অহংকার, লোভ, হিংসা মানুষকে ধংশ করে। এ সত্য বাক্যটি চিরন্তন। অহংকার মানুষের একটি আত্নিক রোগ। এ রোগ কম বেশি প্রায় প্রতিটি নারীপুরুষের মধ্যেই থাকে। তারপরও আল্লাহর পথের পথিক মুমিন ব্যক্তি নিজ আত্নার সঙ্গে সংগ্রাম করে দমন করে রেখেছে এ দুরারোগ্য ব্যাধি।
শয়তান থেকে এ রোগের উৎপত্তি। শয়তানের মধ্যে ছিল এ খারাপ অভ্যাস। শয়তান অহংকার করে বলেছিল- আমি আগুনের তৈরী, আর আদম মাটির তৈরী। সুতরাং আমি আদমকে সেজদা করব কেন? (সুরাহ আরাফ)
পুরুষের তুলনায় নারীদের মধ্যে এ রোগের প্রবনতা বেশী দেখা যায়। এ বদভ্যাস যথক্ষন পর্যন্ত অন্তর থেকে দূর না হয়, ততক্ষণ কেউ লক্ষে পৌছতে পারবেনা।
আত্নম্ভতিতা হচ্ছে অহংকারের বড় একটি শাখা। আত্নম্ভরিতা মানে নিজের বুঝটাকেই বড় ও যতেস্ট মনে কারা। এ রোগটিও পুরুষের তুলনায় নারীদের মাঝে বেশি দেখা যায়। নির্বুদ্ধিতাই এর একমাত্র কারন। হাদীসে রাসুল (সঃ) বলেছেন-পুরুসের তুলনায় নারীর বুদ্ধি অর্ধেক। রাসুল (সঃ) আরো বলেন- যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজে ছোট হয়ে যায়, আল্লাহপাক তার দরজা বুলন্দ করে দেন। (তাতহিরুল ইহসান
ওজু গোসল দ্বারা বাহ্যিক পবিত্রতা হাসিল হয়, তেমনি অহংকার সার্থপরতা প্রভৃতি থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারলে আভ্যন্তরীন পবিত্রতা অর্জিত হয়।
প্রতিটি মানুষ মারা যাওয়ার পর আল্লাহ তা'লা বিশেষ প্রশ্ন করেন, তোমার অন্তর অহংকার থেকে পবিত্র করে এসেছো কিনা? (মাঞ্জারুল আউলিয়া)
শ্বার্থপরতা, দাম্ভিকতা প্রভৃতির মুলই হচ্ছে অহংকার। শুকনা জঙ্গলে আগুন লাগলে যেমন জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায়, তেমনি অহংকার দ্বারা ব্যক্তির ইবাদত তথা নেক আমল সমূহ জ্বলে ছারখার হয়ে যায়।
কারো মধ্যে আছে বংশীয় গৌরব, কারো আছে সম্পদের গৌরব, কারো আছে সুন্দরের অহংকার সহ উচ্চ শিক্ষার গর্ব এসবই ধংশের কারন। তার এই অহংকারী শিক্ষা দ্বারা নিজেকে সৎ পথে চালাতে পারেনা। আর উচ্চ শিক্ষিত হয়ে যদি কেউ অহংকার বা গর্ব না করে তবেই তার থেকে সে নিজে ও অন্য মানুষ উপকৃত হয়।
রাসুল (সঃ) বলেন- "আল্লাহপাক কারো বাহ্যিক সৌন্দর্য্য এবং সম্পদ দেখেন না, তিনি দেখেন বান্দা বান্দীর নিয়ত ও নেক আমল। (তিরমিজি)
রাসুলের জামানায় হযরত বিলাল(রাঃ) ছিলেন একজন হাবসী গোলাম। যার চেহারা ছিল এত কালো, কিন্তু তার অন্তরটা ছিল খুবই সুন্দর। তাই তিনি মদিনার মসজিদে নব্বীতে নবীয়ে করীম (সঃ) এর জীবদ্দশায় স্থায়ী মুয়াজ্জীন ছিলেন। কারন তার মধ্যে অহংকার ও লোকদেখানোর গুন ছিলনা।
যাই হোক, অহংকার ও দাম্ভিকতা পতনের মুল। মরিচিকা যেভাবে আস্তে আস্তে লোহাকে ঘিরে ধরে, তেমনি অহংকার মানুষকে তিলে তিলে শেষ করে দেয়। তাকে সমাজের মানুষ ভাল চোখে দেখেনা। যার ফলশ্রুতিতে সেও হয়ে ঊটে দুর্ভৃত্ত। দেখা দেয় হানাহানি,মারামারি ও পিতা মাথার অবাধ্যতা।
তাই বলি আসুন সবাই মিলে ত্যাগ করি ঐ দুরারোগ্য ব্যাধি অহংকার ও শ্বার্তপরতাকে। বিনির্মান করি শান্তি সুখের ভ্রাতৃত্তবোধশীল সোনার বাংলাদেশ।
চলবে--
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০১২ রাত ২:৩১