খাটি ঘিঁ পাওয়া দুস্কর এই যুগে । সে দিকে কারও নজর নেই । ঘিঁ হলেই চলে আমাদের । আচ্ছা ঘিঁ ভাজা গোস্ত যদি পাতে দেওয়া যায় তাহলে মনে হয় আহলাদে আটখানা হবে আমাদের গোস্ত খাওয়া (উঁচ্চ বিত্ত মানুষ গুলো ) । আচ্ছা শুকরের গোস্ত ঘিঁ দিয়ে ভেঁজে দিলেই কি তা খেতে পারব আমি , আপনি , আমরা ?? যা বৈধ , যা আমার দেশের জন্য গ্রহনযোগ্য , যা আমার কালচারের সাথে যায় তা ব্যতিত আপনি শুকুরের গোস্ত (অবৈধ সম্পদ) কে যতই ঘিঁ (চাকচিক্য) দিয়ে ভাজুন না কেন দাদা , কথা থেকে যায় । আজও যারা ভাবেন যা ইচ্ছা তাই করা যায় আমার হবুচন্দ্রের দেশে তাদের বলে রাখা প্রয়োজন দেখেছেন সেদিন মাথানুয়ানো হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর মাহমুদের স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামকে । ঘিঁ ভাঁজা গোস্ত দু চার দিন ভাল লাগলেও ডাইরিয়া হওয়ার সম্ভাবনা আছে জনাব । বড় বড় কুতুবরাও আজ আমাদের মিডিয়া শক্তির কাছে হেরে গেছে । আজও যারা ক্ষমতার দম্ভে বিভোর , যারা নিজেদের পাঁপ ঢাকার জন্য মিডিয়ার স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেন , যারা আজও মিথ্যার বেসাতি করেন তাদের জানা উচিত আজও দেশে গনতন্ত্র আছে । আজও আসমান থেকে ন্যায় আর সততার পুরস্কার দেওয়া হয় । আজও অনেকেই ঘিঁ না খেয়েও মরিচ পিয়াজ দিয়ে খাবার খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেন । সর্টকার্ট কোন রাস্তাই ভাল হয় না । খুব দ্রুত যারা ধনী হতে চান কিংবা ভাবেন পাঁচশ টাকার বান্ডিল দিয়ে বান্ডিল-বান্ডিল ভোট কিনবেন তাদের গুড়ে বালি । আগে হিসাব বাদ দিন জনাব । জোর গলায় বলতে পারি এই বাংলায় এখন না খেয়ে আর কেও মরে না । দেশের মানুষ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে নিজের রুজি যোগার করে । অভাবে স্বভাব নষ্টের দিন মনে হয় ফুরালো । শুনে রাখ দেশপ্রেমের ভন্ড লেবাসধারীর দল, আজও এই বাংলায় জনগন জেগে আছে । আগের হিসাব বাদ । আর মার্কা দেইখা মন্দের ভাল পছন্দ করার দিন শেষ হলো বুঝি । যারা ৫বছরের পালা করে আমাদের মাছের মত পাল্টা পাল্টি করে ভাঁজেন তাদেরও জানা প্রয়োজন আদর্শিক অবস্থান এখনও দেশের নতুন শিক্ষিত তরুন প্রজন্মের কাছে স্বচ্ছ নয় । ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যেকোন সময় আমরা তাদের আদর্শিক বিচ্যুতি লক্ষ্য করেছি । রাষ্ট্রযন্ত্র যখন একটি রাজনৈতিক দলের হাতে জনগন দেয় তখন জনগনের জানার অধিকার আছে তাদের রাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, পরয়াষ্ট্রনীতি, স্বাস্থ্যনীতি, শিক্ষা –বিজ্ঞান- গবেষনা নীতি সহ গুরত্বপুর্ন নীতিতে সেই দলের অবস্থান কি । কিন্তু দুঃখের বিষয় আজও আমাদের দেশে তা অনুপস্থিত । যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শ সম্পর্কে আমাদের দেশের তরুনরা যত টা জানার সুযোগ পেয়েছে ততটা হয়তো দেশের রাজনৈতিক দলগুলো সম্পর্কে জানার সুযোগ দেশে নেই । ব্যক্তি পুজা এমন যায়গায় পৌছে গেছে যে সেই নেতাদের মানুষ থেকে ভগবানে পরিনত করা হয়েছে ধামাধরার কথায় কিন্তু তাদের মানবীয় দোষগুলো শুনতে নারাজ । অনন্ত সময়ের গহবরে প্রবেশ করবেন যখন এই সব ধামাধরা তখন একমাত্র আদর্শই নতুন প্রান দিতে পারবে রাজনৈতিক দল গুলোকে । নাহলে সেনাবাহিনী আর অন্য শক্তির ভয়ে আমৃত্য তটস্ত থাকতে হবে । রাজার ছেলে রাজা হবে এই ধারনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে । আজ মনে পরছে হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী কে যিনি প্রথম এই বাংলায় রাজনীতিকে আহসান মঞ্জিলের বদ্ধ দুয়ার থেকে জনগনের জন্য উম্মুক্ত করেছিলেন । তারই রাজনৈতিক ভাবশিষ্য মহান নেতা আমাদের জাতির জনক । ভয় হয় আবার আহসান মঞ্জিলের মত নতুন কোন মঞ্জিল আসবে নাতো । আর ঘিঁ-এ ভাঁজা শুকুরের মাংশ খাওয়া আবাল রাজকন্যা- রাজপুত্ররা কেন জানি মেধার চর্চাও করেন না এবং আদর্শিক কোন দৃড় অবস্থান গড়ে তুলতে পারে না । চরম ডান কিংবা বাম কোন টাই আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য নয় । আমাদের দেশের সভ্যতা , সংস্কৃতি , হাজার বছরের ইতিহাস আমাদের আদর্শ নির্ধারন করবে । যারা ভাবেন আমাদের গার্মেটস সেক্টরে ভাল করা টা স্বাভাবিক তাদের বলে রাখি , মসলিন কারিগরের হাত কেঁটে দিলেই কি সেই ঐতিহ্য হারিয়ে যায় । আমাদের ইতিহাস হলো সূচিশিল্পের গর্বিত ইতিহাস , এটা আমার উপলব্ধি ।
কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো এই দেশে শুধু ঘিঁ –এ ভাঁজা গোস্ত খাওয়া মানুষগুলো সুখে থাকে আর এই পোষাক শ্রমিকদের বারবার আগুনে পূড়ে মরতে হয় । আর টাকার পাহাড় গড়ে এক শ্রেনীর মানুষ । আজও শ্রমের মুল্য এই দেশে উপেক্ষিত । এত দিনেও আমরা বাড়ি গাড়িহীন , আভিজাত্যের আতিসজ্য বিহীন নেতা দেখে না তরুন রা । কাকে অনুস্বরন করা যায় বলুন তো ??
ঘিঁ ভাঁজা শুকুরের গোস্ত যদি হয় বেশির ভাগ নীতি নির্ধারকের প্রিয় হয় তবে দুঃখের শেষ নেই । এই অসৎ মানুষগুলোকে একমাত্র নির্বাচন থেকে দূরে রাখার উপায় হলো নির্বাচন খরচ করার দায়িত্ব শুধু মাত্র নির্বাচন কমিশনের উপর দেওয়া গেলে । নির্বাচনের খরচ রাষ্ট্র নিজেই করবে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে । কালোটাকার ব্যবহার কম নয় বন্ধ করতে হবে । আর কালোটাকা , পেশীশক্তি কুড়েঁ কুড়েঁ খাবে না সৎ - যোগ্যদের ।
স্বপ্ন দেখি একদিন এই বাংলায় যোগ্যনেতা বাছাই হবে তবেই দেশ শীর্ষে পৌছাবে কারন সৎ-নেতা দুর্ভিক্ষ ছাড়া বাকি সব দুর্ভিক্ষ তো আমরা দূর করেছি আগেই ।
একটা গল্প বলে শেষ করি । বারাক ওবামা দ্বিতীয় বার নির্বাচিত হওয়ার পর তার দুই কন্যার কাল্পনিক একটা কথোপকথন
ছোট কন্যাঃ বুবু তোর মন খারাপ কেন ? বাবাতো জিতেছে ।
বড় কন্যাঃ বাবা জিতেলেও মন খারাপ অন্য কারনে । ভাবছি ঈশ !! যদি বাবা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারতো !!!
ছোট কন্যাঃ এটা কি বলিস বুবু তুই । কোথায় বাংলাদেশ আর কোথায় যুক্তরাষ্ট্র ।
বড় কন্যাঃ নারে বোকা , বাংলাদেশের হলে পরে ফ্রি ফ্রি আমিও রাষ্ট্র প্রধান হতে পারতাম ...।
তারা দুজনে জানে না অনেক বারাক ওবামা এই দেশে ৪৭ বছরে নয় ৯৪ বছরেও তার যোগ্যতার, মেধার আর সততার মুল্যায়ন পায় নি ।