'' প্রথম ঘটনা ''
মেসটা দক্ষিণ যাত্রাবাড়ি। চারটা রুম, সেখানে আট জন থাকে। প্রতি রুমে চারজন। এখানে একজন অগ্রণী ব্যাংকের অফিসার থাকেন । ভদ্রলোক অবিবাহিত। মাঝে মাঝেই তার কাছে একজন মেয়ে আসে। এবং বলা বাহুল্য তারা নির্জনবাস করে। একদিন তাদের অন্তরঙ্গতা দেখে মেসের বাকি সাতজন তাকে ডেকে মেসের পরিবেশ নষ্টের জন্য জবাবদিহিতা করল। তিনি খুব স্পষ্ট করে বললেন '' সে আমার বিবাহিত বউ এবং আমরা কোর্ট ম্যারেজ করেছি। সুতরাং আমার স্ত্রী আমার মেসে আসতে পারে।'' তখন তো বাকি দের কোন কথা থাকার কথা না। সে মোতাবেক সবাই চুপ হয়ে গেল। এবং সবার সাথে তার স্ত্রীর ভালো সম্পর্ক হয়ে গেল।
ভদ্র লোক সম্প্রতি মেস পাল্টেছেন। মেস পাল্টানোর প্রায় একমাস পরে হঠাৎ তার স্ত্রী পুলিশ নিয়ে আগের মেসে হাজির। ঘটনা জানা গেল --তাদের নাকি বিয়ে হয়েছিল না। এবং সে এখন বিয়ে করবেনা বলে দিয়েছে। সেই মেয়েটিও হালছাড়ার পাত্রী নয়। সে তাদের একসাথে হোটেলে থাকার প্রমাণাদি নিয়ে পুলিশের সাহায্যে বিয়ের জন্য ভদ্র লোককে চাপ দিচ্ছেন। এখন এ মেসে এসেছেন যাতে সবাই ঘটনার সত্যতা সাক্ষি দেয়। মেয়েটাকে দেখে এখন আর চেনা যায়না। সহজ কথায় মানসিক এবং শারিরিক ভাবে একেবারেই ভেঙে পড়েছে।
'' দ্বিতীয় ঘটনা ''
এটিও একই মেসের ঘটনা। সেখানে একটা ছেলে ঢাবিতে পড়ে। সে তার এক ক্লাসমেটকে ভালোবাসে। সবাই জানে তারা বিয়ে করেছে। অন্তত তাদের দুজনের চলাফেরায় পরিচিত সবার সে ধারণা।দুজনের পরিবারও বিষয়টি জানে। মেয়েটি মেসে আসলে সবাই একবারে ভাবির মত ব্যবহার করে।
মাস চারেক আগে তাদের মাঝে সম্পর্কটা ভেঙে গেছে। এটা একতরফা ভাবেই মেয়েটার পক্ষ থেকে। তিন বছর পর তার মনে হয়েছে ছেলেটা তাকে যে পরিমাণ ভালবাসে তা তার জন্য যথেষ্ট নয়। তাছাড়া তার পরিবারের সাথে ছেলেটার পরিবারের যায় না, ছেলেটা কবে একটা চাকুরি পাবে? সম্প্রতি সে আর একজনের বাগদত্তা হয়েছে।
এদিকে ছেলেটার অবস্থা মারাত্মক। সবকিছু শোনার পর সে একেবারেই ভেঙে পড়েছে। মাত্র একমাসের মধ্যে প্রায় দশ কেজি ওজন হারিয়েছে সে। পড়াশুনা বন্ধুবান্ধব সব কিছু থেকে সে এখন আলাদা। মেয়েটা কিন্তু একেবারেই স্বাভাবিক আছে। এমনকি সে গত তিন বছরের ঘটনাগুলোকে তার ''সাময়িক মতিভ্রম'' বলছে।
প্রথম জন একসময়ে আমার পাশের রুমমেট। দুঃখিত - দ্বিতীয় জন আমি।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৩৭