somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"কুকুর আর মুক্তিকামী মানুষের প্রবেশ সংরক্ষিত"

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৪:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছবিটি দেখুন…। ফটোগ্রাফার: কেভিন কার্টার, ১৯৯৪, দুর্ভিক্ষ পীড়িত সুদান। শকুনটা শিশুটির মৃত্যুর অপেক্ষায় তাকিয়ে আছে। শিশুটির প্রানে বাঁচার শেষ আকুলতা আর শকুনটির চোখে খাবারটাকে চোখের আড়াল হতে না দেয়ার ব্যাকুলতা।শকুনটার জায়গায় আমাদের বিদেশী প্রভুদের আর শিশুটির জায়গায় আমাদের দেশটাকে ভেবে আর একবার তাকান ছবিটার দিকে। আমাদের পরিণতি এর চেয়ে খারাপ হতে চলেছে ।আমরা, আমাদের সমগ্র জাতি এই মৃত্যু পথযাত্রী শিশুটির মতো ধুকছি আর আমাদের ঘারের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে কর্পোরেট শকুন।

স্নায়ু যুদ্ধোত্তর বিশ্ব ব্যবস্থায় এককেন্দ্রিক অর্থনৈতিক কাঠামোয় মানুষ নিষ্পেষিত হচ্ছে ঔপনিবেশিকতার যাঁতাকলে। সাম্রাজ্যবাদের নতুন পোশাকে পুঁজিপতি কর্পোরেট হাউসগুলো চুষে নিচ্ছে আমাদের মেদ মজ্জা। স্বল্প সংখ্যক পুঁজিপতির উদরপূর্তি হচ্ছে আর টাকার ঘর গুলো উচ্চ সুদে লাগামহীন ঋণ দিয়ে আমাদের বুকের উপর মৃত্যুর বাস্তব জমিন তৈরি করছে। অন্যদিকে সংখ্যাগুরু ব্যাপক জনগোষ্ঠী শূন্যতায় রিক্ত কঙ্কালের স্তুপে পরিণত হচ্ছে। আর আমরা ইউনুস মিয়ার দারিদ্র বিমোচন প্রকল্পে শরণার্থী হয়ে জীবন কাটাচ্ছি।

সেই সাথে শিল্পাঙ্গনেও আজ একই রকম সাম্রাজ্যবাদী প্রথা...... সাহিত্য সাময়িকীতে আজ কাল বাজে মালও ( চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় মুদি দোকানের সামগ্রী) পায় শিল্পের মর্যাদা। আপনার আমার মতো ক্ষুদ্র ছানাপোনারা ফেসবুক, বিভিন্ন বাংলা ব্লগ(যেখানে আবার নেতা-নেত্রীর বিরদ্ধে আর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, কিংবা রাজাকারদের বিচার নিয়া লিখলে নাস্তিক উপাধি পাওয়া যায়) , আর ছোট খাটো সাহিত্য পত্রিকায়। বড়দের ওখানে আমাদের যেতে মানা। দিব্যচক্ষু মেলে দেখুন......... লেখা আছে “কুকুর আর মুক্তিকামী স্পষ্টভাষীদের প্রবেশ নিষেধ”।


যাই হোক সব হারিয়ে আমরা বাঁচতে চাইছি আমাদের মহান অতীত নিয়ে। না! তারা তাও হতে দেবে না। ওটাও তাঁদের চাই। দ্বিদলীয় রাজনীতির মেয়াদী দোলনার সাথে দুলছে আমাদের ভাষা, মুক্তি আর স্বাধীনতার রক্ত ধোয়া ইতিহাস। বিকৃত হচ্ছে ইতিহাস। বড় দুই দলের নায়কদের গুণকীর্তন আর স্বঘোষিত স্বীকৃতির আড়ালে হারিয়ে গেছে আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসের স্বকীয়তা। হারিয়ে গেছে আমাদের নিজস্ব বর্ণমালায় উজ্জ্বল নাম ...... সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার। হারিয়ে গেছে মুক্তিসংগ্রাম এ বীরের মতো রক্ত ঢেলে দেয়া ৭ বীরশ্রেষ্ঠ। আমাদের জাতীয় নেতারা। তাদের মতো আমরাও হারিয়ে যাচ্ছি গৌণ কিছু লোকের ছায়ায়......... সেই ছায়ার নিনাদ দেশের সকল সচেতন সত্ত্বা শুনতে পান এটা আমি নিশ্চিত।

অস্থির এই দেশে নিজেকে মানিয়া নেয়া কোন শোধনবাদীর পক্ষে সম্ভব নয় প্রতিবাদ করার উপায় পর্যন্ত নাই আমাদের। চিৎকার করতে গেলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা আর সরকারের মদদপুষ্ট অছাত্র সংগঠন গুলোর সরাসরি তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত কসাইখানায় কচুকাটা হতে হয়। ক্যাম্পাস এর বাইরে তারা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় চলে আর ক্যাম্পাস এর ভেতরে শিক্ষকদের। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য “যুবায়ের” হত্যার সাথে ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতা জানতে পেরে আকাশ থেকে পড়ে বললেন, “ছাত্রলীগ এ কাজ করতে পারে না!!!” (বেজন্মা কোথাকার!)। অন্যদিকে যখন প্রগতিশীল ছাত্ররা যখন বর্ধিত ফি আদায়ের প্রতিবাদ চেষ্টা করছিল তখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলে বসেন,”উচ্চশিক্ষা কিনতে হয়!!!!!! ”। (তার পূর্বপুরুষ সুদের কারবার করতেন এটা জানান দিলেন নাকি বুঝলাম না।) এসব সরকারি পেশাদার দালালদের জন্যে আজ আমরা জাতি হিসেবে ধ্বংসের পথে। শিক্ষাকে বাণিজ্যিক পণ্যে রূপান্তর করে এরা ফায়দা লুটছে আর প্রতিবাদ দমনের হাতিয়ার সরকারি দলের তথাকথিত ছাত্ররা।

প্রচণ্ড রাগে চিৎকার করে উঠতে করতে ইচ্ছে করে যখন দেখি কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলছে ফেলানি...যখন শুনি মন্ত্রী বলেন “সীমান্তে হত্যা নিয়ে সরকার চিন্তিত নয়”। আর কতদিন আমরা ভারতীয় মদে মাতাল হয়ে ভারতকে গালি দিবো? প্রতিবাদের সময় এসেছে , সরকার দেশের, দশের মঙ্গলের চেয়ে নিজের মঙ্গলটাই ভালো বুঝে তা প্রমানিত। আমাদের শিক্ষক আমাদের অবিভাবকরা শোষক শ্রেণীর পা চাটা কুকুরের ভূমিকা পালন করছেন তাও প্রমানিত। তাই আমাদের বুঝ আমদেরই বুঝতে হবে। এভাবে আর কতো অত্যাচার সহ্য করবো? দেশী বিদেশী প্রভুর লাথি আর কতকাল খাবো? পাকিস্থান আমাদের ২৩ বছর শুষে গেছে অন্যদিকে ভারততো গত ৪০ বছর ধরে শোষণ করে যাচ্ছে। ভারত আমাদের ঘারের উপর শ্বাস নিতে থাকা ।ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশের মানচিত্রের দিকে তাকিয়ে ভাবেন কি কি নেয়া যায়? আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভাবেন আর কি কি দেয়া যায়। তাদের এতো ভারত প্রীতি দেখলে কষ্ট হয় কারন আমি যে হিন্দি জানি না। আর কয়দিন পর তো বাংলায় কথা বলতে পারব না,হিন্দি না জানলে তো বিপদে পড়তে হবে। ভাবছি কোনদিন ভারত বিরোধী কথা বললে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার আইন পাশ হয় সংসদে। সরকারের জানা উচিত আমরা মানুষ! কুরবানির পশু না। আমরা মানুষ পাগলা কুকুর না। সময় হয়েছে আর্তনাদ করে ওঠার , বাঁচার আর্তনাদ। বলে উঠতে ইচ্ছে করে...... “স্বাধীন হয়েও পেলাম না স্বাধীনতা”......”মুক্ত হয়েও পেলাম না মুক্তি।”
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৪:৪৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জানবেন কিতাব ও হিকমাত, কিন্তু মানবেন শুধুই হিকমাত

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৯ ই মে, ২০২৫ ভোর ৬:৩৭




সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

নবীজির জন্মের আগে আরবে গজব অবস্থা ছিলো

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৯ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:০২



নবীজির জন্মের আগে আরবে বেশ কিছু ধর্ম ছিলো।
ধর্ম না বলে কুসংস্কার বলা ভালো। সেই সময় মানুষ রসিকে সাপ মনে করতো। মগজহীন মানুষ দিয়ে ভরা ছিলো আরব। সেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনু গল্পঃ ব্যর্থ বাসনার দাহ

লিখেছেন সামিয়া, ০৯ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৮

ছবিঃনেট

খুব তাড়াহুড়া করে বের হয় তন্দ্রা, আজ স্কুলে যাবে না, কোনো টিউশনি করাবে না, ফোন করে সব student-কে মানা করে দিয়েছে। এগারোটার আগে ওকে এয়ারপোর্ট পৌঁছতে হবে।

নাবিল আসছে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ডায়েরী- ১৫২

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৯ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৫:২৩



এনসিপি আওয়ামীলীগকে এত ভয় পাচ্ছে কেন?
অলরেডি আওয়ামীলীগের তো কোমর ভেঙ্গে গেছে। তবু রাতদুপুরে এত আন্দোলন কেন? দেশে ১৮/২০ কোটি মানুষ। তারা তো আওয়ামীগকে ভয় পাচ্ছে না। তাহলে এনসিপির এত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি কি দু’জন ভারতীয়র আচরণ দিয়ে পুরো ভারতকে বিচার করব?

লিখেছেন প্রগতি বিশ্বাস, ০৯ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:৩৬

সাম্প্রতিককালে একটি আন্তর্জাতিক কমিউনিটিতে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার সুযোগ হয়েছে। এই আন্তর্জাতিক কমিউনিটিতে ভারত এবং চীনের জনসংখ্যাগত আনুপাতিক কারণে অংশগ্রহণ বেশি। এই কমিউনিটিতে ভারত, চীন ছাড়াও পাকিস্তান, নেপাল, ইউক্রেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×