১.
সেই যে লোকটি, আসিতো তোমার বাবার কাছে
সে হাই তুলিয়া, তুড়ি বাজাইতো
কথার ছলনায় তন্দুর পাউরুটি হইতে বেশী ফোলাইতো
তুক-তাক বশীকরণ মন্ত্রের ইন্ত্রজালে জড়াইতো
সে এমনই তুখোড় ছিল যে
তাহার রস উপভোগের ক্ষমতা খুব কম লোকেরই ছিলো
তুচ্ছ জ্ঞানে অন্যকে তাচ্ছিল্য করতো
কথার শানানো ছুড়িতে না হলে, গিলোটিনে বধ করিতো
তুতিয়ে পাকিয়ে যদি লোকটিকে রাজী করাইতে পারো
তাহলে প্রস্তাব পাঠাইতে দ্বিধা করো না
লোকটির কথায় সাপুড়ে বাঁশির বীণায় দুলো
তোমার দৌলতের তুমতুমি বাজিয়ে নিয়ো
তারপর অনুক্ষণ অতি মৃদু নাদে ভিক্ষা মাগিয়ো
রাজাধিরাজের তোরণে প্রজাসম ভিখারী হইয়া তুমকী বাজিয়ো
আশা করি,
বিশ্ব ডোবানোর উছলে-উজান-তুফানের মতো লোকটি আসিবে।।
২.
লোকটি স্ব-গর্বে পদার্পণ করিলো, যেন আসমান হইতে হাতী নামিলো
লোকটির কথা শুনিয়া বাবা শুধাইলেন, সাকী! তুরন্ত শরাব আনো
মনে হয় কথা শুনিয়া মাথার ভসভসে ঘিলুতে তুরপুণ সিধাইলো
আরেকটু হলে বিষম তুর্কী নাচে নাচিয়ে নিতো
রঙের তাস দিয়ে পিঠ দিয়ে পাওয়ার মতো লোকটি আমায় ডাকিলো
তুরুপ স্বাক্ষী ঈদু শেখের মতো
কথা চলিলো এপাশ-ওপাশ তাঁতের মাকুর মতো
তখন শারদ শশী সম বাবা হইলো তুলোধূনো
রাজী না হইয়া বাবা যাইবে কোথায় বলো!!!
অত:পর, মা শতদল বিলাইলো
লোকটিকে ধন্যবাদ দিবো
আমি আজ তুরীয়ানন্দে ছুটিবো উন্মাদ
আমি উন্মাদ হইবো
একমুঠো আদর হইবো
আমি উন্মাদ হইবো
জন্মান্তর তোমায় বাসিবো ভালো।।
৩.
অদক্ষ কারিগর গড়েনি আমায়
সুর হয়ে আছি বাংলার একতারায়
'অদিতি' আমি অজানা একজনার প্রতীক্ষায়
অদ্রিসম দাড়িয়ে একঠায়
নিজেকে ঢেকেছি অদৃশ্য পর্দায়
সর্বস্ব পুটলি ভরে রেখেছি কোলসরায়।।
তুমি আসিবে যখন
আমি থাকিবো তখন,
কুন্তল বিন্যাশের অদৃশ্য ছোঁয়ায়
ললাটে টিপ সিঁদুরের লালিমায়
ভ্রুলতার উপাঙ্গের ভাবনায়
আয়ত নয়নার রঞ্জনায়
অধরোষ্ঠের বচনে কিন্নর কিংকিনায়
টোল ফেলা কপোলের রক্তিমাভায়
অমৃত সূধা পানে অধর মদিরায়
কুচ কুঞ্জলির স্তননের স্বেচ্ছাচারিতায়
ক্ষীন চন্দ্রকটির ভাজের কোমলতায়
গৌরাঙ্গী পদ যুগলের আলতায়।।
তোমার তরে খন্ডিতা হইবো দুঃখ নেই
উঠবে রেঙ্গে বিছানা না হয় কানন কেয়ারীতে,
অনবগুন্ঠিতা হইবো দ্বিধা নেই
অন্তরাপ্যতার সুখে গগণ বিহারিনী হইতে।।
না চাইলে গলাশি হইবো না
না হয় নবীভাস পুনরায় অবলম্বন করিবো
গঞ্জনার যাতনায় দগ্ধ হইবো না
না হয় নয়নাসারে দেহলতা সিক্ত করিবো।।
সুত্র: পৃষ্ঠা নং- ৫৬০ ও ১৮
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:৪০