই বুঝি আন্দোলন, আন্দোলনই বুঝি প্রার্থণা
আমি ভেবেছিলাম অপকবিতাই বুঝি কবিতা, কবিতাই বুঝি অপকবিতা!
আমি আন্দোলন করিনি...
১৮.০১.২০১২