মাইজদী বাজারে আঞ্চলিক সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হলো। মরহুম সফিকুর রহমান হলেন উক্ত সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি এবং আমাকে করা হলো সেক্রেটারী। অরুণ স্কুলের একটি কক্ষে মাইজদী বালিকা বিদ্যানিকেতনের অফিস ছিল। সেই অফিসেই আমরা সংগ্রাম পরিষদের অফিসের কাজ করতাম। মাইজদী শহর মিছিলের শহরে পরিণত হয়েছে। এক দিন অরুণ স্কুলের স্কাউটের ডামি রাইফেল হাতে মাইজদী বাজার থেকে শহরের দিকে এক ঐতিহাসিক মিছিল বের হয়। ডামি রাইফেল কাঁধে নিয়ে আমরা একদল ছাত্র/যুবক মিছিলের পুরো ভাগে শ্লোগান তুললাম, “বীর বাঙালী অস্ত্র ধর – বাংলাদেশ স্বাধীন কর”। “জাগো জাগো – বাঙালী জাগো”। “জয় বাংলা-জয় বাংলা।“
১৮ ফেব্রয়ারী ১৯৬৯ তারিখে সেনবাগ পাক সেনারা ছাত্র/জনতার মিছিলে গুলি ছুঁড়লে ২ জন বাঙালী নিহত হয়েছিলেন। সেনবাগে সেনাবাহিনীর গুলিতে ২জন নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে বিক্ষোভের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে। সেনবাগে গণহত্যার প্রতিবাদে ১৯ ফেব্রয়ারী সারা জেলায় হরতালের ডাক দেয় নোয়াখালী জেলা সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ।
১৯ ফেব্রয়ারি ১৯৬৯। সেনবাগে গণহত্যার প্রতিবাদে মাইজদী শহরে সর্বাত্মক হরতাল চলছিল। আমরা মাইজদী বাজারের প্রধান সড়কের উপর ইটের স্তুপ দিয়ে বিরাট ব্যারিকেড সৃষ্টি করেছি। পাক সেনাবাহিনী দক্ষিণ দিক থেকে এসেই ব্যারিকেড সৃষ্টি করেছি। পাক সেনাবাহিনী দক্ষিণ দিক থেকে এসেই ব্যারিকেডে বাঁধাগ্রস্থ হয়। আমি সেনা বাহিনীর ক্যাপটেনের জিপের সম্মুখে দাঁড়িয়ে বাধা দিলাম এবং চিৎকার করে বলতে লাগলাম সেনবাগে গুলি করে যাদের হত্যা করা হয়েছে আমরা তাদের লাশ চাই।
(চলবে)
► লেখক: অ্যাডভোকেট সারওয়ার-ই-দীন
মুক্তিযোদ্ধা ও আইনজীবি, নোয়াখালী।
► নোয়াখালী জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রকাশিত স্মারক স্বাধীনতা ২০০৩ থেকে নেয়া হয়েছে। প্রকাশকালঃ মার্চ ২০০৩।