১] মাঠের দক্ষিণ দিকে বয়েজ শেল্টারের সামনে একটা জাম গাছ আছে, ঐ গাছের জাম অনেক মিষ্টি। একবার অবশ্যই খেয়ে দেখবেন।
[২] হেরিংটন ভবনের ছাঁদে উঠবেন (বিশাল এক ছাদ, এক মাথা থেকে আরেক মাথায় টানা একটা দৌড় দিলে দিল খোশ হয়ে যায়)। হেরিংটন ভবনের পশ্চিম দিকের চিপায় একটা সিড়ি সরাসরি ছাঁদে উঠে গেছে। গোপনে উঠবেন, গোপনে নেমে যাবেন। বেশি সময় ছাঁদে থাকবেন না !
[৩] গাঙ্গুলি ভবনের সিঁড়ি দিয়ে উপরে যাবার পর যদি ছাঁদের দরজা খোলা পান তবে এই ছাঁদে একটু ঢু মেরে দেখতে পারেন। ছাদটা সুন্দর।
[৪] কোন এক শনিবারে কলেজে প্রবেশ করবেন। সেদিন লিটারেসি স্কুল বন্ধ থাকে এবং কলেজ প্রাঙ্গনে ক্লাব/ প্র্যাক্টিকাল/হলের ছেলে ছাড়া আর কেউ থাকে না। সেদিন আরাম করে কলেজটা ঘুরে দেখতে পারবেন !
[৫] কোন একদিন খুব গোপনে ম্যাথিস হাউসে ঢুকবেন। ম্যাথিস হাউসের সামনের বাগানটা খুবই সুন্দর। ভেতরে ফাদারদের ঘরের সামনের বারান্দাটা খুব সুন্দর। পেছনের দিকের বারান্দায় কিছুক্ষণ বসে থাকলে খুব ভাল লাগে।
[৬] বয়েজ শেল্টারের বাচ্চাদের সাথে একদিন আড্ডা দিতে পারেন। এদের বেশিরভাগই সুবিধাবঞ্চিত শিশু। ওদের সাথে ভাল ভাবে কথা বললে ওরা আপনাকে খুব আপন করে নেবে।
[৭] লিটারেসি স্কুল ঘরের পেছনে একটা আম গাছ আছে, এই গাছে ছোট ছোট আম ধরে কিন্তু খুব মিষ্টি। একবার খেয়ে দেখতে পারেন।
[৮] অন্তত একটা ক্লাবে অবশ্যই জয়েন করবেন।
[৯] কলেজের মূল গেট দিয়ে ঢোকার পর একদম বরাবর আছে মাতা মেরীর একটি ভাস্কর্য। সেটার সামনে দাঁড়িয়ে একটা ছবি অবশ্যই তুলবেন, সারা জীবনের স্মৃতি।
[১০] যদি আপনি খেলোয়ার টাইপের নাও হন তবুও মাঠে অন্তত একদিন হলে ফুটবল/ক্রিকেট/হাডুডু/ডাংগুলি/ইচিং বিচিং ইত্যাদি খেলবেন এবং বাস্কেটবল কোর্টে একদিন বল নিয়ে লাফালাফি করবেন।
[১১] অন্তত একদিন হলেও লাইব্রেরীর কোনায় কোন এক টেবিলে বসে লম্বা একটা ঘুম দেবেন।
[১২] কলেজের ক্লাব গুলোর কোন অনুষ্ঠান/ ফেয়ার থাকলে অবশ্যই সেখানে যাবেন। তখন কলেজে একটা ফেস্টিভ মুড বিরাজ করে।
[১৩] প্রকৃতি প্রেমী হয়ে থাকলে, কলেজ ছাত্র হিসেবে নটর ডেম কলেজ আপনার জন্য অনেক অসাধারণ একটা জায়গা।
>> কলেজ প্রাঙ্গনে অনেক রকমের গাছ আছে। গাছের নাম জানার জন্য কলেজের বাগান পরিচর্যাকারি "সুলতান" মামাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। উনি খুব খুশি হয়ে আপনাকে গাছের নাম বলে দেবে।
>> বাস্কেটবল কোর্টে পাশে "গগন সিঁড়ি" গাছের মাথায় বেশ কয়েকটা চিল পাখির বাসা আছে। চিলের উড়াউড়ি দেখতে পারেন।
>> মাঠের পূর্ব দিকের রেইনট্রি গাছে টিয়া পাখি সহ বেশ কয়েক রকমের পাখির বাসা আছে। অবসরে এই পাখি পর্যবেক্ষন করতে পারেন, ভাল লাগবে।
>> পাখিদের মাঝে বাউল হচ্ছে কোকিল। আর নটর ডেম কলেজ হচ্ছে এই বাউল পাখির ভাল একটা আস্তানা ! বসন্তের কোন একদিন সকাল সকাল কলেজে এসে একা একা ক্লাসে বসে কোকিলের ডাক শুনতে পারেন, বেশ ভাল লাগবে !
>> হেরিংটন ভবনের পেছনে মাছের ডোবার পাশে দাড়িয়ে মাছ দেখতে পারেন। সেখানে অনেক গোল্ড ফিশের ভিড়ে ছোট একটা কচ্ছপ আছে।
>> মার্টিন হলের পেছনে দুইটা বড় বড় "কেনন বল" নামের ফুল গাছ আছে যেটার গুড়ি থেকে ফুল ফোটে, পাতা থেকে ফুল হয় না। এটা দেখতে পারেন।
>> হেরিংটন ভবনের সামনের কাঠ বাদাম গাছে শুধু একদিন আমি কাঠবেড়ালি দেখেছিলাম। চোখ কান খোলা রাখলে আপনিও এর দেখা পেতে পারেন, কাঠ বেড়ালি বেশ মজার একটা প্রাণী।
>> নটরডেম কলেজের সবচেয়ে মজার প্রাণী হচ্ছে বেজী (বিনোদনের ভান্ডার)। কলেজ প্রাঙ্গনে কম করে হলেও ২৫ জোড়া বেজী আছে। আর আশে পাশের এলাকা থেকেও অনেক বেজী কলেজে আসে। যখন কলেজে মানুষ কম থাকে তখন এরা ঝোপঝাড় থেকে বের হয়ে আসে। বেজী খুব বুদ্ধিমান প্রাণী আর এদের কাজ কর্ম খুবই মজার। খোলা জায়গায় এসে এরা নানা রকমের কসরত দেখায়, দু পায়ে দাড়িয়ে থাকে আর নিজেদের মাঝে খেলাধুলা করে। সময় পেলে চুপচাপ এদের পর্যবেক্ষন করতে পারেন।
[১৪] নটরেডেমিয়ান আর খাদ্যপ্রেমী ? এইগুলা একবার হলেও ট্রাই করবেন,
>> কলেজের উত্তর দিকে আরামবাগের রাস্তা দিয়ে ঢুকলেই হাতের বাম পাশে একটা ভাতের হোটেল আছে, এই হোটেলের সকালের নাস্তা, দুপুরে ৪০টাকায় ভাত-ভর্তা-ডাল-সবজি, অসাধারন মজা।
>> গলি দিয়ে আরো একটু সামনে এগিয়ে গেলে বাম পাশে ছোট একটা দোকানে জিলাপি/পেয়াজু/পুরি বিক্রি করে। দুপুরের পর এখানে খুব মজার গরুর চাপ ভাঁজে। এখানের জিলাপিটা মজার, তবে এখান থেকে যাই কিনবেন, জিজ্ঞেস করে নেবেন যে এটা আগেরদিনের খাবার নাকি, আগের খাবার হলে খাবেন না !
>> আরো একটু সামনে গেলে একটা দোকানে তেহারি-খিচুরি বিক্রি করে। বৃষ্টির দিনে এই দোকানের খিচুড়ি আর সাথে দুই পিস লেবু ... পুরা অমৃত স্বাদ !
>> সকালের নাস্তার জন্য কলেজের কাছেই দিল্লি মুসলিম হোটেল অনেক ভাল। এদের খাসীর কলিজি অনেক মজা।
>> দুপুরের খাবারের জন্য মতিঝিলের বিখ্যাত হীরাঝিলের খিচুড়ি। হীরাঝিলের কাচ্চি বিরিয়ানিও অনেক মজা।
>> ঘরোয়া হোটেলে সকালে নিহাড়ি পাওয়া যায়। গরম রুটির সাথে এই নিহারি একবার না খাইলে... মিস!
>> কলেজ ক্যান্টিনের সব খাবারই ভাল তবে আগের বড় ক্যান্টিনে নিজেদের ওভেন ছিল বলে ক্যান্টিনে পিৎজা, পেটিসের মত জিনিশ গুলা এখানেই বানানো হত। এখন এগুলা বাইরে থেকে আনা হয়। তবে সব ভাঁজা খাবার গুলা ক্যান্টিনে বানানো হয় এবং বেশ স্বাস্থসম্মত। কলেজ ক্যান্টিনের খিচুড়ি আর ফ্রাইড রাইসটা ভাল।
[১৫] আরো অনেক কিছু আছে করার, এখন মনে পরছে না। মনে পরলে এখানে অ্যাড করে দেব
মূল লেখা