এ বছর অর্থাৎ ডিভি- ২০১১ এর আবেদন করে যারা ফার্স্ট লেটার পাননি বা পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলছি- যারা পেয়েছেন তো পেয়েছেন আর যারা পাননি ইনশাআল্লাহ্ আগামী আগস্ট-২০১১ এর মধ্যে পেয়ে যাবেন আশা করছি।
যারা ফার্স্ট লেটার পেয়েছেন বা পাবেন, তাদেরকে ফার্স্ট লেটার পাওয়ার পর অতি দ্রুত কিছু কার্য সমাধান করতে হবে। আমার নিজের এবং আমার সাথে পাওয়া কিছু ঘনিষ্ট ব্যক্তির কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে তা ধারাবাহিকভাবে বিস্তারিত বলার চেষ্টা করবো।
যারা সিঙ্গেল পারসন হিসেবে আবেদন করেছেন প্রথমে তাদের উদ্দেশে বলছি-
ফার্স্ট লেটার হাতে পাওয়ার ২/১ দিন পূর্বেই কিংবা পাওয়ার পর পরই আপনার ফার্স্ট লেটার পৌঁছার ঠিকানায় কিছু লোক এসে ভীড় করবে, যারা এই সমস্ত ফরম পূরণের অফিস খুলে বসেছে কিংবা ঐ শ্রেণীর লোকদের দালাল। এরা আপনাকে নানা প্রলোভন ও বিষয়টা খুবই কঠিন বুঝিয়ে আপনাকে প্রতারণার ফাঁদে আটকানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু সাবধান ! আপনি কোন প্রকারেই এদের কোন কথায় কান দিবেন না- প্রভাবিত হবেন না। ওরা আপনাকে বিনে পয়সায় সকল কাজ করে দেওয়ারও প্রতিশ্র“তি দিবে। পরে এমন একটা সময় আসবে যখন আপনি স্বপ্নের আমেরিকা যাওয়ার জন্যই হোক আর যেকোন কারনেই হোক মোটা অংকের একটা টাকা তাদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য থাকবেন। (ব্যপারটা কীভাবে, কতপ্রকারে ঘটতে পারে তা পরে বলছি)
যা-ই হোক আপনি আপনার সিদ্ধানে অটল যে, আপনি নিজে নিজেই (যদিও তাদের মাধ্যমে করালেও সমস্ত কাজগুলোই আপনাকেই করতে হবে, তারা শুধু আপনাকে বলে দেবে কোথায় যেতে হবে, আর এখানে আমি সেটিই বলে দিচ্ছি) আপনার সমস্ত কাজগুলো সারবেন এবং প্রায় এক থেকে দেড়লক্ষ টাকা প্রাথমিক অবস্থাতেই সেভ করতে পারবেন কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই।
ফার্স্ট লেটারের মোট চারটি ফরম থাকে। যেগুলো আপনাকে পূরণ করে কিংবা না করেই আমেরিকান এ্যাম্বাসী কর্তৃক প্রদত্ত নির্দিষ্ট ঠিকানায় অবশ্যই পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে আপনাকে।
পেইজ গুলো হচ্ছে-
১. কেস নাম্বার এর শীট
যেটার মধ্যে শুধুমাত্র আপনার ডাক ঠিকানা ও একটি বারকোড সহ একটি নাম্বার লেখা থাকবে। যে নাম্বার ও বারকোডের ভিত্তিতে তারা নিশ্চিত হতে পারবে যে, আপনিই এই চিঠির মালিক এবং এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আপনিই ডিভি-২০১১ বিজয়ীদের একজন।
২. সাপ্লিমেন্টাল রেজিস্ট্রেশন ফরম
যে ফরমটাতে আপনার শুধুমাত্র কয়েকটি তথ্য সন্নিবেশ করতে হবে। যেমন-
ক) আপনার নাম
খ) কেস নাম্বার
গ) স্থানীয় আমেরিকান এ্যাম্বাসীর ঠিকানা ঘ) আপনার দেশ (যেখান থেকে আপনি আমেরিকা যেতে চান)
ঙ) শিক্ষাগত যোগ্যতা (এখানে শুধূ নির্দিষ্ট যোগ্যতার ঘরে টিক চিহ্ন দিতে হবে)
চ) স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, শিক্ষা গ্রহণের সময় এবং যে সার্টিফিকেটগুলো আপনি অর্জন করেছেন সেগুলোর নাম।
ছ) এখানে কাজের যোগ্যতা/অভিজ্ঞতার জন্য হ্যাঁ/না ঘরে টিক চিহ্ন দিতে হবে।
জ) চ-নং -এ হ্যাঁ ঘরে টিক চিহ্ন দিলে এই ঘরে কাজের যোগ্যতা/অভিজ্ঞতার বর্ণনা লিখতে হবে। চ-নং -এ না ঘরে টিক চিহ্ন দিলে এই ঘরে শুধুমাত্র প্রযোয্য নহে লিখতে হবে।
ঝ) চ-নং -এ হ্যাঁ ঘরে টিক চিহ্ন দিলে এই ঘরে কাজ/চাকুরী দাতার নাম, ঠিকানা ও কাজ/চাকুরী করার সময় উল্লেখ করতে হবে। চ-নং -এ না ঘরে টিক চিহ্ন দিলে এই ঘরে শুধুমাত্র প্রযোয্য নহে লিখতে হবে।
ঞ) এখানে আপনার স্বাক্ষর ও তারিখ দিতে হবে, যা পরবর্তীর (সর্বশেষ সাক্ষাতকার) জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৩. পার্ট-১। এখানে আপনাকে প্রায় ২৬টি ঘর নির্ভুলভাবে পূরণ করতে হবে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪. পার্ট-২। এই ফরমটিতে প্রায় ২২টি ঘর পূরণ করতে হবে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এবার যারা পরিবার কিংবা ছেলে-মেয়ে সহ আবেদন করেছেন তাদের উদ্দেশে বলছি-
পরিবার কিংবা ছেলে-মেয়ে সহ আবেদন করেছেন তাদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র পার্ট-১ ও পার্ট-২ ফরম দুইটাতে আবেদনকারী যাদেরকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চান বলে আবেদন করেছেন তাদের তথ্যগুলো লিখবেন। আবেদনকারী ঠিক যেমন ভাবে লিখেছেন তার নিজের ফরমে।
পরবর্তীতে আমি চেষ্টা করবো সমস্ত পূরণকৃত আবেদন ফরমের একটা করে প্রতিলিপি উপস্থাপন করতে।
এবার কী কালী বা কলম/পেন্সিলে ফরমগুলো পূরণ করবেন ?
অবশ্যই বলপয়েন্ট কলমের কালো কালীতে সুন্দর হস্তাক্ষরে কোন প্রকার কাটা-ছেঁড়া না করে আমেরিকান ইংরেজিতে, বড় হাতের অক্ষরে লিখতে হবে।
তবে সবচেয়ে ভালো হবে, যদি আপনি টাইপ করে লিখেন। এক্ষেত্রে ইলেক্ট্রিক টাইপ মেশিন ব্যবহার করাটাই শ্রেয়। আপনার কাছে ফরমের মূল কপি একটা করেই। তাই এক্ষেত্রে প্রথমেই ফরম গুলো কয়েক কপি করে ফটোকপি করে নিয়ে প্রতিলিপি করে নেওয়া ভালো।
ইলেক্ট্রিক টাইপ মেশিনে টাইপ করতে হলে আপনি যেতে পারেন বায়তুল মোকাররমের পূর্ব গেইটে ছাউনির নিচে বসা টাইপ রাইটারদের কাছে। ওদের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে। এদের মধ্যে দু/এক জন বেশ অভিজ্ঞ। সিঙ্গেল-১৫০/২০০/=, পরিবার সহ-২০০/২৫০/=।
এবার ফরম পূরণ হলো। এখন আপনার ফটোগ্রাফ।
আপনার ফার্স্ট লেটারে প্রদত্ত ঠিকানার যে কোন একটা স্টুডিও থেকে (পরিবার সহ হলে প্রত্যেকের) ডিভি সাইজ- ৪ কপি, পাসপোর্ট সাইজ- ৪ কপি, স্ট্যাম্প সাইজ- ২ কপি করে ছবি নিয়ে রাখুন। এর মধ্য থেকে সিঙ্গেল আবেদনকারীগন তাদের নিজের একটি করে দুইটি ছবি পার্ট-১ ও পার্ট-২ এর ডান পার্শ্বে উপরের কোনায় ছবির দুই পার্শ্বে স্কচ্ টেপ দিয়ে লাগিয়ে দিন। ছবির পেছনে হালকা করে আপনার নাম, জন্ম তাং ও কেস নাম্বার লিখে দিন যেন অপর পাশে ছবির কোন প্রকার ক্ষতি না হয়।
আর ডাবল আবেদনকারীগন স্বামী-স্ত্রী দুইজনের ছবি পাশাপাশি বসিয়ে লাগিয়ে দিন। বাকী ছবিগুলো সযত্নে রেখে দিন যা শীঘ্রই পরবর্তীতে কাজে লাগবে। (চলমান
আমার আঁকা ছবিগুলো.. .. ..(১)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৪:২৪