somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাঁদনি ফরস রাইতে যেন আমার মরণ হয় ...

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সবসময়ই কেন যেন ভরা চাঁদের রাতের আমার ক্যরা উঠে !!! চাঁদের আলোর টানে আমি আপ্রতিগ্রস্ত মানুষের মত শুরু করি। পূর্ণিমার আলো আমাকে এমন ভাবে আকৃষ্ট করে যে সে সময় ঘরে বসে থাকা আমার জন্য সম্ভব না ...

কিন্তু ভাই কি আর কমু দূঃক্ষের কথা ... আমরা তো থাকি এক কনক্রিটের জংগলে যেইখানে আমরা এক এক জন নাগরিক টারজান !!! এইখানে পূর্ণিমাই হোক আর আমাবস্যাই হোক সবই একরকম লাগে ... সব জায়গাতেই খালি উচা উচা দালান !!! এইখানে চাঁদনি রাতে সৌন্দর্য উপভোগ করা ব্যাপক দুস্কর :(

মাগার কালকে এমনই এক ভারা চাঁদের রাতে আমার মাথা খারাপ হইয়া যাবার অবস্থা হইল।রাত তখন ২টার পরে। প্রথমে জানালা দিয়ে যখন হালকা একটু চাঁদের আলো আমার বিছানায় এসে পরলো তখন মনে হইল যেন মহাকাশ থেকে আগত কোন অতিবেগুনি রশ্মি আমার দিলটারে ছারখার কইরা দিল :| । নিজেরে তখন আর ধইরা রাখতে পারলাম না ... অতি দ্রুত কিন্তু বিশেষ সাবধানে ছাদের চাবিটা আর একটা ফাটা বাঁশের বাশি নিয়া লুকাইয়া লুকাইয়া ছাদে গেলাম। আমি ছাদের তালা খোলার আগ পর্যন্ত বুঝতে পারি নাই যে আমার সামনে কি বিস্ময় অপেক্ষা করতেসে !।

ভাই ... বিস্বাস করবেন না, চাঁদের আলোর এমন সৌন্দর্য আমি আমার ইহ জিন্দেগিতে দেখি নাই। ভরা চাঁদের কি মহিমা, কি তার ভাব, কি তার রাজকিয় সৌন্দর্য সেইটা বলে বোঝানো যাবে না। চাঁদের আলোক রশ্মি গুলা এমন ভাবে এসে পরছিল যেন সাক্ষাত সর্গ থেকে তার আগমন। বাধ ভাংগা চাঁদের আলো পুরা এলাকাকে আলোকিত করে রাখসে।এমনেই নিশুতি রাত আর দুই দিন আগে করবানির ঈদ গেল ... এলাকায় মানুষ অনেক কম তাই বাসা বাড়িতে তেমন কোন বাতি জ্বলে না। পুরা এলাকায় কোন আলো নাই শুধু চাঁন্দের আলো। হালকা ঠান্ডা বাতাস আর আকাশে অল্প কিছু মেঘ। প্রকৃতির এই লিলাখেলা দেখা মুগ্ধ না হতে উপায় নাই। যে কোন মানুষ এমন পরিবেশে এসে নিজেকে এক অজানা রাজ্যে হারিয়ে ফেলবে।

চাঁদের এক বিশেষ সৌন্দর্য হইল যে চাঁদের রূপালি আলোতে চারপাশের প্রায় সবকিছুই দেখা যায় কিন্তু কিছুই স্পষ্ট ভাবে দেখা যায় না। চাঁদের আলোর এই রূপালি রশ্মি তৈরী করে একটা আলো আধারী পরিবেশ। চাঁদের আলোতে সব চেনা জিনিশকে আচেনা লাগে। সবকিছুর এক নতুন রূপ চাঁদের আলোতে সৃষ্টি হয়। এটা একটা অসাধারণ অনুভুতি।


চাঁদের আলোর সৌন্দর্যে বিশাল আকারের টাসকি খাওয়ার পর নিজেকে মোটামুটি সামলে নিলাম ... আমার কাছে ছিল একটা ফাটা বাশের বাসি। হিন্দু ধর্মে কথিত আছে যে কৃষ্ণ তার বাশির সুমধুর সুর দিয়েই রাধার চিত্ত হরণ করেছিলেন। গঙ্গা নদীর ধারে যখন শ্রীকৃষ্ণ বাশি বাজাত তখন নাকি চারপাশের পরিবেশে নেমে আসত এক অন্য রকম আবহ এবং দূর থেকে রাধা সেই বাশির সুরে বিভর হয়ে যেত। আমিও সেইরকম ভাবে হালকা পাতলা বাশি বাজানোর চেষ্টা চালাইলাম, যদি "রাধা" রূপ কোন রমনী ডানে বামে থেকে একটু আওয়াজ দেয় তাহইলে তো ভালই। কিন্তু না ... এমন কুলাংগার কপাল লইয়া ধরণিতে আইসি যে কি আর কমু !!!
শুনসিলাম হেমিলনের বাশিয়ালা তার বাশির আওয়াজ দিয়ে ইন্দুর আকৃষ্ট করতে পারত মাগার আমার বেলায় কইথেইককা দেখি দুইডা বাদুর আইসা হাজির হইল ... তারা আমার মাথার উপরে মহা আনন্দে উরা উরি করতে লাগল।হায় হায় ... এইডা কি ??? কই "রাধা" রূপ সুকন্যা চাইতাসিলাম, আর আইলো দুইডা বাদুর !!!

কিন্তু এই বাদুরের আগমনে আমি আরেক আসাধারণ এক দৃশ্য দেখতে পেলাম ... চাঁদের আলোতে বাদুরের উরা উরি যে এত চমৎকার হতে পারে সেটা না দেখলে বিস্বাস করার না। যখন তারা চাঁদের মাঝ দিয়ে উরে যায় তখন যেই বিস্ময়কর দৃশ্যে আবতরণ হয় সেটা ভাষায় বোঝানোর না। চাঁদের আলোক রশ্মিতে পুরা দৃশ্যটা একরকম আপার্থিব ঘটনার সমতুল্য।

সুন্দর কিছুর স্থায়ীত্ব নাকি অনেক কম হয় ... তাইতো চাঁদের সাথে এই অসাধারণ সময় কাটানোর পর আমাকে আবার নিজ ঘরে ফিরে যেতে হল। কিন্তু সেই রাতে আমি ঘুমাইতে পারি নাই। সারা রাত জানালা দিয়ে চাঁদের স্নিগ্ধতা দেখে কাটিয়েছি। সকালে সুরুজ ভাই কে স্বাগতম জানানোর পরই আমি ঘুমাতে পারলাম।

পরের দিন ভাবলাম আমাদের প্রতিপালক আমদের সুবিধার জন্য কোন জিনিসটা দেন নাই ??? জিবনের শুরু থেকে অন্ত পর্যন্ত স্রষ্টার সৃষ্টি যেভাবে আমাদের চারপাশে মুখরিত হয়ে থাকে সেটার মত চমকপ্রদ আর কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না !!! আমাদের সুবিধার্থে স্রষ্টা দিনের বেলা দিয়েছেন ঝকঝকে রোদ আর রাতে দিয়েছেন চাঁদের চকমকে আলো ... আহা ব্যাপক বিস্ময়কর আমাদের স্রষ্ঠার সৃষ্টি। 8-|
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×