somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের গুটি খেলায় আপনিও আসুন : আমাদের ঐতিহ্য সম্পর্কে জানুন : ঢাকা ছেড়ে মুক্ত বাতাসে ঘুরে আসুন

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ও রে আমার উত্তইরা খেউরাল ক.......ই.........রে..... হে.....ই ........য়ো....

আ..বা. দিয়া গুটি ধর..........রে হেই........য়ো

দক্ষিণারা গুটি নিয়া গে....লো........রে হেই........য়ো



১৩ জানুয়ারি ২০১২ আগামি শুক্রবার পৌষের শেষ বিকালে জমিদার আমলের তালুক পরগনার সীমানায় ২শ বছরের ঐতিহ্যবাহী গুম গুটি খেলা অনুষ্ঠিত হবে। খেলাকে ঘিরে ফুলবাড়ীয়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে উৎসবের আমেজ বিরাজ করেছে ।

খেলা শুরু হওয়ার স্থান :

ফুলবাড়িয়া ও ময়মনসিংহের মধ্যবর্তী খোলা ময়দান ময়মনসিংহ ফুলবাড়িয়া রোডের কিনার ঘেষে : দশমাইল ও লক্ষ্মীপুর বাজারের মধ্যবর্তী
শুরু হওয়ার সময় : বিকাল ৪.০০টা

গুম গুটি খেলার নেই কোন আয়োজক নেই পুরস্কার, তারপরও একই স্থানে একই সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গুম গুটি খেলা। হাজার হাজার গুটি খেলোয়াড়ের মুখে জিততই আবা দিয়া গুটি ধররে ... হেইও শ্লোগানে মুখরিত হবে আকাশ বাতাস।

মুক্তাগাছা জমিদার রাজা শশীকান্তের সাথে ত্রিশালের বৈলরের হেম চন্দ্র রায় জমিদারের জমির পরিমাপ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। জমিদার আমলের শুরু থেকেই তালুকের প্রতি কাঠা জমির পরিমাপ ছিল ১০ শতাংশে পরগনার প্রতি কাঠা জমির পরিমাপ ছিল সাড়ে ৬ শতাংশে । একই জমিদারের ভূ খন্ডে দুই নীতির প্রতিবাদে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে ওঠে। জমির পরিমাপ নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ মিমাংসা কল্পে লক্ষ্মীপুর গ্রামের বড়ই আটা নামক স্থানে যেখানে শুরু তালুক পরগনার সীমানা সেখানে এ গুটি খেলার আয়োজন করে । গুটি খেলার শর্ত ছিল গুটিটি যে দিকে যাবে তা হবে তালুক পরাজিত অংশের পরগনা । জমিদার আমলের সে গুটি খেলায় মুক্তাগাছা জমিদারের প্রজারা বিজয়ী হয় । আজও তালুক -পরগনার জমির পরিমাপ একইভাবে চলছে ।

১ মন ওজনের পিতলের গুটি ডাক ঢোলের তালে তালে নেচে গেয়ে তালুক-পরগনার সীমানায় নিয়ে আসার পর গুটির উপর জিততই আবা দিয়া গুটি ধররে এ ম্লোগান মুখে নিয়ে এক সাথে ঝাঁপিয়ে পড়বে হাজার হাজার মানুষ। গুটি খেলায় টানা হেচড়া সবই হয় কিন্তু হয়না কোন মারামারী ।

হাজার হাজার মানুষ নিয়ন্ত্রনে থাকে না কোন পুলিশ বা অন্য কোন আইন শৃঙ্খলারাকারী বাহিনী এ খেলায় আজ পর্যন্ত ঝগড়া বিবাদের কোন ঘটনা ঘটেনি।

তবে ছোট বেলা থেকে একটা বিষয় দেখে আসছি, গুটি খেলার হাজার হাজার খেলোয়ার নিয়ে এই স্রোতটা যে দিকে যায়, সেখানকার আবাদি জমিগুলো তছনছ করে দিয়ে যায়। এতে অনেক কৃষকেরই ক্ষতি হয়।

৩/৪ বছর আগে মানুষের পায়ের তলায় পিষ্ঠ হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল বলে এলাকাবাসী জানান । প্রতি বছর পৌষের শেষ বিকালের এ খেলাকে ঘিরে অতি প্রাচীনকাল থেকেই লক্ষ্মীপুর, বড়ই আটা, ভাটিপাড়া বালাশ্বর, শুভরিয়া, কালীবাজাইল, তেলিগ্রাম (এটা আমার গ্রাম), সারুটিয়া, গড়বাজাইল, বাসনা, দেওখোলা, কুকরাইল, বরুকা, জোরবাড়ীয়া, আন্ধারিয়া পাড়া, দাসবাড়ী, কাতলাসেন সহ আশে পাশের ১০/১২টি গ্রামে শুরু হয় উৎসবের আমেজ।

ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা পড়ে নতুন নতুন জামা কাপড় ,শতাধিক গরু জবাই হয় গ্রামের বিভিন্ন স্থানে । গুটি খেলা এক নজর দেখার জন্য দূরদূরান্তের আত্মীয় স্বজন ভীড় করে গ্রামে, চর্তুদিকে উচ্চ স্বরে মাইক বাজে । ঢাক ঢোলের বাজনার তালে তালে গ্রামের আবাল-বৃদ্ধবণিতা নেচে ওঠে।

ঐতিহ্যবাহী গুম গুটি খেলা এক নজর দেখার জন্য সকাল থেকে পার্শ্ববর্তী মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহ সদর, ত্রিশাল, ভালুকা উপজেলা থেকে শত শত মানুষ ভীড় করে খেলা স্থলে । তালুক-পরগনার সীমানা লক্ষ্মীপুর গ্রামের বড়ই আটা নতুন ব্রীজ। যেখানে ২শ বছর আগে জমিদারের প্রজারা খেলে ছিল শক্তি পরিবার এ অদ্ভুদ খেলা । হাজার হাজার গুটি খেলোয়াড়ের ১ মন ওজনের গুটি টানা হেচড়ার পর হঠাৎ করেই গুটিটি হারিয়ে যায়, এ জন্য খেলাটির নাম করন করা হয়েছে গুম গুটি।


মুর্তজা হাসান খালেদ
গ্রাম : তেলীগ্রাম (বাল্লাপাড়া) পো.- তেলীগ্রাম বাজার
থানা : ফুলবাড়িয়া, জেলা : ময়মনসিংহ
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৮:২৭
১১টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শুধু হিংস্র, আগ্রাসী নয় ভারত লুটেরা, লোভী এবং সাম্রাজ্যবাদীও বটে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:১৪

শুধু হিংস্র, আগ্রাসী নয় ভারত লুটেরা এবং লোভীও....

জন্মলগ্ন থেকেই ভারতের হিংস্র ও আগ্রাসী। পাকিস্তানের সাথে যোগ দিতে চাওয়া এবং স্বাধীন থাকতে চাওয়া কিছু অঞ্চল যেমন হায়দ্রাবাদ, ত্রিবাংকুর, ভূপাল, যোধপুর, জুম্ম-কাশ্মীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গলা-বুক জ্বালা দেখে অম্বলের ওষুধ দিয়েছিলেন চিকিৎসক, চ্যাটজিপিটি ধরল ক্যানসার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:২৯






ক্যানসার ধরল চ্যাটজিপিটি! চিকিৎসকেরা ভুল ওষুধ দিয়েছিলেন। তাতে অবস্থা আরও খারাপ হয় মহিলার। চ্যাটজিপিটিই বলে দেয়, কী রোগ বাসা বেঁধেছে তলে তলে। চিকিৎসকেরা ধরতেই পারেননি। কিন্তু চ্যাটজিপিটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০০৮- ২০২৪, হাসিনা ভারতের জনম জনমের ঋণের কিছুটা শোধ করেছেন মাত্র

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১০

২০০৮- ২০২৪, হাসিনা ভারতের জনম জনমের ঋণের কিছুটা শোধ করেছেন মাত্র

এআই দ্বারা তৈরিকৃত রাজনৈতিক কার্টুন—যেখানে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অসাম্যতা ও রাজনৈতিক নির্ভরতার প্রতীকী উপস্থাপন করা হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিক্ষকদের দ্বৈত চরিত্র এবং বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:১৬


বাংলাদেশে শিক্ষার মান নিয়ে সবার মুখে নানা রকম কথা শোনা যায় । কেউ কেউ বলছেন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নতি হচ্ছে , কেউ বলে দিন দিন তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। এপিআই প্ল্যান্ট

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:১৮




ওষুধে দুটো উপাদান থাকে। ওষুধের যে রাসায়নিক উপাদানটি মূলত রোগ সাড়ানোর কাজ করে, সেটিকে বলে এপিআই। দ্বিতীয় উপাদানটিকে সহকারি উপাদান বলে, যেমন— স্টার্চ, রং বা ফ্লেভার।

এপিআইয়ের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×