মেজর জেনারেল (অব.) আমজাদ খান চৌধুরী। প্রাণ, আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেই আমরা তাকে চিনি। কিন্তু অগোচরে থেকে যায় তার এক অন্য পরিচয়।
একাত্তরে আমাদের দেশের কিছু বাঙালী সেনা অফিসার সরাসরি পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ করেন। উনি তার মধ্যে অন্যতম।
কর্ণেল শাফায়েত জামিল (অব.) এর লেখা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, রক্তাক্ত মধ্য আগষ্ট এবং ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর বইয়ের পঞ্চাশ নম্বর পৃষ্ঠায় তার সম্পর্কে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুর সেনানিবাসের বিএম-২৩ ব্রিগেডে পাকবাহিনীর হয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন তৎকালীন মেজর আমজাদ খান চৌধুরী। সেখানে এবং দিনাজপুর এলাকায় তাকে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে আবির্ভূত হতে দেখা যায়। রংপুরের হিন্দু বাড়িঘর লুটপাটেও তিনি অংশ নেন বলে জানা যায়।
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার দিন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট আমজাদ খান চৌধুরী কুমিল্লা সেনানিবাসে ব্রিগেড কমান্ডার ছিলেন এবং তার নিয়োজিত দল বঙ্গবন্ধুর বাসভবন প্রতিরক্ষার দায়িত্বে ছিল, যেটা পালন করতে তারা চরমভাবে ব্যর্থ হয়। এসব স্বত্ত্বেও আমজাদ খান চৌধুরী পরবর্তীতে মেজর জেনারেল পদে উন্নিত হন এবং এই পদ নিয়েই অবসর গ্রহণ করেন এবং তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন ১৯৮১ সালে।
আজ প্রধানমন্ত্রী যখন তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অনেক তরুণের মনে ব্যাথা লাগে।
তরুণ প্রজন্মের আইডল আরেক মন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলকও তার জন্য যখন শোক প্রকাশ করে পেইজে পোস্ট দেয় তখন অনেক তরুণ হতাশ হয়ে পড়ে।
যদিও সমালোচনার মুখে তিনি পোস্টগুলো সরিয়ে নেয়।
একজন বাঙালী হত্যার সাথে জড়িত সেনা কর্মকর্তার জন্য যখন শোক প্রকাশ করা হয় তখন সত্যি মনে হয় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি উপহাস করা হচ্ছে। শিল্পপতি বলে খুনী হয়েও একজনকে ক্ষমার চোখে দেখা হবে!
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:০১