আগেই লিখেছিলাম যে, সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক যোগাযোগের ব্যর্থতার জন্য শুধু একটি পক্ষকে দোষারোপ করা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। এতে নিজস্ব দোষগুলোকে এড়িয়ে একে অন্যকে দোষারোপ করবার একটা প্রবণতা শুরু হয় যা বিরামহীন চক্রের আকার ধারণ করে ফেলে। আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় “নারীকে পুরুষ বুঝতে পারে না” অথবা “পুরুষের আবেগ কম” বলে যেসকল মীথ আমরা তৈরি করেছি এগুলোর বহুমাত্রিক বাজে ফলাফল পড়ছে তাদের সম্পর্কে। ফলে নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্টার দিকে আমরা যতই অগ্রসর হই না কেন লিঙ্গ বৈষম্য থেকেই যাচ্ছে। কোন না কোনভাবে সম্পর্কের ব্যর্থতার জন্য নারী পুরুষকে আর পুরুষ দায়ী করছে নারীকে। এতে একটি সফল সম্পর্কের সবচাইতে প্রধান উপাদানটির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আজকের যুগের নারী-পুরুষ প্রায় অজ্ঞ। আত্ম-সচেতনতা। শুধু সম্পর্ক কেন, জীবনে সত্যিকার অর্থে সফল হতে হলেও যে নিজেকে জানা কতটা প্রয়োজন তা বুঝতে পারলেই জীবনের উত্থানপতন এবং সম্পর্কের টানাপোড়েনকে আরো বিজ্ঞতার সাথে মেনে নেয়ার মত মানসিকতা তৈরি হওয়া সম্ভব। আর ব্যক্তিত্বের বিকাশ এভাবেই ঘটে, ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে।
তাই নারী অধিকার আন্দোলনের একটা সাব-কালচার হিসাবেই তৈরি হওয়া এই পুরুষ-বিরোধী মীথগুলো থেকে যতদিন না আমরা বের হতে পারছি ততদিন পূর্ণভাবে দুইয়ের মিল সম্ভব নয় এটা বলতে কোন দোষ নেই। এতে বরং নারীর সার্বিক বিকাশ থেমে যাবে বলেই আমার বিশ্বাস। আমাদের পারিবারিক সমাজ ব্যবস্থার ব্যর্থতার জন্য যতটা পুরুষ দায়ী ঠিক ততটাই নারীও। এমনকি হাজার বছরের পুরুষশাসিত সমাজ ব্যবস্থার জন্যও তাদের দুজনের দায় সমান। আর নারীর সার্বিক উন্নতির সাথে সাথে পুরুষের জন্য সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আধুনিক নারীর উপযোগী হয়ে ওঠার জন্য নিজের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটানো। “এখনকার মেয়েরা এমন, এখনকার মেয়েরা তেমন, টাকা থাকলে সব হয়” এরকম চরমমাত্রার অজ্ঞ এবং “ফালতু” মানসিকতা থেকে বের না হতে পারলে ভালোবাসার সাথে সাথে ব্যক্তিজীবনেও সফলতা সম্ভব নয় সেটুকু বুঝতে হবে পুরুষকে। নারীকে নিন্দা আর দোষারোপ করা যে মূলত তার মনস্তাত্ত্বিকে বসববাসরত নীরাপত্তাহীনতা এবং নারীর প্রতি ভয়কেই প্রকাশ করে সে ব্যপারে পুরুষের সচেতনতা ছাড়া তার ব্যক্তিত্বের বিকাশ একেবারেই সম্ভব নয়।
এবার তাহলে পুরুষের মনস্তাত্ত্বিকের আরো কিছু ব্যপারে জেনে নেয়া যাক।
প্রশ্নঃ আমার থেকে কি তবে তার কাজের গুরুত্ব বেশি ?
পুরুষ যখন তার কাজ নিয়ে প্রচন্ডমাত্রায় ব্যস্ত তখন তাকে দেখে মনে হতে পারে যে তার কাছে আপনার হয়ত কোন গুরুত্বই নেই। এমন নয় যে সে ইনসেন্সিটিভ অথবা আপনাকে ইচ্ছা করে অবহেলা করছে। বরং সে আসলে ঐ সময় তার কাজের দুনিয়ায় পুরোপুরি নিমগ্ন।
পুরুষ একটা মুহুর্তে সাধারণত শুধু একটা ইমোশনাল মুডেই অবস্থান করতে পারে। যেমন ধরুন, একজন পুরুষের হয়তবা তার স্ত্রীর সাথে সম্পর্কের বেশ মন্দ স্টেজ যাচ্ছে অথবা ধরুন প্রেমিকার সাথে মাত্র ব্রেক আপ হয়েছে। তার এই ব্রেক আপে তার মন প্রচন্ড খারাপ হলেও সে কিন্তু বন্ধুর সাথে কদিনের একটা আউটডোর ট্রিপ ঠিকই উপভোগ করতে সক্ষম। বন্ধু হয়তোবা জিগ্যেস করলো কিরে কি অবস্থারে ভাবির সাথে ? “ আর বলিস না দোস্ত, সব শেষ রে। আরে খাইসে, দেখ দেখ- কত্ত বড় চিংড়ি।”
অথচ বেশিরভাগ নারীর জন্যই তার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক জীবনের অন্য ক্ষেত্রগুলোকেউ খুব গভীরভাবে স্পর্শ করে, সে যাই করুক না কেন। তাদের জন্য সম্পর্কের চিন্তা বাদ দিয়ে অন্য কিছুতে পূর্ণভাবে নিমগ্ন হওয়া খুবই কঠিন, সেটা উপভোগ করে আবার সম্পর্কের চিন্তায় ফিরে আসাও কঠিন।
এখানে বুঝবার বিষয় এই যে, এমন নয় যে উক্ত পুরুষ যে ক্ষনিকের জন্য তার সম্পর্কের কথা ভুলে যেতে সক্ষম সে তার আবেগকে এড়িয়ে চলছে কিংবা তার আবেগ নেই। একটি নারী যখন তার পুরুষালী এনার্জিতে প্রবেশ করে তার দ্বারাও এটা সম্ভব। পুরুষালী এনার্জি যখন কোন কিছুতে নিবিষ্ট হয়, তখন বাকি সব কিছু উধাও হয়ে যায়।
ধরুন আপনি খুব আবেগপূর্ণ কোন চিন্তার মাঝে রয়েছেন এবং হটাত আপনার প্রেমিক খুব বেরসিক ভাবে এক কাপ চা চেয়ে বসলো। খুব সম্ভব এটা আপনার আবেগকে ব্যাহত করবে এবং হতাশ করবে। ঠিক একইভাবে আপনি যখন তার অ্যাকশন মুডের ভেতর আপনার ইমোশনাল মুড দিয়ে বাধা প্রদান করেন, সেটা তাকেও হতাশ করে এবং যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
নারীর পৃথিবী যেমন আবেগ এবং অনুভুতির স্রোতের সমাহারে তৈরি, পুরুষের পৃথিবী তার থেকে আলদা। তারা জীবনের বেশিরভাগ সময় বসবাস করে সমস্যা, সমাধান এবং চ্যালেঞ্জের মাঝে।
প্রাচীন মীথোলজির মাঝেও বেশিরভাগ সময় পুরুষকে দেখা যায় যুদ্ধজয়, শত্রু, দৈত্য এবং ড্রাগনকে নিয়ে মেতে থাকতে। যেখানে সকল বাধা অতিক্রম করে জয়ের থীম দেখতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে মীথোলজিতে নারীকে বেশিরভাগ সময় খুঁজে পাওয়া যায় অমর কোন প্রেমের কাহিনীতে, তার চ্যালেঞ্জ মুলত তার যোগ্য পুরুষটিকে খুঁজে পাওয়া। এটা বুঝতে পারা খুবই প্রয়োজনীয় যে নারী-পুরুষের ডোমেইন সম্পূর্ণ আলাদা। আর আপনি যদি চান যে আপনার পছন্দের পুরুষটির মাঝে পুরুষালী এনার্জিই অধিক থাকুক তবে তার যে কোন কাজে নিমগ্ন হবার ক্ষমতা তার ব্যক্তিত্বের একটা অংশ হিসাবেই আপনার গ্রহণ করে নেয়া উচিৎ।
আপনার প্রেমিক যদি ভাবতে শুরু করে যে আপনার আবেগগুলো ভুল তখন আপনাদের পুরো সম্পর্কটাই কিন্তু বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। আবেগ তো সঠিক বা ভুল হতে পারে না, তাই না ? কারণ সে আবেগ। ঠিক একইভাবে তার অ্যাকশন মুডে অবস্থানটিও সঠিক কিংবা বেঠিক নয়। এটি তার সে সময়ের সত্য। তবে এর মানে এই নয় যে আপনি আপনার নারীসুলভ অনুভূতি, সংবেদনশীলতা, ইন্টুইশন আর বিজ্ঞতা দিয়ে তাকে সাহায্য করতে পারবেন না। প্রেমিকের জন্য প্রেমিকার দুটি উপহার তাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে ম্যাজিকের মত কাজ করে আর সেগুলো হলো আপনার নারীময় সংবেদনশীলতা আর ইন্টুইশন। পুরুষ আপনার এদুটি গুণ হতে অনেক কিছু শিখতে পারে ঠিক যেমন তার বিশ্লেষণ এবং কার্যসাধন প্রক্রিয়া থেকে আপনার অনেক কিছু শেখার থাকতে পারে।
নিজের আবেগকে কখনো বর্জন করবেন না। আপনার যদি আসলেই মনে হয় যে এই মুহুর্তে তার কাজে আপনার বাধা দেয়া দরকার তবে তাই করুন, শুধু মনে রাখুন যে হয়তোবা শুরুতে সে কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করবে কারণ সে তার পুরুষালী এনার্জির মাঝে আটকে আছে।
প্রশ্নঃ আমাকে সে কিভাবে কষ্ট দেয় বা আহত করে সে ব্যপারে সে এতটা অসচেতন কেন ?
আপনার প্রেমিক যখন কোন বিশেষ কাজে জড়িয়ে যায় এবং আপনাকে অবহেলা করে, সেটা আপনাকে কষ্ট দেয়। কিন্তু সে খুব সম্ভব এ ব্যপারে সচেতন নয় যে সে আপনার কাছ থেকে সরে যাচ্ছে। ব্যপারটা হয়তবা পুরোটাই তার মনের অজান্তে ঘটছে। আপনি তাকে প্রশ্ন করতে পারেন যে, “তুমি কি খেয়াল করে দেখেছ যে আমরা একটা অন্তরঙ্গ মূহূর্তের মাঝে ছিলাম আর ঠিক ঐ ফোনটা আসার পর থেকে তুমি এমনকি আমার দিকে একটা বার চেয়েও দেখোনি!” কিছুটা ধাঁধাগ্রস্থের মতই হয়তবা সে উত্তর দেবে, “ওহ, আচ্ছা।”
আপনি বলতে পারেন যে, “গত দুদিন ধরে তুমি কেমন যেন আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছো। সেদিনই তো সব ঠিকঠাক ছিল, দুজনেই কত খুশি ছিলাম উদ্যমী ছিলাম, কি এমন হলো যে এর মাঝে এমনকি আমাকে তুমি একটা ফোনও করতে পারলে না।” এই প্রশ্নে তার প্রতিক্রিয়া দেখে হয়তবা আপনি প্রচন্ড অবাক হয়ে যাবেন আর কষ্ট পাবেন যে, সে কি এর কিছুই বোঝে না ? এবং সত্যিই তাই, প্রাকৃতিকভাবেই তাকে এভাবে তৈরি করা হয়েছে।
এক ছোট ভাই তার সম্পর্কের ব্যপারে আলোচনা করছিল। আমি তাকে ব্যাখ্যা করছিলাম যে, পুরুষের মনোযোগ তার প্রেমিকা থেকে অন্য কোথাও শিফট হলে সে প্রায় সাথে সাথে তা ধরে ফেলতে সক্ষম। আশ্চর্য্যের ব্যপার এই যে, তার এবং তার বন্ধুর এটা মানতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল। “ভাই, মজা নিচ্ছেন, তাই না?” জবাবটা হলো, “না, মোটেই নয়, পুরুষ যখন তার প্রেমিকার সাথে অবস্থান করে এবং হটাত তার মনোযোগ অন্য কোথাও স্থানান্তর করে, নারী প্রায় সাথে সাথে তার মাঝে এটা অনুভব করতে পারে এবং ইমোশনালি কষ্ট পায়। পুরুষেরা হয়তবা প্রশ্ন করবেঃ “ এইটা কি আমাদের পক্ষে সামলানো সম্ভব ?
পুরুষের কোন ধারণাই নেই তারা কিভাবে নারীকে আঘাত দিয়ে বসে। আর তাই আপনি যখন এটা তাকে জানাবেন, তার দৃষ্টিকোণ জানা থাকলে তা উভয়কেই সাহায্য করবে। তাকে কথাটা এমনভাবে বলুন যেন সে ঘুমিয়ে পড়েছিল আর এইমাত্র তার ঘুম ভেঙেছে। অর্থাৎ তার এই ব্যবহারের জন্য তাকে দোষারোপ না করে বরং তাকে বুঝতে দিন এতে আপনি কিভাবে কষ্ট পান। তাকে “ আমার সাথে থাকা অবস্থায় তুমি আর ফোন রিসিভ করতে পারবে না” না বলে বরং “তুমি যখন কথা বলায় নিমগ্ন হয়ে গেলে সেটা আমাকে কষ্ট দেয়” এভাবে বলতে শিখুন। আপনার অনুভুতির কথা তাকে জানাতে শিখুন। তবেই সে এই ব্যপারটাও ম্যানেজ করতে শিখে নেবে।
নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত না করে যদি আপনি ধরে নেন যে, সে নিজে নিজে বুঝে নেবে কিভাবে সে আপনাকে কষ্ট দিয়েছে তবে সে হয়ত পালটা প্রশ্ন করবে যে, “কিসে কষ্ট পেলে আবার?” কারণ আপনার ওপর থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়ায় যে আপনি এতটা কষ্ট পেতে পারেন সে ব্যপারে তাকে প্রায় অজ্ঞই বলা চলে।
প্রশ্নঃ পুরুষ যখন বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তখন আমি কি করতে পারি ?
পুরুষের মনস্তত্ত্বের একদম গভীরে তারা প্রায় সবাই জীবনের ভারে বিপর্যস্ততা অনুভব করে। খুব সহজভাবে জীবনকে উপভোগ করাটাই পুরুষের জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। সমাজের প্রায় সবকিছু তার কাছে দায়িত্ব এবং বাধ্যবাধকতার মতো। নারীও যে অনেক সময় এমনটা অনুভব করে না তা নয়, তবে বেশিরভাগ পুরুষের জন্য জীবনের বেশিরভাগ সময় সে এমনটাই উপলব্ধি করে থাকে।
ফেসবুকের পেজ দেখেছেন, “লাইফ সাক্স” জাতীয় মটো দিয়ে তৈরি পেইজ ? হ্যাঁ, এটা হলো পুরুষের আন-অফিসিয়াল মটো। এজন্যই সে হয় জীবনকে জয় করবার দিকে নয়তবা এর থেকে পালিয়ে যাবার দিকে চালিত হয়। এজন্যই সে খবরের কাগজে নিমজ্জিত হয়, টেলিভিশনের অ্যাডভেঞ্চার প্রোগ্রামে অব্যাহতি খুঁজে নেয়, নেশায় মুক্তি খুঁজতে শুরু করে, কিংবা প্রচুর বিত্তের পিছে ছোটায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে অথবা মেডিটেশনের মাধ্যমে নিজেকে দৈনিক বাধ্যবাধকতার দুনিয়া থেকে পরিত্রাণ দেবার উপায় খুঁজতে শুরু করে।
দৈনিক জীবন, একটি দেহের ভেতর আটকে থাকা, সম্পর্ক ম্যানেজ করা, সন্তানের ভরণপোষণ, এমনকি খাওয়া-দাওয়া, নিজের অস্তিত্বটা রক্ষা করাই পুরুষের জীবনের একটা বড় বোঝা আর চ্যালেঞ্জ, যে চ্যালেঞ্জে হয় তাকে জিততে হবে নয়তোবা তা থেকে পালিয়ে যেতে হবে।
অন্যদিকে নিজের জীবনের সাথে একজন নারী গভীরভাবে জড়ি্যে থাকার কারণেই তার কাছে পুরুষের জীবনের এই জয় কিংবা পরিত্রাণের চাহিদাটি বুঝতে পারা খুবই কঠিন। অথচ বেশিরভাগ পুরুষের জন্য এমনকি একটি শরীরের ভেতর থাকাটাও মাঝে মাঝে কষ্টকর। যোদ্ধা ক্যাটাগরির পুরুষ তার মন এবং শরীরকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যেতে চাইবে, তার ভেতরের শক্তি দিয়ে জীবনকে জয় করবার দিকে সে মনোনিবেশ করবে, আর অন্যরা মুক্তির জন্য অন্য কোন পথ খুঁজে বের করবে।
যতদিন না একজন পুরুষ তার মাঝের ভালবাসার অনুশীলন করতে সক্ষম হয়ে উঠে ততদিন তার কাছে তার কাজ থেকে শুরু করে সম্পর্ক এবং বাকি সবকিছুই বোঝাস্বরূপ। জীবন যেন তাকে ক্রুশবিদ্ধ করে রেখেছে। আধ্যাতিকভাবে পরিপক্ক একজন পুরুষ এই কষ্টের মাঝেও তার ভালবাসার চর্চা করতে শিখে। এমনকি তারপরেও তার কাছে জীবনকে প্রতিনিয়ত আত্মত্যাগ মনে হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
এই জায়গাটা আমি কিছুটা অতিরঞ্জিত করে ফেলছি, আর সেটা আসলে এই পয়েন্টটার গুরুত্ব বোঝাবার জন্যই। সত্যিই পুরুষেরা সর্বদাই তার জীবনকে নিয়ে কিছু একটা করবার দিকে মনোনিবেশ করছে, কারণ পারফেকশন তার কাছে অনন্তকাল ধরে চলা এক লক্ষ্যের নাম। আর সেটা ছাড়া সে পরিতৃপ্ত হতে ব্যর্থ। জীবনের সবরকম দায়দায়িত্ব, সংগ্রাম আর সীমাবদ্ধতার মাঝেও সম্পর্কে ভালোবাসার চর্চা তাই খুব কম সংখ্যক ব্যক্তিই সঠিকভাবে করতে সক্ষম।
প্রেমিকের বাছাইকৃত প্রেমিকা হিসাবে আপনি যেসব উপহার তাকে দিতে পারেন তার মাঝে আপনার নারীসুলভ এনার্জি আর আকর্ষণ অন্যতম। জীবনের দিকে পুরুষকে সবথেকে বেশি টানতে পারে আর প্রেরণা যোগাতে পারে আপনার নারীসুলভ দীপ্তি আর প্রভা, আর নারীর ভালবাসার শক্তিই পুরুষকে শক্তি যোগায় জীবনযুদ্ধের সবচাইতে কঠিন মুহূর্তগুলোকে সহ্য করে সামনে এগিয়ে যাবার পথে।
আপনার দীপ্তিময়তা আর নারীসুলভ আকর্ষণের এই এনার্জি আপনি হয়ত প্রকাশ করতে পারেন একটি খাঁটি হাসির মাধ্যমে, তার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারেন আপনার চোখের দৃষ্টিতে, আপনার হাল্কা স্পর্শ তাকে নতুন করে বাচবার পথে উজ্জীবিত করে তুলতে পারে, এমন যে কোন কিছু যা তার শরীর মন এবং আবেগকে শক্তি, ভালোবাসা আর জীবনিশক্তি দিয়ে ভরে দিতে পারে এর সবই হতে পারে পুরুষের জন্য আপনার একান্ত উপহার। আর এভাবেই সে এই আপাত সংগ্রামময় পৃথিবীতে তার সকল আনন্দ আর উল্লাসের উৎস হিসাবে আপনার গুরুত্ব অনুধাবন করবার মত সক্ষম এবং বিজ্ঞ হয়ে উঠতে শুরু করবে।
চলবে।
আগের পর্ব
Click This Link
পরের পর্ব
Click This Link
https://www.facebook.com/DoctorXBD
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫২