দক্ষিন আফ্রিকায় দীর্ঘ শ্বেতাঙ্গ শাসনের অবসানের পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ম্যান্ডেলা।
ইস্টার্ন কেপ অঞ্চলে এক গোষ্ঠী প্রধানের পরিবারে নেলসন ম্যান্ডেলার জন্ম। তরুণ বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে তিনি জোহানেসবার্গে যান। সেখানে আইনপেশা শুরু করার পর তিনি বর্ণবাদ-বিরোধী দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস বা এএনসিতে যোগদান করেন।
বক্সিং ছিল তরুণ ম্যান্ডেলার শখ। আত্মজীবনী 'লং ওয়াক টু ফ্রিডম'-এ তিনি লিখেছেন, ''বক্সিং রিঙ-এর মধ্যে অল্প বয়স - বেশি বয়স, সাদা-কালো, ধনী-গরিবের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।''
এএনসিতে কাজ করার দায়ে ১৯৫৬ সালে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা আনা হয়। বিচার চলার সময় তরুণ বর্ণবাদ-বিরোধী কর্মী উইনি মাদিকেজেলার সাথে তার পরিচয় হয়। এই ঘটনার দু'বছর পর ইভলিন মাসের সাথে নেলসন ম্যান্ডেলার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।
নেলসন ম্যান্ডোলার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় বিচার সম্পন্ন হওয়ার পর তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়। সেটা ১৯৬৪ সালের ঘটনা। রবেন আইল্যান্ড কারাগারে রাজবন্দীরা।
দু'দশকেরও বেশি সময় কারাবাসের পর মি. ম্যান্ডেলাকে শেষ পর্যন্ত ১৯৯০ সালে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তির পর নেলসন ম্যান্ডেলা। পাশে স্ত্রী উইনি।
'এক মাথা এক ভোট' ব্যবস্থা চালু করার আগে প্রেসিডেন্ট এফ ডাব্লিউ ডি ক্লার্কের সাথে মি. ম্যান্ডেলার তীব্র দরকষাকষি চলে। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসানে ভূমিকা রাখার জন্য এই দুজনকে ১৯৯৩ সালে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরষ্কার দেয়া হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচন হয় ২৭শে এপ্রিল ১৯৯৪ সালে। এই প্রথমবারের মতা কৃষ্ণাঙ্গরা তাদের ভোট দেয়ার সুযোগ পান। ভোটকেন্দ্রগুলোর সামনে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। নির্বাচনে এএনসি বিপুল ভোটে বিজয়ী হয় এবং নেলসন ম্যান্ডেলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
প্রেসিডেন্ট পদে মি. ম্যান্ডেলা মাত্র এক মেয়াদ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন, আফ্রিকায় যে ধরনের ঘটনা বিরল। মি. ম্যান্ডেলার পর এএনসি এবং প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসেন থাবো এমবেকি (বাঁয়ে)।
২০১২ সালে নেলসন ম্যান্ডেলা তাঁর ৯৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেন। জাতিসংঘ ২০০৯ সালে তাঁর জন্মদিনকে আন্তর্জাতিক নেলসন ম্যান্ডেলা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।
তথ্যসূত্রঃ
bbc.co.uk/bengali/multimedia