#
- খুব মেজাজ খারাপ?
- হুমম!
- বেশী রাগ লাগছে?
- হুমম!
- আমার উপর রাগ লাগছে?
- হুমম!
- গালি দিলে মাথা ঠান্ডা হবে?
- জানি না! হতে পারে!!
- ওক্কে, তাইলে প্রাণ ভরে গালি দে আমাকে।
- কুকুর!
- গুড, প্রসীড অন।
- বিড়াল!
শিম্পাঞ্জি!
-হুমম, নেক্সট......
- হনুমান!
- নেক্সট...
- বেবুন!
- ...............
- কি রে! নেক্সট গালিটা দে।
- ব্যাং
- নেক্সট...
- শা.........
- তারপর.........
- আর পারি না!
- ধ্যাত, গালিও তো জানিস না! এগুলোকে গালি বলে! খামাখা কিছু নিরীহ জীব-জন্তুর নামকে গালি বলে তাদের অপমান করলি!
যাই হোক, মাথা ঠান্ডা হয়েছে?
- বুঝতে পারছি না!
#ছোটবেলায় বাবা বলতেন, আমি না কি হাওয়ার সাথে ঝগড়া করি। পান থেকে চুন খসলেই আমার রাগ রাগ ভাব আর মুখ ভার। চোখের পানিটা খুব অপ্রতুল না থাকায়, তার ব্যবহার ছিল অপরিমিত। রেগে গেলে মানুষ দেখি চিৎকার-চ্যাঁচামেচি করে, কেউ কেউ গালাগালও; আমার হতো উল্টোটা; কথা বেরুতে চাইত না মুখ দিয়ে। অন্য সবার সাথে নরম্যালী কথা বলছি, কেবল বাবার প্রশ্নেরই দায়সারা উত্তর- বাবা বুঝতেন, কাম সেরেছে! নিশ্চয়ই কিছু উলটা-পাল্টা করে ফেলেছেন!
# খুব মেজাজ খারাপ, রাগে গা চিড়বিড় করছে! শা... অনলাইনেও নাই, তো কী হয়েছে- অফলাইনে গালি দিব......
কুকুর! বিড়াল! শিম্পাঞ্জি! হনুমান! বেবুন! ব্যাং! শা.......
ওক্কে, সেন্ট!
# স্কুল-কলেজে পড়ার সময় 'প্রেম' বা 'বিবাহ' নামক শব্দগুলো কেন যেন আমি একদমই শুনি নি, আমার কোন বন্ধুই আমার সাথে এ বিষয়ক আলোচনায় আসত না; এডাল্ট জোক- সে তো ভার্সিটি লাইফেও শুনি নি! তবে সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্যজনকভাবে হোক হলি ক্রস কলেজে পড়ার সময় থাকতাম এক প্রাইভেট হোস্টেলে- যেখানে আমার দুই রুমমেট তাদের কোন এক বন্ধুর আগমন সেলেব্রেট করত সারারাত নানান গল্পে, তার সাথে ১৮+ ফ্রীতে! কিন্তু আমার কানে ওসব কিছুই আসত না, ঠিক কীভাবে অটোমেটিক্যালি একটা ডিফেন্স মেকানিজম তৈরী হয়েছিল জানি না- যেখানেই এ জাতীয় কিছুর আভাস পেতাম, কানের সুইচটা বন্ধ হয়ে যেত তৎক্ষনাৎ! আমি পড়ায় মন দিতে পারতাম না কিন্তু আমি তাদের উপর রাগ করতাম না, কিছু বলতামও না!
#
- ইশশশ! তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না!
-
- ঠিকমতো গালিও দিতে পারিস না!
-
- আমার কাছ থেকে শিখবি কিছু গালি?
- কক্ষনো না!
# বন্ধুদের খুব অভিযোগ, আমি না কি শুধু রাগ করি; ছোট ভাই-বোন আর ভাগ্নে-ভাগ্নীগুলোরও তাই। কিন্তু বাসের কন্ডাক্টর আর তার সাথে গলা মেলানো সমবেদনাপ্রকাশকারী পুরুষ দল যারা আমাকে দুগাল ভরে শোনায়- মহিলা সীট না থাকার কারণেও আমি কেন বাসে উঠেছি (যদিও আমি দাঁড়িয়ে এবং মহিলা সীট থেকে কোন পুরুষকেই উঠে যেতে বলি নি!); আমি তাদের উপর রাগ করি না। রাগ করি না রাস্তার মোড়ে মোটর বাইকে হেলান দিয়ে থাকা ওই সার্জেন্টের উপর, ওৎ পেতে থাকে যে শিকার ধরার জন্যে আর বাম হস্তের ব্যবহারে যে সিদ্ধহস্ত। আমার বন্ধু বাদামের প্যাকেটটা রাস্তায় ফেললে আমি খুব রাগ করি কিন্তু নোংরা খিস্তি-খেউর করে যে ছেলেগুলো পাড়ার মোড়টাকে নোংরা করে চলেছে, তাদের উপর রাগ করি না তাই গালাগালের প্রশ্নই আসে না!
#
- আমি তোর সাথে আর কথা বলব না!
- কেন?
- তুই শুধু রাগ করিস আমার উপর!
-
# 'রাগ' একটা প্রচ্চন্ডভাবে অনুভব করার অনুভূতি, যার তার উপর আমি সেটার বাজে খরচ করতে চাই না! যাদের কথা আমি ভাবি, যাদের ভালো লাগায় আমার ভালো লাগা আর মন্দ লাগায় মন্দ- আমার অনুভূতিগুলো শুধু তাদের জন্যে! তাদের অন্যায় কাজে বা ছোট-খাট ভুলে রাগ করতেই পারি আমি! কিন্তু যাদের কোন গুরুত্ব নেই আমার কাছে, তাদের উপর রাগ হবে কেন? যাদের পাত্তা দেই না, গুরুত্ব দিয়ে যেখানে কিছু হবে না তাদের উপর রাগ হবে কেন, গালাগালি করার ইচ্ছে হওয়া তো দূরের কথা! বরং তা করলেই যে তাদের পাত্তা দেওয়া হবে, উস্কে দেওয়া হবে তাকে আর প্রলুব্ধ করা হবে তার কাজের সমর্থনে যুক্তি দাঁড় করানোর জন্যে! আমি তাদেরকে 'ইগনোর' করি আর তাই গালাগালও করি না। আর যেখানে 'ইগনোর' করাটা অন্যায় সেখানে 'একশন', কিন্তু রাগ নয়, গালাগালিও নয়!!
#
- ছোটবেলায় আমার একটা স্বপ্ন ছিল,জানিস?
- কী স্বপ্ন?
- আর কিছু করে বিখ্যাত হতে না পারি মরার আগে কিছু মানুষ নামক ভয়ংকর জানোয়ারকে মেরে পত্রিকায় নিজের ছবি ছাপিয়ে মরব!
- কী যা তা বকিস!
- হুমম! যাদের চোখ থাকার পরেও তাতে ঠুলি এঁটে বসে থাকে, শিক্ষিত বলে দাবী করলেও যাদের ন্যূনতম শিক্ষাটা হয় নি, সকলের দন্ড-মুন্ডের ভার নিয়ে যারা নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত, যারা কখনোই নিজেদের ভুল থেকে শিক্ষা লাভ করে না- তাদের জন্যে দরকার এক্কেবারে ডাইরেক্ট একশন! নো কম্প্রোমাইজ!
# ব্লগের দুনিয়াটা আমার জন্যে নতুন হলেও দেখতে দেখতে বেশ অনেক দিনই তো পার করে ফেললাম! সুন্দর পড়ব আর লিখব এই মানসে ঢুকেও প্রথম পাতার অনেক পোস্টের শিরোনামগুলোই (আস্তিক-নাস্তিক, আওয়ামী-বি এন পি...... যে সব বিষয়ে ক্যাঁচাল হয় আর কি!) বলে দিত ওখানে আমার প্রবেশ নিষেধ, তবে খুব কম সময়েই খুঁজে বের করে ফেলতে পেরেছি অনেক ভালো লিখিয়ে দের। সাম্প্রতিক মন্তব্যে এমনই একজনের মন্তব্য দেখলাম যে পোস্টে তার শিরোনাম দেখলেই গা গুলোয়, কখনোই এমন পোস্টে না ঢুকলেও ওই মন্তব্য টেনে নিয়ে গেল সেই পোস্টে- আমি শক্ড হলাম, মানুষের গোপন জানালাগুলো বোধ হয় এভাবেই হুট করে খুলে যায় অন্যদের কাছে। স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ দেখি হাসান মাহবুবের মন্তব্য, নাহ গালি ছিল না- হতবাক হলেও তার ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য পড়ে মনে হল যদি কিছু বলতে হয় তবে এমনটাই হওয়া উচিত ছিল তার ভাষা! কিন্তু কিছুতেই স্বস্তি বোধ করছিলাম না, অসহ্য লাগছিল! কি জঘন্য! কি জঘন্য! গা ঘিন ঘিন করছিল আর নিজের উপর মেজাজ খারাপ হচ্ছিল কেন ওই পোস্টে ঢুকলাম! তবে এর পর একটু শান্তি পেলাম যীশূ এর একটা পোস্ট দেখে যা লেখা হয়েছিল ওই পোস্টের প্রতিবাদেই!
মনে হচ্ছিল, এখানে প্রতিবাদের ওয়েটা হওয়া উচিত এমনই, সরাসরি রিপোর্ট! ভুলেও কোন মন্তব্য নয়- ওই পোস্টে যদি কোন মন্তব্য না পড়ত তাহলে তো তার লেখক একদম পাত্তাই পেত না! অবশ্য ওই লেখকের সমমনা মানুষও ব্লগে কম না যারা নিজেরাই অনেক ক্যাঁচাল তৈরী করে! আর তাই, ডাইরেক্ট একশন! নো কম্প্রোমাইজ!
---------
কিছু দিন থেকেই ভাবছিলাম আমার চোখে ক্রমশ সুন্দর হয়ে ওঠা কিছু মানুষ নিয়ে লিখব! আর লিখতে বসে কী লিখলাম! সুদীর্ঘ বাইক্কা প্যাঁচাল!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ২:৩৩