ঘটনাটা দুই তিন বছর আগের। গ্রামে গিয়েছি ঈদ করতে। ঈদের দিন সকালে তখন ও জামা-কাপড় পড়িনি, আমাদের বাড়ীর পাশেই এক কাকার বাড়ীতে গেলাম তার চার মেয়ের সাজ-গোজ দেখতে। আর্থিক অবস্থা তআর খুব একটা ভাল না। গিয়ে দেখি বড় মেয়েটা জামা-কাপড় পরে আপন মনে সাজগোজে ব্যস্ত্। মেঝটা একটু চন্ঞল টাইপ, জামা কাপড় পরে সাজুগুজু করার জন্য খুব তাড়া শুরু করেছে। কতক্ষনে বাইরে যাবে। আর সেঝটা গোসল করে এসেছে তাই শীতে ধরেছে। দাড়িয়ে দাড়িয়ে পাখীর মত দুই ডানা মেলে দিয়ে শীতে কাঁপতে কাঁপতে দুই বোনের সাজুগুজু দেখছে আর ভাবছে কখন ওর পাল্লা আসবে। ওদের বাবা একেবারে ছোট বোনটাকে কোলে নিয়ে বসে বসে মেয়েদের কান্ড দেখছে আর মন্তব্য করছে তার কোন মাকে কেমন লাগছে। ছোটটাকে একটা সুন্দর ফ্রক আর লেইস,চুমকী লাগানো লাল টুপি পরিয়েছে। সেও পরীর মত চুপচাপ বাবার কোলে বসে আছে। মেঝটার ব্যস্ততা সবচেয়ে বেশী। আগের ছিনের বউদের মত কপাল থেকে শুরু করে গাল পর্যন্ত ফোটা ফোটা নেইল পালিশ দিয়ে মুখ সাজিয়েছে। হাত ও পায়ের পিঠে ফোটা ফোটা নেইল পালিশ দিয়েছে। পায়ের চার পাশে নেইল পালিশ আলতার মত করে লাগিয়েছে। সে যে কি ফুর্তি তাদের না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। দামী জামা যে কিনে দিয়েছে তা না। সর্বোচ্চ ৩০-৩৫ টাকা গজের প্রিন্টের কাপড় দিয়ে ফ্রক ও জামা। জামা লাল হলে চুড়ি নীল, নেইল পালিশ সবুজ বা লিপিস্টিক কমলা। ম্যাচিংয়ের কোন বালাই নেই। সব কিছু হয়েছে সেটাই খুশী। ওদের খুশী দেখে আমি ভাবলাম ওদের বাবা তার সাধ্য মত দিয়েছে তার আমার বাবাও ত তার সাধ্য মতই দেয় তার পরও কেন ওদের মত খুশী হতে পারিনা(!) তার পরও মান অভিমান থেকেই যায়। কেন এত অকৃতজ্ঞ আমি(!)
==============================
আমার মনে হয় ওটা ছিল আমার জীবনের বিরল একটা মূহুর্ত। দৃশ্যটা এখও স্পস্ট চোখের সামনে ভাসে এবং চরম ভাবে নাড়া দেয় আমাকে.........(!)