মানব জীবন এক অচেনা জীবন । এই জীবনে না পারলাম আমরা গৃহী হতে না পারলাম সন্ন্যাসী হতে । গৃহী হতে যতটা ধর্য্য দরকার তা অনুপস্থিত কিন্তু সন্ন্যাসী হতে যতটা দর্শন দরকার সেও তো জাতি হিসেবে আমরা তেমন একটা আগাতেও পারি নি । আমাদের ভ্রমন পিপাসাও তাই নাই বললেও চলে । আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতেও বেশীর ভাগ মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত রা নুন্যতম নিজের দেশটা ঘুরে দেখে । আমরা নিজের প্রানের বাংলাদেশটাই ঘুরে শেষ করতে পারি না , এক জীবনে । আমি আহমদ ছফার “পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ” পড়ে যতটা না পুলকিত হয়েছি তার থেকেও বেশী গৃহী এক মানুষের কল্পনার জগত আবিষ্কার করেছি । একছাদেই তিনি ক্ষুদ্র তৃণাঙ্কুর থেকে স্পন্দিত নক্ষত্র পর্যন্ত যে চরাচরপ্লাবিত জীবন প্রবাহ তা বিজ্ঞানের ছাত্রকে পুলকিত করলেও শিহরিত করে কিনা আমি বলতে পারবো না ।
পথের পাঁচালী এর অপু আমাকে বেশী টানে । রেললাইনের পাটিতে কান লাগিয়ে নতুন কিছু পাওয়া ছিলো এই আধুনিক যুগে এসেও ।
আহমদ ছফা বলেছেন,
“বৃক্ষের ভেতরে যে সরল জীবনপ্রবাহ স্পন্দিত হয় , তার সঙ্গে মানুষের হৃদস্পন্দনে অবশ্যই একটা মিল আছে । প্রকৃতিগত ভাবে উভয়ে একই বস্তু । কিন্তু তারতম্য হচ্ছে শক্তি এবং গতিশীলতার । গ্রিক আরিস্ততল তো মানুষকে চলমান উদ্ভিদ বলে অভিহিত করেছিলেন।“
অর্ধেক গৃহী এক মানুষের উপলব্ধি হিসেবে বলতে পারি ঢাকার জানালা ছোট তাই পূর্ণিমা চলে যায় না দোল দিয়েই । বৃষ্টি হয় না মনে , বৃষ্টি হয় ঢাকার ডুবে এই রাস্তায় । নদীতে নৌকা নেই । আছে তলানীতে প্লাস্টিক ব্যাগের আস্তরন আর কিশ কালো পানি নামের বিষ ।
উপলব্ধি ভোঁতা থেকে ভোঁতা হচ্ছে তাই বইয়ের পাতায় মন বসে না । তাই ভাবলাম বইস্যা বইস্যা ।