বুক রিভিউ: শুদ্র দ্য গংরিড
রাশেদ মাহমুদ
সময়ের গন্ডি আর কল্পনা সীমারেখার বাইরে গিয়ে চিত্রায়িত এক অসাধারণ উপন্যাসের নাম ‘শুদ্র দ্য গংরিড’। এই কাহিনী উপন্যাসের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ লেখক মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী আমাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন হাজার হাজার বছর আগের মানব সভ্যতার গল্পে, যখন মানুষ ও প্রকৃতি একসাথে মিলেমিশে বসবাস করত। সভ্যতা রক্ষার প্রয়োজনে মানুষের সাথে লড়াই-এ অবতীর্ণ হত প্রাণিকুলও। আবার মানুষের সাথে সমঝোতা করতেও সম্মত হয় প্রাণিকূল। সেই প্রাচীন যুগে কিছু মানুষ আত্মস্থ করতে পেরেছিল প্রাণিকূলের ভাষাও, তাদের বলা হত সন্না। শুদ্র তাদেরই একজন যারা প্রাণিদের ভাষা বুঝতে পারত। তবে কিছু বাড়তি অসাধারণত্ব শুদ্রকে সবার থেকে আলাদা করে নিয়ে যায় এক অনন্য উচ্চতায়। শুদ্র অল্প বয়সেই পায় রাজপরিবারের সহচর্য, রাজকন্যার প্রেম এবং সেরা বীরের খেতাব। কিন্তু কৃষকের ছেলের সাথে রাজকুমারীর প্রণয় মেনে নিতে পারে নি স্বয়ং বঙ্গরাজা নিজেও। তাই ফরমান জারি করে শুদ্রকে বনে পাঠান রাজা। বনের পরিবেশে বেড়ে উঠা শুদ্রের জন্য এ আর এমন কি!কিন্তু রাজকুমারি ইলি কে সে কি আর ভুলতে পারে। তাই সারাক্ষণ মন খারাপ করে বসে থাকে। অন্যদিকে বনপুরানের ভবিষ্যৎবাণী মতে রাজ্য এবং বন আক্রান্ত হতে যাচ্ছে ভয়ঙ্কর শয়তান খাবলুশ এর হাতে। যার মূল লক্ষ্য বন ধ্বংস করে তা কালো শক্তিকে আরও সমৃদ্ধ করা। রাজ্যের এই সংকটময় মূহুর্তে রাজ্যের সেরা বীর কি চুপ করে বসে থাকতে পারে? শুদ্র বনের পশু প্রাণীদের নিয়ে গড়ে তোলে তার বাহিনী। খাবলুশ যখন অতর্কিত আক্রমনে দখল করে নিচ্ছিল বঙ্গ রাজ্য। সেসময় শেষ রক্ষা করে শুদ্রের হস্তীবাহিনি। তার পাশে এসে দাড়ায় স্বর্ণদণ্ডের শক্তিতে বলীয়ান শ্বেতরাজা। কালো জাদুকর খাবলুশকে তলোয়ার দিয়ে হত্যা করে শুদ্র। এই যুদ্ধে মারা যায় সন্না সর্দার সোমান্দ্র, যে ছিল শুদ্রের খুব প্রিয় একজন ব্যক্তি। তবে সোমাদ্রের শেষ ভবিষ্যৎবানীতে আভাস পাওয়া যায় খাবলুশের পুনঃআগমনের বার্তা। বঙ্গরাজা আজাকা যুদ্ধে জয়ী হওয়ায় কৃতার্থ হয় শুদ্রের বীরত্বে। আজাকা শুদ্রকে আবার রাজপ্রাসাদে ফিরে আসার আমন্ত্রণ জানায়, তবে শুদ্র প্রাণিকুলের প্রতি তার ভালোবাসা আর বিশ্বাস অটুট রেখে তার বাহিনী নিয়ে বনের দিকে যাত্রা করে। এখন দেখার বিষয় এই সিরিজ উপন্যাসটি কোন দিকে মোড় নেয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৫