আমাদের বাড়ি ওয়ালার পোষা বিড়াল।সারা বিল্ডিংময় তার পদচারণা।প্রতি দিন সকালে অফিসে যাবার সময় তার সাথে আমার দেখা হয় একবারে বাড়ির গেইটের সামনে।হয় সে পথ দখল করে বসে থাকবে নতুবা গায়ের সাথে তার লেজটা লাগাবে।আর একটু প্রশয় দিলেই মিয়াও বলে খাবার দাবি করবে।


তবে এই বিড়ালটা সারা বিল্ডিংয়ের ইদুরের ত্রাস।

ইদুরকে যে কোন ভাবেই সহ্য করতে পারে না।আমার ধারণা ইদুরের গোশত তার খুব বেশী প্রিয় অথবা দূর্বল ইদুরকে সে আক্রমণ করতে পছন্দ করে।



বাসায় ইদুরের উপদ্রব বাড়লেই বিড়ালটার কদর বেড়ে যায়।গেইটের কাছ থেকে তাকে কোনভাবে ধরে এনে ঘরে ঢুকিয়ে দেবেন।ব্যাস সে পুরো ঘরময় র্যা বের মতো টহল দিবে এবং কিভাবে যেনো ইদুরের গন্ধ পেয়ে যায়।ঘরে যদি আসলেই ইদুরের বাসা থাকে এবং ইদূর বাসায় অবস্থান করে তাহলে ঘন্টা খানেকের মধ্য সে ইদুর পাকড়াও করবেই।
যা হোক বাসার সামনে প্রতিদিনই ইদুরের ওষধ বিক্রির হকারদের নানা রকম চটকদার বিজ্ঞাপনের আওয়াজ শোনা যায়।তাদের ঔষধের এমন গুণ যে এই ঔষধ বাড়িতে দিলে সেটার গন্ধ পেয়ে ইদুর মাটির ৭০ হাত নিচের থেকেও নাকি উঠে আসবে আর ঔষধকে মোরগ পোলাও মনে করে খাবে।

তারপর উপুড় হয়ে মরবে চিত হয়ে মরবে,লাফিয়ে মরবে,দাত খিচিয়ে মরবে আরো কত ভাবে যে মরবে তার বর্ণণা।আমাদের বিল্ডিংয়ের বাসিন্দারা এই সব বিজ্ঞাপণে কান দেন না কারণ তাদের রয়েছে ইদুর মারার শক্তিশালী বিড়াল


।কিন্তু অন্য বিল্ডিংয়ে তো এমন বিড়াল নেই তাই তাদের কোন এক বাসিন্দা বিজ্ঞাপণ শুনে ইদুরের মরণ ঔষধ কিনে হয়তো বাড়িতে দিয়েছিলেন।তাদের বাসার মোটাসোটা কিন্তু বোকা ইদুরটা সেটা খেয়ে(অথবা রোগে আক্রান্ত হয়েও এমন হতে পারে)এমনই দিক ভোলা হইছে টাল অবস্থায় আমাদের বাসায় আইসা হাজির।আমরাতো ইদুরের অত্যাচার থেকে অনেক দিন বেচে আছি কিন্তু হঠাত গত সন্ধ্যায় এমন মোটা ইদূর দেখে ভয় পেয়ে গেলাম।ইদুর লড়েও না কিন্তু হাত তালি দিলে মাথা উচু করে কোন ভাবে তাকায়।আবার মরার মতো পড়ে থাকে।ঘুতা দিলে মাথা কোন ভাবে উচু করে দুই তিন কদম টলতে টলতে যায়।আবার মরার মতো পড়ে থাকে।অফিস থেকে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে ইদুর টিকে দেখে মারতেও মন চাইলো না।কোন মতে লেজ ধরে বিল্ডিংয়ের পিছনে একটু ঝোপের মতো আছে সেদিকে ফেলে দিলাম।বাসা ২য় তালায়।দোতালা থেকে পড়ে ইদূর মারা গেলে যাক।বাচলে বাচুক।বাসার ঝামেলা শেষ।
এশার নামাজের সময় হলো।মসজিদে যাবো।দেখি বাড়ি ওয়ালার সেই পোষা বিড়ালটা ইদূরটিকে ধরে নিয়ে এসেছে।তখনো ইদুরটি মরে নাই।কোন ভাবে দুই কদম পা দিলেই বিড়ালটা দেয় এক থাবড়।একটু চুপ হয়ে আবার একটু মাথা উচু করলেই ঘাড়ে দেয় এক কামড়।মসজিদ থেকে এসে দেখি বিড়ালটার ভুরিভোজ প্রায় শেষ।
সকালে অফিসে যাবো।গেইটের সামনে দেখি বিড়ালটাকে সেই ইদুরের ব্যারামে ধরছে।আজকে আর তার লাফালাফি নেই।খলি ঢুলে আর ঝিমাইতাছে।বাড়িওয়ালা কয় গত রাতে নাকি কিছুই খায় নাই। সব পড়ে আছে।খালি ঢুলতাছে।আমি মনে মনে কই ব্যারামে দেখি ভালোই ধরছে।আর বাচন লাগবো না।আমাগো বিল্ডিংয়ের ইদুরের অভিশাপে বিড়ালেই এই অবস্থা।তবে এই রকম ট্রেনিং প্রাপ্ত বিড়াল আমারা আবার কবে পামু জানি না।এতো ট্রেনিং প্রাপ্ত বিড়ালটা এমন ব্যারাইম্মা ইদুরটারে কেন যে খাইতে গেলো!!!




সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:২২