আপনি কুরআনের সাথে এক মত হয়ে কিংবা দ্বিমত হয়ে যেভাবে হোক, আপনি যদি যুক্তি মেনে চলেন এবং বিজ্ঞানকে যদি আপনি মডেল ধরেন তাহলে কোন অবস্থাতেই কুরআনের একটা আয়াতকে ভুল প্রমান করতে পারবেননা।
প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে আমি মনে করি কিছু কথা বলার প্রয়োজন। তাই লিখলাম।
প্রথমত. কুরআনকে বুঝতে হবে আপনাকে কুরআন দিয়ে, অন্য কোন ভাষা দিয়ে বা অনুবাদ দিয়ে নয়। কুরআন আল্লাহ্ পাক নাজিল করেছেন সুতরাং এতে ভুল থাকার বা অসঙ্গতির কোন প্রশ্ন উঠতেই পারে।কেননা আল্লাহ তাআলা এ নিয়ে কুরআনে চ্যালেঞ্জ করেছেণ। অতএব আপনি যদি কুরআন ভালভাবে বুঝতে চান তাহলে আপনাকে ভালভাবে আরবি ভাষা জানতে হবে কারন আরবি ব্যাকারন বলেন আর ভাষা বলেন একটু অন্য ভাষা থেকে ব্যাতিক্রম। আপনি যেটা করছেন সেটা ইংরেজি অনুবাদ সেটা অনুবাদ করছে কোন এক জন মানুষ সেখানে ভুল থাকাই স্বাভাবিক। দ্বিতীয়ত আপনি সেটা কোন Authentic Source(Al-Quran, Arabic Version) বিচার বিশ্লেষণ না করেই বা আগে পিছে আয়াতগুলো ভালভাবে না পড়েই সেটা ব্লগে দিয়ে আপনি ভাল করেন নাই। ব্যাপারটা এই রকম, আপনি একটা লম্বা কাট নিলেন আর একটা স্কেল তৈরী করলেন কিন্তু আসল স্কেলের মাপ অনুযয়ী করলেন না। এবং পরে ববলেন যে, তৈরীকৃত স্কেলটি ভুল আছে। খুবই হাস্যকর।
প্রশ্ন : ১। আয়াত ২২:৪৭ অনুযায়ী আল্লাহর এক দিন আমাদের ১০০০ বছরের সমান। অথচ আয়াত ৭০:৪ অনুযায়ী আল্লাহর এক দিন আমাদের ৫০,০০০ বছরের সমান। অতএব বিষয় দুটি সাংঘর্ষিক।
উত্তর নং
১। সাম্যবাদি ভাই আপনি আয়াত দুইটি ভালভাবে পড়লে বুঝতে পারবেন যে এখানে বলা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট স্থান হতে অন্য দুইটি স্থানের দূরত্ব। অথ্যাত উদাহরণ স্বরূপ বলা যাইতে পারে যে, ঢাকা হইতে বৃটেনের দূরত্ব ১ দিনের আবার ঢাকা হইতে আমেরিকার দুরত্ব ৩ দিনের। এখন আপনিই বলেন এই ঢাকা হইতে স্থান দুইটির দূরত্ব কি সমান। মোটেও নয়।
প্রশ্ন : ২। আয়াত ৫৪:১৯, ৬৯:৭, ও ৪১:১৬ একে-অপরের সাথে সাংঘর্ষিক। কারণ একেক আয়াতে একেক রকম সময় লিখা আছে।
উত্তর :২। আয়াত ৫৪:১৯, ৬৯:৭, ও ৪১:১৬ একে অপরের সাথে কোন প্রকারেই সাংঘর্ষিক নয়। এটা আপনার কাছে হতে পারে। আপনি একটু ভালভাবে পড়লে বুঝতে পারবেন যে এখানে আয়াত ৫৪:১৯, ও ৪১:১৬ এই দুইটি আয়াতে বলা হয়েছে এক দুর্য়োগময় দিনে আয়াব শুরু হয়েিছল এবং ৬৯:৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে দুর্যোগ শুরু হওয়ার দিন থেকে শুরু করে শেষ হয়েছিল ৭রাত ও ৮দিন পর অথ্যাৎ Then length of time during disaster was seven nights and eight days। সুতরাং এখানে কোন ভাবেই একেক আয়াতে একেক রকম সময় লিখা হয় নাই।
প্রশ্ন : ৪। কোরআনে মাতা মেরিকে প্রফেট মূসার ভাই অ্যারন এর বোন হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে (১৯:২৮)। কিন্তু মাতা মেরি তো অ্যারনের নিজের বোন নয়!
উত্তর : ৪। আমরা জানি যে হযরত মুসা(আঃ), হারুন (আঃ), যাকারিয়া (আঃ) ইহাইয়া(আঃ), হযরত ঈসা(আঃ) ইনারা সবাই ইহুদী বংশের নবী ছিলেন। অথ্যাত এরা সবাই একই বংশের। যেহেতু ইনারা সবাই নবী ছিলেন সুতরাং এই নবীদের মধ্যে ক্লোজড ব্লাড রিলেশান থাকাটাই স্বাভাবিক। আবার মরিয়ম(আঃ)ও ছিলেন হযরত যাকারিয়া (আঃ) এর আত্মীয়। যেহেতু মরিয়ম (আঃ) যখন হযরত ঈসা(আঃ) নিয়ে নিজ জাতির কাছে ফিরে এলেন তখন নিজ জাতির লোকেরা তাকে অ্যারন এর বোন হিসেবে সম্বোধন করলেন। অথ্যাৎ তাঁর জাতির লোকেরা ভাল করেই জানতেন যে মরিয়ম(আঃ) রক্ত এর সম্পর্কে হযরত হারুন (আঃ) কোন বোন হইতেন যেমন ফফাত বা মামাত বা খালাত বা চাচাত বোন। আপনি যদি কোন বড় একটা বংশের লোক হোন যে বংশের ডাল পালার বিস্তার অনেক বেশি হয় তাহলে এর রকম হওয়া অস্বাভাকবক কিছুই নয়।
প্রশ্ন :৫.
কোরআনে যেহেতু বলা হয়েছে যে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া ভ্রুণের সেক্স কেউ জানতে পারবে না সেহেতু আলট্রাসনোগ্রাম এর বদৌলতে কোরআন ভুল প্রমাণিত হয়েছে!
উত্তর ৫। প্রিয় ব্লগার ভাইয়েরা আমি একটা ডা. জাকির নায়েকের লেকচার দেখেছিলাম। সেখানে লেকচারের প্রশ্নোত্তর সেসনে তাকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল তার উত্তরে তিনি বলেছিলেন যে , কুরআনের আয়াতে যে শব্দটির অর্থ ভ্রনের সেক্স ধরা হয়েছে অথ্যাৎ ভ্রন ছেলে হবে না মেয়ে হবে সেটির অনুবাদ করেছেন পাকিস্তানের অনুবাদকরা। আর আমাদের বেশিরভাগ অনুবাদকরা অনুবাদ করেছেন উর্দু অনুবাদ থেকে। সুতরাং কম বেশি অনেক অনুবাদকরা আরবি শব্দটির অর্থ ভ্রণের সেক্স নির্ধারনকেই বুঝায়েছেন। কুরআন অনুবাদ কিন্তু অনেক অমুসলিমরাও করেছেন। সেই অমুসলিমরাও কিন্তু তাদের অনুবাদে তারা কিন্তু আরাবি ঐ শব্দটি অর্থ লিঙ্গ নির্ধারন করা বুঝান নাই।এমন কি আরবে, এ্যরাবিক ভাষাতেও এটি লিঙ্গ অর্থ প্রকাশ করে না। আসলে ঐ শব্দটির অর্থ বুঝায় সন্তানের জন্ম পরবর্তী গুন অথ্যাত সন্তান সৎ স্বভাবের হবে না অসৎ স্বভাবের হবে মানে ভাল বা মন্দ পুন কে বুঝানো হয়েছে। অথ্যাৎ এটি একটি ভুল অনুবাদ।
"আলট্রাসনোগ্রাম এর কথা বলা হয়েছে" কিন্তু এটাতো এখন সেকেলে। বৈজ্ঞানীক ভাবে ডাযোগসোসিস করে আলপ্রাসনোগ্রামের অনেক আগেই বাহির করা সম্ভাব, সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে। যেমন মনোক্লোনাল এন্টিবডি ডায়োগনোসিস, এছাড়া এ্যামনিওটিক মেমব্রেনের মধে্য যে তরল পদার্থ থাকে তা পরীক্ষা করেও সেক্স নির্ধারণ সম্ভাব হয়েছে। এছাড়া মায়ের শরীরের মধ্যে যে হরমন নিঃসারিত হয় তা থেকেও সেক্স নির্ধারণ করা যায়। আর আলপ্রাসানোগ্রাম তো করা হয় সন্তানের জন্মের ১ কিংবা ২ মাস আগে। তারও আগে নির্নয় করা সম্ভাব।
ব্লগার ভাইদের আর একটা কথা আমি বলতে চাই, আপনি যদি কুরআন বুঝতে না পারেন, তার মানে এই না যে, কুরআনে ভুল আছে। এটা আপনার ভুল।
(রাত বেশি হওয়াই আর লিখলাম না ।সাম্যবাদি ভাইয়ের বাকি প্রশ্নের উত্তর ইনশায়াল্লাহ আমি পরে দিব )
(যদি ভাষাগত কোন ত্রুটি হয়ে থাকে সে জন্য ক্ষমা করবেন।)