আমি থমকে গিয়েছিলাম
তোমার আর্দ্র নয়ন পানে থাকিয়ে।
আর বলা হয়নি আমার করুণ উপাখ্যান।
কারণ আমি কারো করুণা পেতে
অভ্যস্থ নই।
তোমারও আর জানা হয়নি
আমার স্বপ্নগুলোর একে একে ঝরে যাওয়া।
যখন তুমি কিউবগুলোর
রঙ মেলানোর চেষ্টা করছ-
আমি তখন বিবর্ণ জীবনের
রংগুলো খুঁজে ফিরছি।
পড়ন্ত বিকেলে যখন
আমার সমবয়সীরা ছুটছে খেলার মাঠে,
তখন আমি সস্তা
রঙচটা কলমটি পকেটে পুরে
পাশের বাড়ির ছেলেটিকে
হোমওয়ার্ক করাতে ব্যস্ত।
যখন তুমি খেলতে খেলতে ক্লান্ত হয়ে
হরলিক্স কিংবা ওভালটিনে নাক ডুবিয়েছ,
তখন টেবিলে আমার জন্য রাখা
কাপের চা-
তাপ ও স্বাদ দুটোই হারিয়েছে।
যখন তুমি গ্লাসে অর্ধেক রয়ে যাওয়া
হরলিক্স না খাওয়ার বায়না ধরছ
মায়ের কাছে,
তখন শরবত হয়ে যাওয়া
চায়ের কাপটি পরম মমতায় আমার
ঠোঁটের সাথে নিবিড় চুম্বনে।
যখন তুমি প্রাইভেট ভার্সিটিতে যেতে
কোন পোশাকে কোন জুতো
মেলাবে ভাবছ,
তখন আমি একটি খন্ডকালীন চাকরীর খুঁজে
হন্যে হয়ে ঘুরছি।
তাই তোমাকে আর বলা হয়নি-
একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া,
অকালে পিতা হারানো এক সন্তানের
জীবন নামের রেলপথ থেকে
ছিটকে পড়ার গল্প।
বলা হয়নি-
মধ্যবিত্তের সন্তানের
খুব বড় স্বপ্ন দেখতে নেই,
যাতে স্বপ্নের ভারেই
নুয়ে পড়ে যেতে হয়।