জীবন বাজি রেখে রোজ রোজ কেউ মানুষের জীবন বাঁচানোর খেলায় নামেন না ।
প্রতিদিন এমনি করে নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা না ভেবে নিরলস ভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে মহান চিকিৎসারা । কিছু চিকিৎসক দের সহানুভূতি ও ভালো ব্যবহার এবং হাসিমাখা মুখের কথায় জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত রোগীরা মনোবল সহকারে আশাবাদী করে তোলে রোগ-যন্ত্রণা ভুলিয়ে দেয় । আমি বলবো কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা অনেকটাই সৌভাগ্যবান' যদি কাঙ্খিত বা অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে ভালো একজন চিকিৎসকের দেখা পাই । কিছু চিকিৎসকদের প্রতি আমার যথেষ্ট সম্মান ও আস্থা আছে । ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনো একজনকে দিয়ে বাকি দশ জনের মূল্যায়ন করি না । তাই এই লেখাটি কেউ এক পক্ষ ভাবে নেবেন না ।
লেখার মূল প্রসঙ্গে আসছি এখন , ফেব্রুয়ারি চতুর্থ সপ্তাহে আমার আম্মাকে নিয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালে ডাক্তার লায়লা আরজুমান্দ বানু 'র শরণাপন্ন হই । তিনি আম্মাকে সার্জারির পরামর্শ দেন এবং আমরা প্রস্তুত ছিলাম ও জানতাম যে এটা সার্জারি করতেই হবে । সার্জারির প্রিপারেশনের জন্য যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা এর মধ্যে সব শেষ হলো । মার্চ মাসের ১৫ তারিখ সোমবার সকালে সার্জারি তারিখ ঠিক হয় । এবং সার্জারির দুইদিন আগে ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী দুই ব্যাগ ব্লাড রেডি রাখতে বলেন। ব্লাড এর ডোনার দুইজন সহ ল্যাবএইড হাসপাতালে যাওয়ার পর জানতে পারি সার্জারি বাতিল করা হয়েছে কারণ ডাক্তার হঠাৎ করেই দেশের বাহিরে গিয়েছেন । ডাক্তার লায়লা বানু অন্য কারো কাছে রেফার করে যান নাই যার কারণে খুব আফসেট হয়ে পড়ি । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বললো ডাক্তার আসবেন এক মাস পর । ডাক্তারের এই উদাসীনতা ও অনৈতিকতা নিয়ে কিভাবে কি লিখবো তা আমার জানা নেই । ডাক্তারের দায়িত্ব ও রোগীর অধিকার এই দুইয়ের মধ্যে তাহলে কি শুধু ডাক্তারের খামখেয়ালী ও দায়িত্বহীনতা প্রাধান্য পাবে ? একজন রোগীর ইমারজেন্সি সার্জারির তিন দিন আগে বিদেশে চলে গেলেন একটা সেমিনারে যোগ দিতে । কথা হচ্ছে উনি যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তাই দেশের বাইরে যখন তখন যেতে পারেন কিন্তু এ বিষয়ে রোগীকে আগে অবহিত করা উচিত ছিলো । ডাক্তারদের উপর নির্ভরতা বেশি বলেই হয়তো আস্থার সংকটের মুখোমুখি হতে হয় রোগীর । এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হয় না বলেই হয়তো এখনো এত অনিয়ম ।
ডাক্তারের এই দায়িত্বহীনতায় খুব কষ্ট পেলাম । মনে মনে ভাবলাম না এখানে আর দেখাবো না । আর এ বিষয়ে কাউকে কিছু বলেও লাভ নেই কারণ ডাক্তার লায়লা আরজুমান্দ বানু কে একজন ব্রান্ড মনে হলো । এমনিতেই ডাক্তারের সিরিয়াল পেতে বেশ দেরী হয়েছিল তাই আর উনার অপেক্ষা না করে আম্মা এভারকেয়ার হাসপাতালে ডাক্তার মনোয়ারা বেগমে কে দেখান এবং এই ডাক্তার নতুন করে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন ।
আম্মা এভারকেয়ার হাসপাতাল পাঁচদিন অবস্থান করে এবং ডাক্তার মনোয়ারা বেগমের নেতৃত্বে সার্জারি সম্পন্ন করে সুস্থ শরীর নিয়ে বাসায় ফেরেন । এখানে এক ব্যাগ ব্লাড রেডি রাখতে বলা হয়েছিল যদিও কোন ব্লাড আর লাগে নাই । যাই হোক শেষ পর্যন্ত আমি মনে করি যা হয়েছে হয়তো ভালোর জন্যই হয়েছে । তবে সহানুভূতিশীল ও দায়বদ্ধ ডাক্তারই পারেন দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেকটা পাল্টে দিতে
ছবি - নিজে তুলেছি
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০২২ রাত ৯:২৪