কমন রুমের বারান্দায় অনেক মেয়ের জটলা। কারনে অকারনে হি হি হি লেগেই থাকে। ক্লাস নাইনে ওঠার পর বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সুযোগ হয়েছে। কমন ক্লাসগুলো এক সাথেই হয়। আর বিজ্ঞানের গুলো, অন্য একটি রুমে। বিজ্ঞানের ক্লাশরুমটি মেয়েদের কমন রুমের ওপাশে, তাই কমন রুম পার হয়ে বিজ্ঞান ক্লাশ করতে যেতে হয়।
আমি আমার সহপাঠি মেয়েদের সাথে খুব সহজে ঘনিষ্ঠ হতে পারি না। সব সময় এক অজানা দুরত্ত থাকে। আর এখন প্রতিদিন কমন রুমের সেই হিহিহি মেয়েদের সামনে দিয়ে দিনে দুই তিনবার যেতে আসতে হয়। আমিতো লজ্জায় মরি মরি। কমন রুমের বারান্দা টুকু দৌড়ে পার হতে পারলেই যেন বাঁচি।
এর মধ্যে নিরা নামের একটি মেয়ে আমাদের ক্লাশে ভর্তি হল, মানবিক বিভাগে। মেয়েটিকে প্রথম দেখেই বুকের মধ্যে এক ধাক্কা খেলাম। লম্বা চুল, গোলগাল চেহারা । স্বাস্থ্য অন্য মেয়েদের চেয়ে একটু বেশিই ভালো। ক্লাস নাইনে পড়লেও এক পূর্ণযুবতী। কিন্তু আমি তাকে মোটা বলতে রাজি নই। স্কুলে ইউনিফর্ম না থাকায় ইচ্ছে মত নিত্য নতুন পোশাক পরা যায়। প্রতিদিন নিরা নতুন পোশাক পরে স্কুলে আসে। দিন যায় সপ্তাহ যায় কিন্তু নিরার নতুন পোশাক যেন শেষ হয় না। গ্রামের স্কুলেও শহুরে পোশাকের ছোঁয়া তার মাঝেই ছিল। প্রতিদিন সবার অজান্তে চেয়ে থাকি কিন্তু একটু কথা বলার সাহস হয় না।
স্কুলে ভালো ছাত্র হিসেবে আমার সুনাম আছে। প্রতিবছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন না করেও ক্লাসে প্রথম হওয়ায় মঞ্চে আমার জন্য একটা পুরস্কার বরাদ্দ থাকে। সেই সুনামের খবর নিরার জানতেও বাঁকি রইলনা। একদিন স্কুল ছুটির পর রাস্তায় দাঁড়িয়ে কারও জন্য অপেক্ষা করছিলো, দূর থেকে দেখেই শরীরের মধ্যে এক উত্তাপ অনুভব শুরু হল। কাছাকাছি আসতেই মুখ আলো করে হেঁসে বলল-
রুদ্র, আমি নিরা । গভঃ গার্লস স্কুল থেকে তোমাদের এখানে ভর্তি হলাম।
আমতা আমতা করে বললাম, তুমি গার্লস স্কুলে পড়তে?
-হ্যাঁ, বাবার ব্যবসায় সমস্যা হওয়ায় আমার আর শহরে পড়া হলনা।
ওর দিকে না তাকিয়েই বললাম, ওখানে কি সব মেয়েরাই তোমার মত সুন্দর?
- আমি সুন্দর? হিহিহি। গার্লসে তো আমি এক নম্বরের মুটকি। আচ্ছা আমাকে তোমার সুন্দর মনে হল কেন?
বললাম, তুমি সুন্দর তাই সুন্দর মনে হয়েছে। আর আমি মিথ্যে বলিনা।
-তাই? তা হলে এই কয় দিনেও তো আমার সাথে পরিচিত হলে না, আবার এখন ও আমার দিকে না তাকিয়েই কথা বলছো!
তাকিয়ে দেখলাম চিকন করে কাজল দেওয়া অপূর্ব সুন্দর দুটি চোখ আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েদের চোখে চোখ রাখার অভ্যেস আমার নেই। কিন্তু কোন মেয়ের চোখও যে মিষ্টি করে হাঁসতে পারে, আজই প্রথম দেখলাম।
আমাকে কিছুই বলতে না দেখে বলল ,
- আর তুমি তো ফার্স্টবয়, তোমার তো অহংকার থাকবেই। আমারই উচিৎ তোমার সাথে আগে কথা বলার , তাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম।
আমি যে অহংকারী নই তার প্রতিবাদ করার জন্য ভেতরে কথার ঝড় বইছিল, কিন্তু কিছুই বলতে পারলাম না। শুধু চুপচাপ নিরার কথা শুনছিলাম। কি সুন্দর করে কথা বলে নিরা । প্রথম পরিচয়ে মেয়ে হয়েও সে অনর্গল কথা বলে চলেছে। খুব তাড়াতাড়িই যেন বাড়ির গেটে এসেগেছি। বললাম, তোমার বাড়ি কোথায়?
-পাশের গ্রামে। তোমাকে একদিন নিয়ে যাবো। এটাই কি তোমাদের বাড়ি?
বললাম হ্যাঁ। সময় পেলে এসো।
- আচ্ছা, ভালো থেক। কাল দেখা হবে, বলে পা বাড়ালো নিরা ।
পরের দিন সকালে একটু আগেই স্কুলে গেলাম। জানি দেখা হলে হয়তো কথা বলতে পারবো না, কিন্তু কিসের যেন এক অদৃশ্য টানে ছুটে চলেছি।
প্রথম ক্লাশে চোখাচোখি হল। ক্লাশ শেষে স্যারের সাথে কমন রুমে চলে গেলো। আবার ফিরে আসলো পরের ক্লাসে। ক্লাস শেষ হল কিন্তু কোন কথা হল না।
ক্লাশ শেষে রাস্তায় নেমেই দেখলাম নিরা দাঁড়িয়ে আছে। কাছে আসতেই সেই মন ভালো করা আলোকিত এক হাঁসি।
-কি আজকেও কি আমাকে সুন্দর লাগছে?
বললাম হ্যাঁ, তবে...
-তবে কি? নিরা হেঁসে জানতে চাইলো।
নিচের দিকে তাকিয়ে বললাম, তুমি আজ কাজল পরনি। কাজল পরলে তোমাকে আরও সুন্দর দেখায়।
- বাব্বা, একবার তাকিয়েই তুমি এত্তকিছু খেয়াল করলে? আচ্ছা এখন থেকে আমি প্রতিদিন কাজল পরে আসবো।
আবারও বাড়ির গেটে এসে গেছি। বাড়িটা একটু দূরে হলেই ভালো হতো। রাস্তা ছাড়া তো কথা বলারই সুযোগ হয় না। বিজ্ঞান ক্লাশে যাবার সময় যদিও কমন রুমের বারান্দায় দেখা হয়, কিন্তু কোন কথা বলতে পারিনা।
এভাবেই প্রায় তিন মাস কেটে গেলো। নিরা আমার মনের মাঝে কল্পনার মানবীর যায়গা দখল করেছে। কিন্তু তাকে যে আমার ভীষণ ভালো লাগে এই কথাটা কখনো বলতে পারিনি। পাছে সে খারাপ ভেবে বসে! আমার ভীষণ জ্বর ,স্কুলে যেতে পারছিনা। তিন দিনের দিন নিরা এসে হাজির। ভাবি তাকে আমার রুমে নিয়ে এসেছে। সে চেয়ারটা সরিয়ে আমার বিছানার পাশে বসলো। কথার ফাঁকে আমার তপ্ত কপালে নিরার হাত। হিম শীতল এক ভালো লাগায় আমার শরীর শিউরে উঠলো।চুপচাপ কেটে গেল কিছুটা সময়। যাবার সময় বলল,
-জানিনা আবার কবে দেখা হবে, ভালো থেক।
আমার জ্বর সারার আগেই স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি হয়ে গেল। আমার আর সময় কাটেনা। আম বাগানের আম চুরি, খুব ঝাল করে কাঁচা আম খাওয়া, মধ্যপুকুরে সাঁতারকাটা কোন কিছুতেই আমার মন বসেনা। সাইকেল নিয়ে কয়েকদিন বিকেলে নিরাদের গ্রামেও গেলাম। যদি দেখা হয়ে যায়। কিন্তু হয়না। লজ্জায় কাওউকে জিজ্ঞেস করতেও পারিনা। অনেক ভেবে রাত জেগে একটি জলছবি আঁকা কাগজে শুধু মাত্র দুটি লাইন লিখলাম।
“নিরা,
তোমাকে ছাড়া আমার দিন কাটেনা,
কিন্তু লজ্জায় বলতে পারিনা।
রুদ্র”
ছুটি শেষে নিরাকে দেব এই ভেবে গোলাপ ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে ভাঁজ করে অনেক যত্নে লুকিয়ে রাখলাম। অবশেষে ছুটি শেষ, সকাল সকাল নতুন জামা প্যান্ট পরে স্কুলে গেলাম। চিঠিটা যত্ন করে লুকিয়ে রাখলাম, সুযোগ মত নিরাকে দিতে হবে।
গোপাল স্যারের পেছনে পেছনে মেয়েরা ক্লাশে ঢুকল। আমি মুখে সলজ্জ হাঁসি নিয়ে নিরাকে খুজছি।একে একে সবাই আসলেও নিরা নেই। গোপাল স্যার রোল কল শেষে চোখ মুছতে শুরু করলেন। সবাই মুখ চাওয়াচায়ি করছি, স্যারের হঠাৎ কি হল! অবশেষে আস্তে আস্তে নিচু স্বরে বললেন,
গত ছুটিতে নিরা তার মামার বাড়ি খুলনা তে গিয়েছিলো, সেখানে এক লঞ্চ ডুবিতে...।
স্যারের শেষ কথাগুলো আমার আর শোনা হয়নি। দেখা হয়নি চিকন করে কাজল পরা চোখ।
কমন রুমের বারান্দায় অনেক মেয়ের জটলা। কারনে অকারনে হি হি হি লেগেই আছে। ক্লাস নাইনে ওঠার পর বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সুযোগ হয়েছে। কমন ক্লাসগুলো এক সাথেই হয়। আর বিজ্ঞানের গুলো, অন্য একটি রুমে। বিজ্ঞানের ক্লাশরুমটি মেয়েদের কমন রুমের ওপাশে, তাই কমন রুম পার হয়ে বিজ্ঞান ক্লাশ করতে যেতে হয়।
আমি আমার সহপাঠি মেয়েদের সাথে খুব সহজে ঘনিষ্ঠ হতে পারি না। সব সময় এক অজানা দুরত্ত থাকে। আর এখন প্রতিদিন কমন রুমের সেই হিহিহি মেয়েদের সামনে দিয়ে দিনে দুই তিনবার যেতে আসতে হয়। আমিতো লজ্জায় মরি মরি। কমন রুমের বারান্দা টুকু দৌড়ে পার হতে পারলেই যেন বাঁচি।
এর মধ্যে নিরা নামের একটি মেয়ে আমাদের ক্লাশে ভর্তি হল, মানবিক বিভাগে। মেয়েটিকে প্রথম দেখেই বুকের মধ্যে এক ধাক্কা খেলাম। লম্বা চুল, গোলগাল চেহারা । স্বাস্থ্য অন্য মেয়েদের চেয়ে একটু বেশিই ভালো। ক্লাস নাইনে পড়লেও এক পূর্ণযুবতী। কিন্তু আমি তাকে মোটা বলতে রাজি নই। স্কুলে ইউনিফর্ম না থাকায় ইচ্ছে মত নিত্য নতুন পোশাক পরা যায়। প্রতিদিন নিরা নতুন পোশাক পরে স্কুলে আসে। দিন যায় সপ্তাহ যায় কিন্তু নিরার নতুন পোশাক যেন শেষ হয় না। গ্রামের স্কুলেও শহুরে পোশাকের ছোঁয়া তার মাঝেই ছিল। প্রতিদিন সবার অজান্তে চেয়ে থাকি কিন্তু একটু কথা বলার সাহস হয় না।
স্কুলে ভালো ছাত্র হিসেবে আমার সুনাম আছে। প্রতিবছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন না করেও ক্লাসে প্রথম হওয়ায় মঞ্চে আমার জন্য একটা পুরস্কার বরাদ্দ থাকে। সেই সুনামের খবর নিরার জানতেও বাঁকি রইলনা। একদিন স্কুল ছুটির পর রাস্তায় দাঁড়িয়ে কারও জন্য অপেক্ষা করছিলো, দূর থেকে দেখেই শরীরের মধ্যে এক উত্তাপ অনুভব শুরু হল। কাছাকাছি আসতেই মুখ আলো করে হেঁসে বলল-
রুদ্র, আমি নিরা । গভঃ গার্লস স্কুল থেকে তোমাদের এখানে ভর্তি হলাম।
আমতা আমতা করে বললাম, তুমি গার্লস স্কুলে পড়তে?
-হ্যাঁ, বাবার ব্যবসায় সমস্যা হওয়ায় আমার আর শহরে পড়া হলনা।
ওর দিকে না তাকিয়েই বললাম, ওখানে কি সব মেয়েরাই তোমার মত সুন্দর?
- আমি সুন্দর? হিহিহি। গার্লসে তো আমি এক নম্বরের মুটকি। আচ্ছা আমাকে তোমার সুন্দর মনে হল কেন?
বললাম, তুমি সুন্দর তাই সুন্দর মনে হয়েছে। আর আমি মিথ্যে বলিনা।
-তাই? তা হলে এই কয় দিনেও তো আমার সাথে পরিচিত হলে না, আবার এখন ও আমার দিকে না তাকিয়েই কথা বলছো!
তাকিয়ে দেখলাম চিকন করে কাজল দেওয়া অপূর্ব সুন্দর দুটি চোখ আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েদের চোখে চোখ রাখার অভ্যেস আমার নেই। কিন্তু কোন মেয়ের চোখও যে মিষ্টি করে হাঁসতে পারে, আজই প্রথম দেখলাম।
আমাকে কিছুই বলতে না দেখে বলল ,
- আর তুমি তো ফার্স্টবয়, তোমার তো অহংকার থাকবেই। আমারই উচিৎ তোমার সাথে আগে কথা বলার , তাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম।
আমি যে অহংকারী নই তার প্রতিবাদ করার জন্য ভেতরে কথার ঝড় বইছিল, কিন্তু কিছুই বলতে পারলাম না। শুধু চুপচাপ নিরার কথা শুনছিলাম। কি সুন্দর করে কথা বলে নিরা । প্রথম পরিচয়ে মেয়ে হয়েও সে অনর্গল কথা বলে চলেছে। খুব তাড়াতাড়িই যেন বাড়ির গেটে এসেগেছি। বললাম, তোমার বাড়ি কোথায়?
-পাশের গ্রামে। তোমাকে একদিন নিয়ে যাবো। এটাই কি তোমাদের বাড়ি?
বললাম হ্যাঁ। সময় পেলে এসো।
- আচ্ছা, ভালো থেক। কাল দেখা হবে, বলে পা বাড়ালো নিরা ।
পরের দিন সকালে একটু আগেই স্কুলে গেলাম। জানি দেখা হলে হয়তো কথা বলতে পারবো না, কিন্তু কিসের যেন এক অদৃশ্য টানে ছুটে চলেছি।
প্রথম ক্লাশে চোখাচোখি হল। ক্লাশ শেষে স্যারের সাথে কমন রুমে চলে গেলো। আবার ফিরে আসলো পরের ক্লাসে। ক্লাস শেষ হল কিন্তু কোন কথা হল না।
ক্লাশ শেষে রাস্তায় নেমেই দেখলাম নিরা দাঁড়িয়ে আছে। কাছে আসতেই সেই মন ভালো করা আলোকিত এক হাঁসি।
-কি আজকেও কি আমাকে সুন্দর লাগছে?
বললাম হ্যাঁ, তবে...
-তবে কি? নিরা হেঁসে জানতে চাইলো।
নিচের দিকে তাকিয়ে বললাম, তুমি আজ কাজল পরনি। কাজল পরলে তোমাকে আরও সুন্দর দেখায়।
- বাব্বা, একবার তাকিয়েই তুমি এত্তকিছু খেয়াল করলে? আচ্ছা এখন থেকে আমি প্রতিদিন কাজল পরে আসবো।
আবারও বাড়ির গেটে এসে গেছি। বাড়িটা একটু দূরে হলেই ভালো হতো। রাস্তা ছাড়া তো কথা বলারই সুযোগ হয় না। বিজ্ঞান ক্লাশে যাবার সময় যদিও কমন রুমের বারান্দায় দেখা হয়, কিন্তু কোন কথা বলতে পারিনা।
এভাবেই প্রায় তিন মাস কেটে গেলো। নিরা আমার মনের মাঝে কল্পনার মানবীর যায়গা দখল করেছে। কিন্তু তাকে যে আমার ভীষণ ভালো লাগে এই কথাটা কখনো বলতে পারিনি। পাছে সে খারাপ ভেবে বসে! আমার ভীষণ জ্বর ,স্কুলে যেতে পারছিনা। তিন দিনের দিন নিরা এসে হাজির। ভাবি তাকে আমার রুমে নিয়ে এসেছে। সে চেয়ারটা সরিয়ে আমার বিছানার পাশে বসলো। কথার ফাঁকে আমার তপ্ত কপালে নিরার হাত। হিম শীতল এক ভালো লাগায় আমার শরীর শিউরে উঠলো।চুপচাপ কেটে গেল কিছুটা সময়। যাবার সময় বলল,
-জানিনা আবার কবে দেখা হবে, ভালো থেক।
আমার জ্বর সারার আগেই স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি হয়ে গেল। আমার আর সময় কাটেনা। আম বাগানের আম চুরি, খুব ঝাল করে কাঁচা আম খাওয়া, মধ্যপুকুরে সাঁতারকাটা কোন কিছুতেই আমার মন বসেনা। সাইকেল নিয়ে কয়েকদিন বিকেলে নিরাদের গ্রামেও গেলাম। যদি দেখা হয়ে যায়। কিন্তু হয়না। লজ্জায় কাওউকে জিজ্ঞেস করতেও পারিনা। অনেক ভেবে রাত জেগে একটি জলছবি আঁকা কাগজে শুধু মাত্র দুটি লাইন লিখলাম।
“নিরা,
তোমাকে ছাড়া আমার দিন কাটেনা,
কিন্তু লজ্জায় বলতে পারিনা।
রুদ্র”
ছুটি শেষে নিরাকে দেব এই ভেবে গোলাপ ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে ভাঁজ করে অনেক যত্নে লুকিয়ে রাখলাম। অবশেষে ছুটি শেষ, সকাল সকাল নতুন জামা প্যান্ট পরে স্কুলে গেলাম। চিঠিটা যত্ন করে লুকিয়ে রাখলাম, সুযোগ মত নিরাকে দিতে হবে।
গোপাল স্যারের পেছনে পেছনে মেয়েরা ক্লাশে ঢুকল। আমি মুখে সলজ্জ হাঁসি নিয়ে নিরাকে খুজছি।একে একে সবাই আসলেও নিরা নেই। গোপাল স্যার রোল কল শেষে চোখ মুছতে শুরু করলেন। সবাই মুখ চাওয়াচায়ি করছি, স্যারের হঠাৎ কি হল! অবশেষে আস্তে আস্তে নিচু স্বরে বললেন,
গত ছুটিতে নিরা তার মামার বাড়ি খুলনা তে গিয়েছিলো, সেখানে এক লঞ্চ ডুবিতে...।
স্যারের শেষ কথাগুলো আমার আর শোনা হয়নি। দেখা হয়নি চিকন করে কাজল পরা চোখ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১১:০৭