সুপ্তি, কেমন আছিস জানিনা। হাস্যকর একটা প্রশ্ন তাই জিজ্ঞেসও করব না, তবে সব সময় তোদের এই আপুটার শুভকামনা থাকবে তোর আর শোভনের জন্য। এবার ও ত ঈদ চলে আসলরে...। মনে হয় গত বারের মত এবার ও তোদের কিছু কেনা হবে না। যদি তোদের ফুপীরা/ রজনী আপু দেয় তাহলে হবে। জানিস ইদানিং যখন তোদর কথা মনে পড়ে তখন চোখের পানি আটকাতে পারিনা। এবার ও তোদের এই আপুটা ঈদে জামা নিয়েছে। ছোট ছোটা জামা কিনেছে। কিনেনি শুধু তোর আর শোভনের জন্য। কারন তোরা নাই। মনে হয় এই এলাকা ছেড়েই চলে গিয়েছিস। কেন এমন হল(?) সুখের মুখ দেখেও দেখলি না। সুখ এসেছিল কিন্তু তোদের মা-বাবা তা ধরে রাখতে পারল না। নিজেদের ভূলের কারনে গত একটা বছর ধরে ধুকে ধুকে চলছিস তোরা। এটাকে বাঁচা বলেনা। একটা চাকরী গিয়েছে ত কি হয়েছে? তোর বাবা কি পারত না আর একটা চাকরীর চেষ্টা করতে (!) মনে হয় করেনি। এত কিছুর পার ও তোর মা পারেনি নাটকীয়তা ছাড়তে। চলে যাবার আগে আম্মা বলেছিল বাচ্চাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অন্তত আর নাটক কইরেন না। কিন্তু না তার প্রতিটা রন্ধ্র্বে রন্ধ্রে মিশে গেছে নাটক। মিথ্যা ছাড়া বলতে পারেন একটা কথাও। রাস্তায় দেখা হলে তুই কান্না-কাটি করতি। বলতি "মা আপুকে বল আমাদের বাসায় আসতে" আমার পরীক্ষার সময় এসে বলে গেছিস "তোমার পরীক্ষার পর আমাদেল বাসায় যাবা কিন্তু" তোর মা মুখে বললেও হয়ত চাইত না তোদের বাসায় যাই। আমিও তোদের খারাপ অবস্থা দেখতে পারব না তাই সাত তলায় বাসা, এখন ক্লান্ত সেই অজুহাত দেখিয়ে যেতাম না। শেষ আমার রেজাল্টের পর আমাদের বাসায় এসে তোর মা বলল, তোর বাবা নাকি এফডিসি থেকে শুটিংয়ে ইন্ডিয়া গেছে। অথচ সেই দিন বিকালে আমি যখন বাইরে যাই তখন তোদের চার জনকে দেখলাম। আমি দেখেও না দেখার ভান করে চলে যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু তোরা ত আর জানিসনা তোদের মা সকালে কি নাটক সাজিয়ে এসেছে। তোরা আমকে দেখে চিৎকার করে বলে উঠেছিস "বাবা, দেখ মুক্তা আপু যায়" তার পরও আমি ব্যাস্ততার অজুহাত দেখিয়ে চলে গিয়েছি। তোর মাকে জিজ্ঞেস করলে সে নির্ঘাত বলত শুটিং প্যাকআপ হয়েছে তাই চলে এসেছে। চরম দৈন্য দশায় যদিও তোদের চেহারার দিকে তাকানো যায়না তার পরও তোদের বাবা যেই সেই ই রয়েছে। তার স্বাস্থ্য সুরত বহাল তবিয়তে রয়েছে। এখন ও সে দামী বডি স্প্রে দিয়ে বাইরে বের হয় যদিও তোরা ময়লা জামা পড়ে বাইরে আসিস। বড়ই আজব লাগে তোদের মার স্বামী প্রীতী দেখলে। আমরা যদিও বলতাম ইনকাম করতে পারেনা কিসের খাওয়া? আগে বাচ্চাদের খাওয়া ঠিক তার পর বাবার খাওয়া। কিন্তু তোদের পারলে না খাইয়ে তোদের বাবাকে খাওয়ায়(!!!) চরম অনিশ্চত তোদের ভবিষ্যত। আমি বলব চরম ভাবে ব্যার্থ তোদের বাবা-মা। নিজেদের ভূলে চরম মাশূল বাচ্চাদের গুনতে হচ্ছে(!)
ভাল থাকিস সব সময়।
শোভন, বাবু! তোমার সেই আবল তাবল কথা খুব মিস করি। ঈদে কি কিনবা জিজ্ঞেস করলে বলতে পানবাতি(পান্জ্ঞাবী) কিনব। এখন ও স্পস্ট করে বলতে পারনা কথা। কখনও তুমিই কথা বলে তুমিই হাসতে। বুঝতে পারতে তুমি যে উল্টা-পাল্টা উচ্চারন করে ফেলেছ। স্কুলে কি টিফিন নিবে, জিজ্ঞেস করলে বলতে ইতকুলে পতারা আর দিম নিবো(পরটা, আর ডিম)। আদৌ তোমার পতারা আর দিম নেওয়া হবে কি না, হলেও কবে জানিনা। তবে শিঘ্রই যাতে যেতে পার সেই দোয়াই করি।
ভাল থাকিস সুপ্তি, ভাল থেক শোভন। অনকে অননেএএএক শুভকামনা তোদের জন্য। তোদের উজ্জল ভবিষ্যত কামনা করি সব সময়।
প্লীজ আপনারা সবাই ওদের জন্য দোয়া করবেন যেন খুব শীঘ্রই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:৪২