বর্তমান প্রেমিকা লেডী গাগার সাথে নতুন অ্যালবামের জন্য পোজ দিচ্ছেন কুদ্দুস বয়াতি....
এ যেন রুপকথার প্রেমকাহিনীকেও হার মানায়! আর আপনি এটা জেনে আরও আশ্চর্যান্বিত হবেন যে, রুপকথাকে হার মানানো এমন ঘটনা ঘটেছে আমাদেরই এই দেশে। ঘটনাটি আপনাদের খুলে বলি। আপনারা সবাই জনপ্রিয় বাউল শিল্পী আবদুল কুদ্দুস বয়াতিকে চিনেন। “আমার যমুনার জল দেখতে কালো /স্নান করিতে লাগে ভালো/ যৌবন মিশিয়া গেল জলে” গানের গায়ক কুদ্দুস বয়াতি অজস্র তরুণী ভক্তের হার্টব্রেক করে বর্তমানে এক অসম প্রেমের গভীর জলে হাবুডুবু খাচ্ছেন।
আর তিনি যে রমণীর সাথে প্রেম করছেন তার নাম শুনলে আপনারা এখনই টাস্কি খেয়ে চেয়ার থেকে পড়ে যেতে পারেন। আমাদের দেশের লিজেন্ডারী কুদ্দুস বয়াতি যে রমণীর সাথে লীলাখেলায় মগ্ন তিনি আর কেউ নন,বর্তমান বিশ্বের সাড়াজাগানো পপসম্রাজ্ঞী লেডি গাগা! গাগা!! গাগা!!!
জ্বি, জ্বি আপনি ঠিকই ধরেছেন,ইনি হচ্ছেন সেই গাগা যাকে আপনারা সঙ্গীতের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মুরগীর আদলে ড্রেস পরিহিত দেখতে পান। ইনিই হচ্ছেন সেই গাগা যার প্রেমের আশায় দেবদাস হয়ে বসে আছেন তামাম দুনিয়ার শতকোটি টগবগে তরুণ। ইনিই সেই গাগা, যার গান শুনলে বের হয়ে যায় হাগা। সকল ভক্তের প্রেমের নিবদনে জল ঢেলে দিয়ে লেডী গাগা নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন আমাদের আবদুল কুদ্দুস বয়াতিকে।
লেডি গাগার সাথে রোমান্সের কাহিনীর আপাদমস্তক জানার জন্য আমরা মুখোমুখি হয়েছিলাম কালজয়ী বাউল এবং প্রেম শিল্পী কুদ্দুস বয়াতির। কিন্তু কুদ্দুস বয়াতির বাসার সামনে দেখা যায় অসংখ্য বিদেশী মিডিয়া আর শত সহস্র ভক্তকূলের ভীড়। সকলেই প্রানপণ চেষ্টা করছেন কুদ্দুস বয়াতির সাথে সামান্য কথা বলার জন্য। কোনো কোনো মিডিয়াকে কুদ্দুস বয়াতির ঝুলন্ত টয়লেটের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কারণ তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, তাদের ডাকে সাড়া না দিলেও প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে হলেও তিনি একবার বাইরে আসবেন। লোকজনের ভীড় ঠেলে কুদ্দুস বয়াতির দরজায় কড়া নাড়তেই ভেতর থেকে জানানো হয়, আকাশসংস্কৃতির কোনো মিডিয়ার সাথে কুদ্দুস বয়াতি কথা বলবেন না। দেশের জনগণের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যম দৈনিক আইইউটি হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেবার পর কুদ্দুস বয়াতি আমাদের সাদরে বরণ করে নেন। তার ঘরে ঢুকে সহজেই বোঝা যাচ্ছিলো লেডি গাগার প্রেমে তিনি কতটা মজেছেন কারণ সমগ্র ঘরের দেয়াল জুড়ে লেডী গাগার ‘মুরগী পোশাক’ পরিহিত ছবি শোভা পাচ্ছিলো। আমরা আর বিলম্ব না করে লেডি গাগার সাথে কুদ্দুস বয়াতির সম্পর্ক নিয়ে জিজ্ঞেস করতেই তিনি লজ্জিত হয়ে আমাদের প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে চান এই বলে , “আইচ্চা, ভাবীর কবর(খবর) কী? আপনে ক্রিকেট খেলেন নি?” এরকম আবোলতাবোল কথা বলে এড়িয়ে যেতে চান। আমরা জোর দিয়ে আরো একবার জিজ্ঞেস করার পর তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “ জ্বি জ্বি, গাগার সাথে আমার মন দেয়া নেয়ার যে খবর আপনেরা শুনছেন তা সম্পূর্ন হাছা। আর কিছু জিগাইবেন? আমি গাগার সাথে প্রেম করি না কুতকুত খেলি এতে আপনাদের সমস্যা কুতায় আমি বুঝি না। এই কথা যদি কাঙ্গালিনী সুফিয়ার কানে গেছে তাইলে আপনাদের কেউ দুনিয়ায় থাকবো না কইলাম।” বলে হুঙ্কার ছাড়েন বয়াতি।
“হাজারো তরুণের হার্টথ্রব লেডি গাগার মতো অসামান্য প্রতিভার অধিকারী একজনের সাথে প্রেম করার অনুভূতিটা যদি পাঠকদের বলতেন?” এমন প্রশ্নের জবাবে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বিরক্তির স্বরে তিনি জানান, “ অনুভূতি? খুব্বি সুখের অনুভূতি, ভাষায় বোঝানো সম্ভব না। আরে, গাগার লগে প্রেম কইরা তো আমার খাওয়া,হা* সব বন্ধ। না পারি শান্তিতে ঘুমাইতে, না পারি বাইরে কোথায় বেড়াইতে যাইতে। বাইরে গেলে লোকজন আমার লগে ছবি তুলবে বইল্যা আমার চুল টাইন্যা নাই কইরা দিতাছে। আর এখন বাইরে যে ভীড় লাগছে, বাইরে গেলে নাইড়্যা মাথা না নিয়া মনে হয়না ফিরতে পারুম আর আপনে জিগাইতেছেন আমার অনুভুতি!”
আবদুল কুদ্দুস বয়াতির কথা শুনে সহজেই বোঝা যাচ্ছিলো যে এই প্রেম তার জন্য কত বড় বিড়ম্বনা হয়ে দেখা দিয়েছে। তাই তার মাথা ঠান্ডা করার জন্য আমরা কৌশলে তার প্রেমের বসন্তকালের দিকে আলোচনাকে ধাবিত করি। জানতে চাই কিভাবে লেডি গাগার মনের চোখে তিনি বন্দী হোন, জানতে চাই প্রেমের শুরুর দিকের গল্প। কিন্ত এবারো উত্তাপ ছড়ানো কন্ঠে তিনি উত্তর দেন, “ আপনে হৃতিক রসুনের কুয়ি মিল গেয়া দেকেছেন? ঐখানে দেকবেন সে কিভাবে কম্পুটারের কিবুড টিপে মঙ্গলগ্রহ থেকে এলিয়েন নামায়ে আনে। আমারো একই রকমের কাহিনী। আমি পহেলা বৈশাখের আগে ইবা রহমানের বুইড়া জামাই মাহফুজুর রহমানের টিভি চ্যানেলের হাফ লেডা(হাফ লেডি এর বিপরীত)সাংবাদিক মুন্নী সাহার কাছে বাংলা সংস্কৃতির বেহাল দশা নিয়ে একটা ক্ষোভজর্জর ইন্টারভ্যু দেই। ঐখানে কুমার বিশ্বজিতরে তুলাধুনা করি। ঐ অনুষ্ঠানে আমার রাগ দেখেই মূলত গাগা আমার প্রেমে পড়ে। এরপর আমরা আর পেছনে তাকাই নাই। দিনরাইত খালি ইশকাইপ(Skype) আর ইশকাইপ।হেহেহে।”
সফল হই আমরা। অবশেষে হাসি ফুটে কুদ্দুস বয়াতির মুখে। “শুনতে পাচ্ছি আগামী ঈদে আপনি আর লেডি গাগা দ্বৈত কন্ঠে অ্যালবাম বের করতে যাচ্ছেন।আমাদের এ বিষয়ে কিছু জানান?”
“জ্বি আগামী ঈদে আমি আর গাগা একটি গানের অ্যালবাম বাইর করবো।অ্যালবামের গানগুলো গাগার আগের অ্যালবামের। শুধু আমরা নির্দেশে এইটাকে বাংলায় রুপান্তর করেছি।অ্যালবামের গানগুলো যথাক্রমেঃ নষ্টা পিরিত (BAD ROMANCE), পেপেভাজি (PAPARAZZI) এবং লীলাখেলা( LOVE GAME)। আর একটা কথা বইলা রাখি,আগামী মাসে গাগা বাংলাদেশ আসবো। তখন যদি সাহারা খাতুনের ফুলিশ আমার গার্লপ্রেন্ডের গায়ে একটা হাত দিছে, তাইলে তাগো ঐ হাত ভাইঙ্গা আমি প্রথমালুর বিদ্রোহী সাংবাদিকগো দিয়া দিমু। আর আমার ডেটিংয়ের সময় ফুলিশ এসে যাতে আমার পেরাইভেসি নষ্ট না করে সে ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি কামনা করি।”
বর্তমান যুগের মিউজিশিয়ানদের উদ্দেশ্যে উপদেশ দিতে বললে তিনি হতাশাভরা কন্ঠে বলেন, “তোমাদের কি আর বলিবো রে খোকা, তোমরা ব্যস্ত অ্যাকুষ্টিক নাইট নিয়া, আন্ডার গ্রাউন্ড পাগলামি নিয়া। নাম বদলাইয়া তোমরা গায়ক হইতে চাও। কেউ নামের শেষে এখন আর ‘বয়াতি’ লাগায় না। অথচ দেখো তোমার নামের শেষে বয়াতি লাগাইলে কি সুন্দর লাগে, মনসুর আলী বয়াতি, তোমাগো আইইউটির গিটার হিরু ফয়সাল জিকো, কিবুডিষ্ট তৌসিফ বিন আলম, ভুকালিষ্ট ফাইয়াজ আলাপের নামের শেষে বয়াতি লাগাইলে কি সুন্দর নাম হয়, জিকো বয়াতি, তৌসিফ বয়াতি, ফাইয়াজ বয়াতি । আহ! কি সুন্দর নাম !
আরে ব্যাটা ঐ, তোমাদের কি উপদেশ দিমু আমি। তোমরা আমার একতারারে অপমান করছো। তোমরা যদি অ্যাকুষ্টিক নাইট করতে পারো তাইলে আমার একতারায় কি দোষ করলো। আমার একতারারে নিয়া ‘একতারা নাইট’ করা যায় না? তোমরা একতারারে ভুইলা সেক্সোফোন,কিবুড,গিটার এসব অশ্লীল নাম এবং বিদেশীগো দান করা জিনিস নিয়া ব্যস্ত। এগুলান বাদ দিয়া এখন একতারায় ফিইর্যা আসো। আমি সরকারকে বলবো যে, এগুলা অ্যাকুষ্টিক নাইট বন্ধ করে দিয়ে লোকসঙ্গীত নাইটের আয়োজন করতে। নাইলে আমার ভয় হয়, কোনদিন না তোমরা আবার সবাই কুমার বিশ্বজিতের মতোন একদিনের বাঙালী হইয়া যাও!”
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৪