শারীরিক অসুস্থতার জন্য অনলাইনে বলতে গেলে আসা হয়ই না। তারপরও গত কয়েকদিন যাবত যখনই অনলাইনে আসি প্ল্যাকার্ড ও ফেষ্টুন সহকারে কিছু জীব'কে দেখি শহর থেকে কুকুর নিধণের দাবী জানাতে। এই দাবীর সাথে আমাদের দক্ষিণের মেয়র সাহেবও নাকি একমত। এই নিধনকারীদের দাবি, কুকুর নাকি যেখানে সেখানে মলত্যাগ করে পরিবেশ নষ্ট করে, মানুষকে কামড়ায়, বাইক চালকদের চলার পথে বিঘ্ন ঘটায়।
আমি আশ্চর্য হয়ে যাই, যেই দোষগুলো কুকুরদের দেয়া হচ্ছে, সেই প্রতিটি দোষ এই শহরের মানুষগুলো উপর্যুপরি বছরের পর বছর করে যাচ্ছে। পারলে এই শহর থেকে কিছু মানুষ কমান দেখি কিছু নিয়মকানুন করে, তাহলে এই শহরের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
আমি শহরের যে এলাকায় থাকি সেখানকার কুকুর গুলো এখানকার কোন মানুষকে কামড়িয়েছে বা তাড়া করেছে এটা এখানকার কেউ বলতে পারবে না। তাদের নিজেদের খাবারটা তারা প্রকৃতি থেকে জোগাড় করে নেয়। তারপরও কয়েকজন মহতপ্রাণ মানুষ প্রকৃতির এই সন্তানদের খাবারের সংস্থান করার চেষ্টা করে, যা দেখে মনটা আদ্র হয়ে উঠবে যে কোন মানবের। আমি প্রতিনিয়ত দেখি যে কয়েকজন মানুষরুপি এঞ্জেল এই কাজটা করে, তারা আমাদের সমাজের তথাকথিত ড্যাডি-মাম্মির সন্তান না, অতি সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষ, যারা এই খাবারের ছবি ফেবু'তে দিয়ে লাইক কমেন্ট আশা করে না।
মাদার তেরেসা'র একটা কথা এখানে প্রাসঙ্গিক হবে। তিনি বলেছিলেন - "দৃশ্যমান সৃষ্টির প্রতি যদি তোমার ভালোবাসা না আসে, তাহলে অদৃশ্য স্রষ্টার প্রতি তোমার ভালোবাসা কিভাবে আসবে?"
এই পৃথিবীটা শুধু মানুষের একার না, প্রতিটি প্রাণ এরই এখানে সমান অধিকার, এটা ভুলে গিয়ে শুধু নিজে একা বাঁচার চেষ্টা যে ঠিক ছিলো না, তা কি কভিড-১৯ এসে আমাদেরকে এখনো শেখায়নি?