somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপাঙতেয় ২৩

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লিচুর হঠাৎ করে খুব মাথা ব্যথা করতে থাকে। বুঝে না কি করবে, নাসিরকে বলতেই ওকে ওর ছোট ঘরে গিয়ে শুয়ে পরতে বলে। নোভালজিন ট্যাবলেট বের করে দেয়। লিচু ওষুধ খেয়ে ঝিম মেরে পরে থাকে বিছানায়।সারাদিনের উত্তেজনায় বাবা মায়ের কথা প্রায় ভুলেই গেছে। এখন শোয়ার পর সে চিন্তা করে ঘরে ফেরার পর তার জন্য কি অপেক্ষা করে আছে কে জানে! মা তো নিশ্চয়ই এমন চিৎকার শুরু করবে। হয় তো তার আর এখানে আসা হবে না। না এটা সে কিছুতেই সহ্য করবে না। নাসিরের এখানে আসা বন্ধ করবে না।ধুর যা হয় হবে, এত চিন্তা করে কি হবে।

একটু ঘুম ঘুম লাগছে। কিন্তু বাড়ি যাওয়া উচিৎ, সন্ধ্যা প্রায় হয়ে যাচ্ছে। লিচু উঠে পরে। নাসিরকে বলে চলেন এবার আমাকে নামিয়ে দিয়ে আসেন। মনুরা এখনও আছে। ওরা কেউ বাড়ি যেতে চাচ্ছে না। যেন এখানে থাকলেই আরো কিছু শিখে ফেলবে! নাসির মনুদেরকেও চলে যেতে বলে, কাল সকালে আবার আসতে বলে সবাইকে। লিচুকে নিয়ে জিপে উঠে। খুব দ্রুতই লিচুরা বাড়ি পৌছে যায়। হয়ত মনুদের আগেই। লিচু একটু আনমোনা হয়ে যায়। আহা ছেলেগুলো সারাদিন ওখানে থাকল, বাড়িতে কোন সাহায্য করতে পারল না, ওদের বাবা মাও নিশ্চয়ই বিরক্ত হবে জাভেদ আর নূরীর মতন।

লিচুর মাথা এখন ঝিম ঝিম না, বেশ ভালই ব্যথা করছে। সে গাড়ি থেকে নেমে সোজা কুয়ার কাছে গেল।ঝপাৎ করে বালতি নামিয়ে দিল কুয়ায়। বালতি ভরে আবার টেনে উঠাল। কোন কষ্টই লাগল না। আশ্চর্য হয়ে গেল সে। অন্য সময় মতিন বা অন্য কাউকে বলে কুয়া থেকে পানি উঠানোর জন্য, তার ভীষন কষ্ট লাগে পানি উঠাতে,বালতির দড়িতে হাতে মনে হয় কড়া পরে যায়! আজ ব্যপারটা তাকে বেশ ভাবিয়ে তুলল। হতে পারে সারাদিন শারীরিক কসরৎ করাতে তার বোধহয় শক্তি বেড়ে গেল! ঠান্ডা পানিতে হাতমুখ ধোয়ার পর মাথা ব্যথাও সেরে গেল। পায়ের ঘসে যাওয়া জায়গাগুলোতে পানি ঢালল অনেক ক্ষন। খুব ভাল লাগছে। গোসল করে ফেলবে নাকি চিন্তা করল খানিক। না করা ঠিক হবে না। হঠাৎ করে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে, তাহলে তো আবার কাল নাসিরের ওখানে যেতে পারবে না। উঁহু সেটা লিচু কিছুতেই ছাড়তে পারবে না। তার চেয়ে বরং মাথা ধুয়ে ফেলি। সেটাই করল। গামছা দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে ঘরে ঢুকল। নূরীকে দেখে হেসে ফেলে। মা জানো আজ কি হয়েছে!
জানি নাসির সব বলল আমাদের। আমারতো ভীষন ভয় করছে। তুই এসবের মধ্যে যাস না।
নাসির মামা কি চলে গেছে?
না বৈঠকখানায় তোর বাবার সাথে কথা বলছে। শোন লিচু নাসির ভীষন বাজে লোক, ওর এ সমস্ত করা ঠিক না। আমাদেরকে না জানিয়ে তোকে নিয়ে এসব কি শুরু করেছে! ওরতো চাকরি যাবেই, সাথে জেলও হয়ে যাবে। মাঝখান থেকে তোরও একটা ঝামেলা হয়ে যাবে। বাবা তুই ওর সাথে আর মিশিস না।
মা যেটা বুঝ না, সেটা নিয়ে কথা বল না সব সময়! লিচু চিৎকার করে উঠে।
নূরী চমকে যায়। এই প্রথম লিচু তার সাথে এভাবে কথা বলল। সে হতভম্ব হয়ে যায়। কি বলবে কি করবে বুঝে না। তার চোখ দিয়ে দর দর করে পানি পরতে থাকে। লিচুর একটু খারাপই লাগে, মায়ের সাথে এভাবে কথা বলে। কিন্তু সে কি করবে। নাসির তাকে এক অজানা সুন্দর ভবিষ্যতের হাতছানি দেখিয়েছে। সবার সাথে কিভাবে মিলে যেতে হয়, কোন শ্রেণীবিন্যাস নয়, সাধারন মানুষের সাথে কিভাবে একাত্ন হতে হয় সেটা সে আস্তে আস্তে জানতে পারছে, সেটাকে সে অগ্রায্য করতে পারে না। অনেক অনেক লোভনীয় সেটা লিচুর জন্য।
লিচু ঘর থেকে বের হয়ে নাসিরের সাথে দেখা করতে যায়। বাবার সাথে কথা বলছে। জাভেদ খালি হা আর হু করছে। বোঝাই যাচ্ছে ঠিক মত কিছু শুনছে না। নাসির উঠে দাঁড়ায় আমি আজ যাই, লিচু কাল চলে এস, আমি গাড়ি পাঠিয়ে দিব। আমি দুলাভাইয়ের সাথে কথা বলেছি, উনার কোন আপত্তি নাই, তুমি ট্রেনিংএ আস, এটা সবার জন্যই ভাল হবে। আপা বোধহয় খুব মন খারাপ করেছে, আসলে আমি ভাবলাম সারপ্রাইজ দেব। দেশের পরিস্হিতি সবার বোঝা উচিৎ। যাইহোক আজ আসি।
লিচু কোনরকমে বলে উঠে নাসির মামা আপনি একটু বসুন। বাবা তুমি যাও মাকে বুঝিয়ে নিয়ে এস।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:২০
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×